আরব আমিরাত সফরে লজ্জার ষোলোকলা পূর্ণ হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। আইসিসির সহযোগী সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টি- টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। আর প্রথমবারের মত বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল সংযুক্ত আরব আমিরাত। বুধবার রাতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে আরব আমিরাত ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ ২৭ রানে এবং দ্বিতীয়টি আরব আমিরাত ২ উইকেটে জিতেছিল। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতল আরব আমিরাত। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ১৯.১ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬৬ রান করে আরব আমিরাত। আর জয় পায় ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
টানা তৃতীয় ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে ওপেনার তানজিদ হাসান ১০ রান নিলেও, দ্বিতীয় ওভারের শুরুতেই বিদায় নেন আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন সিরিজের প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ। তবে মারমুখী মেজাজে দ্রুত রান তুলেছেন তানজিদ। তাতে ৩ ওভারেই ৩১ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। চতুর্থ ওভারে জোড়া উইকেট হারায় টাইগাররা। অধিনায়ক লিটন দাস ১৪ ও তাওহিদ হৃদয় খালি হাতে ফিরেন।
ব্যাটিংয়ে পাঁচ নম্বরে নেমে পাওয়ার প্লের শেষ বলে সাজঘরে ফিরেন ২ রান করা মাহেদি হাসান। ফলে ৬ ওভার শেষে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে চাপ আরও বাড়িয়ে দেন তানজিদ। সপ্তম ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। ৪টি করে চার-ছক্কায় ১৮ বলে ৪০ রান করেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। নিজের ইনিংসটি বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি দিয়েই সাজিয়েছেন তানজিদ। দলীয় ৫৭ রানে তানজিদ ফেরার পর দ্রুত ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৮৪ রানে অষ্টম উইকেট পতনে ১শর নীচে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে টাইগাররা। কিন্তু সেটি হতে দেননি উইকেটরক্ষক জাকের আলি ও হাসান মাহমুদ। নবম উইকেটে ২৬ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়েন জাকের ও হাসান। দলের রান ১২৮-এ নিয়ে নবম ব্যাটার হিসেবে থামেন জাকের। ৩৪ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪১ রান করেন তিনি। শেষ উইকেটে ১২ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন হাসান ও শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের শেষ ওভারে ২৬ রান তুলেন হাসান-শরিফুল। ফলে ৯ উইকেটে ১৬২ রান পায় বাংলাদেশ। হাসান ৩ ছক্কায় ১৫ বলে ২৬ এবং শরিফুল ১টি করে চার-ছক্কায় ৭ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
জবাবে দ্বিতীয় ওভারেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিমকে ৯ রানে আউট করেন শরিফুল। দ্বিতীয় উইকেটে আলিশানের সাথে ৩৫ বলে ৪৪ রান যোগ করে বিদায় নেন আরেক ওপেনার মুহাম্মদ জোহাইব। স্পিনার রিশাদ হোসেনের বলে বোল্ড হবার আগে ২৩ বলে ২৯ রান করেন তিনি। চার নম্বরে নেমে ব্যক্তিগত ১৩ রানে পেসার তানজিমের শিকার হন রাহুল চোপড়া। ৭৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় আরব আমিরাত। চতুর্থ উইকেটে ৫১ বলে ৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলের জয় নিশ্চিত করেন শারাফু ও আসিফ খান। ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৭ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন শারাফু। ৫ ছক্কায় ২৬ বলে ৪১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন আসিফ। বাংলাদেশের শরিফুল, তানজিম ও রিশাদ ১টি করে উইকেট নেন।