অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস সেই স্মৃতি কখনো ভুলতে পারবেন বলে মনে হয় না।বিশ্বকাপের মঞ্চে সেই ম্যাচ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে জায়গা পেতে যে ম্যাচ জেতার কোনো বিকল্প ছিল না শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ দুই দলেরই, ব্যাটিং করতে নেমে তাঁর দল ছিল বিপদে, এমন সময় কিনা ম্যাথুস হলেন ইতিহাসের প্রথম টাইমড আউট। ২০২৩ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ম্যাথুসের বিপক্ষে সেই টাইমড আউটের আবেদন করার পর তা আর ফিরিয়ে নেননি। কোনো বল না খেলেই তাই ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়েছিল ম্যাথুসকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্ষোভ বা অভিমান যেটাই হোক, এত জলদি সেটা চলে যাওয়ার কথা না ম্যাথুসের মন থেকে।যে দলটার বিপক্ষে তাঁর এমন স্মৃতি, সেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টটা খেলেই অবসরে যাচ্ছেন ম্যাথুস। আজ শুরু হতে যাওয়া গল টেস্টই এই সংস্করণে তাঁর শেষ ম্যাচ। এর আগের দিন গতকাল টেস্ট জার্সি গায়েই সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন ম্যাথুস। প্রশ্নোত্তরের এক ফাঁকে স্বাভাবিকভাবেই এল বাংলাদেশ প্রসঙ্গও। আমার তখন রাগ ও হতাশা ছিল। আমি ভুল কিছু করিনি। ম্যাচের পর যখন ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের ভিডিওটা দেখাই, তখন তাঁরা ভুল বুঝতে পেরে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন।
ম্যাথুস অবশ্য দাবি করলেন, ওই ঘটনা নিয়ে এখন আর কোনো ক্ষোভ নেই তাঁর মনে, ‘ঘটনাটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। তারা আমার বন্ধু, তাদের বিপক্ষে (ব্যক্তিগতভাবে) আমার কিছু নেই। আমাদের সঙ্গে সব সময় ভালো (আচরণ) করেছে ওরা। ওই সময় আমাদের কিছু বাক্যবিনিময় হয়েছিল, কিন্তু আমি ক্ষোভ ধরে রাখি না। ক্ষোভ ক্রিকেটের জন্য খারাপ শব্দ।’ এখন মনে কিছু না থাকলেও ওই ঘটনা যে দীর্ঘদিন ম্যাথুসকে পীড়া দিয়েছে, সেটা বোঝা যাবে সম্প্রতি তাঁর দেওয়া এক সাক্ষাৎকার থেকেই। ক্রিকইনফোর সঙ্গে সেই সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, টাইমড আউটের ওই ঘটনার পর নাকি আম্পায়াররা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তাঁর কাছে দুঃখও প্রকাশ করেছেন।
ম্যাথুস সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমার তখন রাগ ও হতাশা ছিল। আমি ভুল কিছু করিনি। ম্যাচের পর যখন ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের ভিডিওটা দেখাই, তখন তাঁরা ভুল বুঝতে পেরে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। ওই ম্যাচ আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল, আমার মনে হয়, তারা আমাকে লক্ষ্য বানিয়েছিল। আমি জানি না, কী বিষয়টা তাদের তখন আবেদন করতে প্রলুব্ধ করেছিল। আমার মনে হয়, আম্পায়ারদের আরও বেশি জড়ানো উচিত ছিল এই ঘটনায়। আমি যখন ক্রিজে আসি, তখনো দুই মিনিট হয়নি। আমার হেলমেট ভেঙে গিয়েছিল তখন, আমি মাঠে আসার আগে এটা হয়নি। আমার রাগ হওয়াটা তাই ঠিকই ছিল।’ তবে এখন সেসব ভুলে শুধু বাংলাদেশ নিয়ে মধুর স্মৃতিগুলোই মনে রাখতে চান ম্যাথুস।
২০১৪ সালে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার হয়ে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও খেলেছেন নিয়মিত। সেসব স্মৃতি মনে করে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ম্যাথুস বললেন, ‘আমি বাংলাদেশে অনেক খেলেছি। শুধু আন্তর্জাতিক নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলেছি ওখানে। আমি খুব উপভোগও করেছি তখন। তাঁরা সবাই আমার ভালো বন্ধু।’