আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। সাভার থেকে ঢাকায় এভার কেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরের পর স্বাভাবিক অবস্থায় আছেন তামিম। অল্পস্বল্প খাওয়া খেতে পারছেন। প্রাথমিক বিপদ কেটে যাওয়ার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছেন। গতকাল সকাল থেকে অল্পস্বল্প হাঁটা শুরু করেছেন। সাভারের কেপিজে হাসপাতাল থেকে ঢাকার এভারকেয়ারে স্থানান্তরের পর তার শারীরিক পরীক্ষা করেছেন চিকিৎসকরা। সেখানে আশাব্যঞ্জক ফল পেয়েছেন তারা। খুব বেশি জটিলতা তাদের কাছেও ধরা পড়েনি। শুরুর চিকিৎসা প্রক্রিয়া ভালো হওয়ায় তামিম দ্রুত উন্নতি করছেন বলে মত দিয়েছেন। আপাতত দুয়েকদিন তামিম থাকবেন এভারকেয়ার হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে। এরপর বাসায় ফিরতে পারেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তামিম এখনও আছেন পর্যবেক্ষণে। এর মাঝেই জানা গেছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেয়া হতে পারে দেশসেরা এই ওপেনারকে।

২৫ মার্চ রাতে তামিমকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে ছুটে যান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। একই সময়ে সেখানে হাজির হন বাংলাদেশ ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকও। পরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, প্রয়োজনে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য তামিমকে বিদেশেও নেয়া হতে পারে। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘এখনো ডাক্তারদের সঙ্গে পরিবার কথা বলছে। যদি তারা কোনো পরামর্শ দেন, তাহলে পরিবার দেখবে।’ অবশ্য উন্নত চিকিৎসা, সেবা এবং রিহ্যাব প্রক্রিয়ার জন্য তামিমকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে চায় পরিবারও। এজন্য ভিসা প্রক্রিয়ার কাজও শুরু হয়ে গেছে। সিঙ্গাপুরের ভিসা রয়েছে তার। থাইল্যান্ডের ভিসা করার প্রক্রিয়া চলছে। দুই দেশে তার যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অ্যাপয়েনমেন্ট পাওয়ার ওপর নির্ভর করছে তার বিদেশ যাত্রা। তবে ভালো খবর, আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছেন তামিম। বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে সবশেষ দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তামিম।

দলটির কর্ণধার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তামিমকে থাইল্যান্ড নেয়ার চেষ্টা চলছে। গণমাধ্যমকে মিজানুর বলেছেন, ‘থাইল্যান্ডের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে ভিসার। আমি যাব সঙ্গে। এটার জন্য চিকিৎসক শিডিউল দিতে হবে। যখন চিকিৎসক অনুমতি দেবে তখন। এখন বলা যাচ্ছে না।’ মিজানুর আরও জানিয়েছেন, তামিমের হার্ট অ্যাটাকের বড় একটি কারণ পানি স্বল্পতা। চিকিৎসকেরাই নাকি এ তথ্য দিয়েছেন বলে জানান তিনি, ‘চিকিৎসকদের কথা অনুযায়ী প্রচ- ডিহাইড্রেশন (পানি স্বল্পতা) ছিল। পানি খায়নি, রাতে হয়তো ঘুমও হয়নি ঠিকমতো। এটা একটা কারণ। এ গরমের মধ্যে রোজায় ডিপিএল খেলাটা আমার কাছে কেন যেন মনে হচ্ছে কঠিন।’

গত ২৪ মার্চ বিকেএসপিতে ঢাকা লিগের ম্যাচ খেলতে নামার আগে প্রথমে মাইনর ও পরে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে’ অজ্ঞান হয়ে পড়েন তামিম। তাকে কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা এতোটাই খারাপ হয়েছিল যে, ২২ মিনিট সময় ধরে সিপিআর ও তিনটি ডিসি শক দিতে হয়েছে। এরপর দ্রুত এনজিওগ্রাম করে শতভাগ ব্লক থাকা একটা আর্টারিতে রিং লাগিয়েছেন চিকিৎসকরা। অবিশ্বাস্য গতিতে হয়েছে সবকিছু। চিকিৎসকদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত সময়মতো হওয়ায় তামিম পেয়েছেন নতুন এক জীবন।