চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৩৬৩ রানের বিশাল টার্গেট দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। গতকাল দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রাচিন রাভিন্দ্রা ও শেন উইলিয়ামসনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩৬২ রান করে নিউজিল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড। আগের কীর্তিটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার। চলতি আসরেই গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৫৬ রান করেছিল দলটি। ওই ম্যাচেই প্রথমে ব্যাটিং করে ৩৫১ রান তুলেছিল ইংলিশরা। এই টুর্নামেন্টে সাড়ে তিনশ রানের ইনিংস দেখা গেল কেবল এই তিন ম্যাচেই। ফলে জিততে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে করতে হবে ৩৬৩ রান। অবশ্য আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনালে তিনশ’ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই কারো। ২০১৫ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই ২৯৮ রানের লক্ষ্যে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। শুধু তাই নয়, কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডও গড়তে হবে প্রোটিয়াদের। ২০১৫ সালে নটিংহ্যামে ৩৫০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জিতেছিল ইংল্যান্ড। আইসিসির টুর্নামেন্ট মানেই যেন রাচিন রাভিন্দ্রার ব্যাটিং ঝলক। চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা নিউজিল্যান্ড ওপেনার এবার আলো ছড়ালেন ফাইনালে ওঠার মঞ্চে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নান্দনিক ব্যাটিংয়ে উপহার দিলেন আরেকটি শতক। গতকাল ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে ১০৮ রান করেন রাভিন্দ্রা। ১০১ বলের ইনিংসটি সাজান তিনি ১ ছক্কা ও ১৩ চারে। তার পাঁচটি সেঞ্চুরিই এসেছে আইসিসি টুর্নামেন্টে ১৩ ইনিংসে। বৈশ্বিক আসরে যা দ্রুততম পাঁচ সেঞ্চুরির রেকর্ড। তিনি ছাড়িয়ে গেছেন ১৫ ইনিংসে পাঁচ সেঞ্চুরি করা ভারতের শিখর ধাওয়ানকে। উইলিয়ামসনের ব্যাট থেকে আসে ২ ছক্কা ও ১০টি চারে ৯৪ বলে ১০২ রান। ওয়ানডেতে এটি তার পঞ্চদশ শতক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা তিনটি ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করলেন তিনি। রাভিন্দ্রা ও উইলিয়ামসনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ১৬৪ রান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যেকোনো উইকেটে নিউজিল্যান্ডের যা সর্বোচ্চ। ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ন্যাথান অ্যাস্টল ও স্কট স্টাইরিসের ১৬৩ রানের জুটি ছিল আগের রেকর্ড। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি উইল ইয়াং। ৩ চারে ২১ করে বিদায় নেন তিনি লুঙ্গি এনগিডির শর্ট বলে ক্যাচ দিয়ে। এরপর শুরু হয় রাভিন্দ্রা ও উইলিয়ামসনের জুটির পথচলা। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন তারা দুইজন। ৪৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন রাভিন্দ্রা। উইলিয়ামসনের ফিফটি আসে ৬১ বলে। আরেকটু দ্রুত রান বাড়িয়ে কাক্সিক্ষত তিন অঙ্কে ৯৩ বলে পা রাখেন রাভিন্দ্রা। কিন্তু এরপর আর ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনি। কাগিসো রাবাদার বলে কট বিহাইন্ড হয়ে বাজে তার বিদায় ঘণ্টা। কয়েক ওভার পর সেঞ্চুরিতে পা রাখেন উইলিয়ামসন। তিনিও পারেননি ইনিংস আরও বড় করতে। ভিয়ান মুল্ডারকে ফাইন লেগ দিয়ে খেলার চেষ্টায় ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়েন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ড্যারিল মিচেল ১ ছক্কা ও ৪টি চারে ৩৭ বলে ৪৯ রানের চমৎকার ইনিংস খেলে ফেরেন। ঝড় তোলার মঞ্চ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি টম ল্যাথাম। তবে সুযোগ হাতছাড়া করেননি গ্লেন ফিলিপস। ২৭ বলে ১ ছক্কা ও ৬টি চারে ৪৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৭২ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন এনগিডি। ৭০ রানে দুটি প্রাপ্তি রাবাদার।