আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন বাবর আজম। এই রেকর্ড গড়তে ভারতের সাবেক অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে পেছনে ফেলেছেন তিনি। গতকাল ১৮ বল খেলে অপরাজিত ১১ রানে ম্যাচ শেষ করেন বাবর। এই ইনিংসের সুবাদে তার মোট রান দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৩৪। এতেই রোহিতকে পেছনে ফেলেছেন বাবর। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাবরের রান এখন ১২৩ ইনিংসে ৪২৩৪। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়ে ফেলা রোহিতের রান ১৫১ ইনিংসে ৪২৩১। অর্থ্যাৎ, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাবর আজমই এখন সর্বোচ্চ রানের অধিকারী। শেষ পর্যন্ত বাবর আজম অপরাজিত থাকেন ১১ রানে। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই সুযোগ ছিল এই রেকর্ডটা গড়ার? কিন্তু ওই ম্যাচেই শূন্য রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন বাবর আজম। লাহোরে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দর্শকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। তবে বাবর আজমের রেকর্ডটি নিজেদের চোখে দেখার জন্য। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা এত কম রান করেছিলো যে, এই ম্যাচেও রেকর্ডটা বাবর গড়তে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। কারণ, দক্ষিণ আফ্রিকা ১১০ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। পাকিস্তানের দুই ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান এবং সাইম আইয়ুব মিলে জয়ের দিকে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছিল। ৫৪ রানের জুটি গড়ে ফেলেছিলো তারা দু’জন। লাহোরের দর্শকরাও যেন অস্থির হয়ে উঠছিলেন- বাবর আজম কখন মাঠে নামবেন। কখন রেকর্ড গড়বেন সেটাই দেখতে চাচ্ছিলেন। ৫৪ রানের মাথায় সাহিবজাদা ফারহান আউট হওয়ার পরপরই উল্লাসে ফেটে পড়ে লাহোরের দর্শকরা। দেখে যেন মনে হচ্ছিল, প্রতিপক্ষ দলের কোনো ব্যাটার আউট হয়েছেন। কিন্তু না, সাহিবজাদা ফারহান আউট হওয়ার অর্থ, বাবর আজমের মাঠে নামার সুযোগ তৈরি হওয়া। বাবর আজম মাঠে নেমেই বাউন্ডারি মেরে লাহোরের দর্শকদের মাতিয়ে তুললেন। একপ্রান্তে সাইম আইয়ুব ৩৮ বলে ৭১ রানের ঝোড়ো ইনিংস। তবে, ঠিকই প্রয়োজনীয় ৯ রান তুলে ফেললেন বাবর আজম। ১১ বলে ৯ রান করেই রোহিত শর্মাকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। তখনই লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম তাকে শ্রদ্ধা জানালো। বাবর আজমের রেকর্ড গড়ার দিনে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯ উইকেটের দাপুটে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। এই জয়ে সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে পাকিস্তান। এর আগে জয়ের লক্ষ্যে ইনিংসের শুরুতে ঝড় তোলেন ওপেনার সাইম আয়ুব। ৩৮ বলে তার ৭১ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে ভর করে দ্রুতই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় পাকিস্তান। বোলিংয়েও দারুণ সাফল্য আসে। পেসার ফাহিম আশরাফ ২৩ রানে নেন ৪ উইকেট। আর সালমান মির্জা ১৪ রানে নেন ৩ উইকেট। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অল্পতে বেঁধে ফেলে পাকিস্তান। মাত্র ১৯.২ ওভারে ১১০ রানে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। সফরকারীদের মধ্যে কেবল ডেওয়াল্ড ব্রেভিস কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। ১৬ বলে করেন ২৫ রান। পাকিস্তানের ধারালো বোলিংয়ের সামনে ছয় ব্যাটারই বোল্ড হয়েছেন। ১১০ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ৪১ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয়।

শাহেবজাদা ফারহান আউট হওয়ার আগে ৩ ছক্কায় করেন ২৩ বলে ২৮ রান। তাকে এলবিডাব্লিউ করেন করবিন বশ। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন সাইম আইয়ুব। ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। সঙ্গে অপরাজিত থাকেন বাবর আজম।