তাওহীদ হৃদয়ের ইস্যুতে প্রেস কনফারেন্স করবেন ক্রিকেটাররা, সেখানে উপস্থিত থাকবেন অসুস্থতার কারণে মাঠে বাইরে থাকা মোহামেডানের অধিনায়ক তামিম ইকবালও। এমন খবর আগের রাতেই প্রকাশ হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় গতকার মিরপুর শের-ই বাংলায় হাজির হন নুরুল হাসান সোহান, সাব্বির রহমান, শরিফুল ইসলাম, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, ইলিয়াস সানী, নাঈম শেখ ও জিয়াউর রহমানরা। নিজেরা একদফা আলোচনার পর শেষ দিকে যুক্ত হয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও। বিসিবি কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভ ঝারলেন তামিম ইকবাল। প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে নেমে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এদিনই প্রথম গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন টাইগার সাবেক এই অধিনায়ক। ডিপিএলে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে শাস্তি পেয়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়। যদিও তার শাস্তি নিয়ে বিসিবি দু’বার দুইরকম পদক্ষেপ নিয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ ঝারেন তামিম। তার কাছে হৃদয়ের শাস্তির প্রক্রিয়াটিকে হাস্যকর মনে হয়েছে। শুরুতেই তামিম বলছিলেন, ‘আজকে আমরা যে কারণে সবাই এখানে একসাথে হয়েছি। যেটা গত দুই তিন চার মাসের কিছু কিছু ইন্সিডেন্ট ঘটেছে। যেটি নিয়ে প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের মনে একটা প্রশ্ন ছিল তারা হতাশ ছিল। আমি দুইটা তিনটা পয়েন্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারব। প্রথম কথা তাওহীদ হৃদয় ওর সাথে মাঠে একটা ঘটনা হয়। তাকে প্রথমে দুইটা ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয়। যখন নিষেধাজ্ঞা দেয় তখন কোনো প্লেয়ার বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলে নাই। এটা নিয়েও আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তার কিছুদিন পরে দেখলাম যে দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। এটা বিসিবি করেছে, তখন আমরা কোন ধরনের কোনো কথা বলিনি। আবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এটা কোন রুলে কিভাবে করছে আমার কাছে জানা নেই। এটা খুব হাস্যকর এটা কোনভাবেই নিষেধাজ্ঞা হতে পারে না।’ এদিকে প্রিমিয়ার লিগে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠলে অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের দিয়ে সেই ঘটনা অভিনয় করে দেখানো ভালোভাবে নেননি অন্যদের মতো তামিমও। বলেন, 'কিছু দিন আগে গুলশান ও শাইনপুকুরের ম্যাচে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা স্পষ্টভাবে বোর্ডকে বলেছি, ওখানে যদি কোনো ধরনের দুর্নীতি হয়ে থাকে বা কোনো খেলোয়াড় দোষী হয়, সবাই চাই এর শাস্তি হোক। একশ ভাগ একমত। তার মানে এই অধিকার নেই দুটো ছেলেকে নিয়ে মিডিয়ার সামনে অভিনয় করাবেন। বিশ্বের কোনো অ্যান্টি করাপশন বা কোনো জায়গায় এই নিয়ম নেই। সেইম জিনিস অভিনয় করিয়ে ঐ দুই ছেলেকে মিডিয়ার সামনে বেইজ্জত করবেন। ক্রিকেটারদের প্রতি এটা অপমান। এটা নিয়ে আমরা এক ফোঁটাও খুশি ছিলাম না।' এখানেই শেষ নয়। বিপিএলে ফিক্সিং করেছেন- এমন অভিযোগ ওঠা ক্রিকেটারদের নাম প্রকাশ করার কারণেও চটেছেন ক্রিকেটাররা- জানান তামিম।'বিপিএলেও একটা ঘটনা ঘটেছে। বিসিবির ভেতর থেকে ১০ জনের নাম ফাঁস হয়েছে। ১০ জনের ছবি দিয়েছে বিভিন্ন মিডিয়াতে। ওখান থেকে কেউ যদি দোষী হয় আমরা সব ক্রিকেটাররা চাই ওর শাস্তি হোক। কিন্তু এখান থেকে যদি ২ জন বা ৮ জন নির্দোষ হয়? এভাবে নাম প্রকাশ করা ক্রিকেটারদের অসম্মান। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম।' এ সময় বিসিবিকে দ্রুত সমাধান ও সিদ্ধান্ত জানানোর তাগিদ দেন তামিম, 'বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার হলো ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের সাথে এভাবে করলে হয় না। বোর্ড প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করেছিলাম আসার জন্য, উনি এসেছেন। সাথে আরও ২ জন বোর্ড পরিচালক ছিলেন। লম্বা আলোচনা হয়েছে। বলেছি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন, আমাদের জানান। যেহেতু কাল খেলা। আমার মনে হয় খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত দিয়ে দেবেন।' প্রসঙ্গত, গত ১২ এপ্রিল আম্পায়ার সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়। ম্যাচ শেষেও তিনি আম্পায়ারদের নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখান। ওই ঘটনায় তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মোহামেডানের তরফে আপিল করা হয়েছিল। পরে তার শাস্তির মেয়াদ অনেকটা নাটকীয়ভাবে কমানো হয়। দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা এক ম্যাচে নেমে যায়। প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে দেখা গিয়েছিল হৃদয়কে। কিন্তু আম্পায়ার সৈকতের আপত্তিতে আবারও তার এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা বহাল করা হয়।