মোস্তফা মোঘল, বগুড়া অফিস : ২০০৬ সালের ৫ ডিসেম্বর। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের দূর্দান্ত জয় উদযাপনের মাধ্যমে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা হয় বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের নাম। দেশের সেরা উইকেটের মালিকানা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগেরও বেশি সময় বগুড়ায় কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করেনি। বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিদায়ের পর নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করে বগুড়ার মানুষ। বিসিবি দীর্ঘ দিন বিমাতাসূলভ আচরণ করলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এনসিএল টি-২০ টুর্নামেন্টের ভেন্যু হিসেবে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে নির্বাচন করে। তড়িঘড়ি করে ভাঙাচোরা স্টেডিয়ামের কিছু সংস্কারও করা হয়। মরচে পড়া গ্যালারি হেসে ওঠে রঙের ছোঁয়ায়। নতুন করে জাগরণ শুরু হয় ক্রিকেটপ্রেমিদের মাঝে। নামী-দামী তারকা খেলোয়াড় না থাকলেও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটে তরুণরা। সবার মাঝে নতুন উদ্দীপনা।

শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম আবারও এই অঞ্চলের ক্রিকেটের কেন্দ্র হয়ে উঠবে এমন প্রত্যাশায় বুক বাঁধে বগুড়ার মানুষ। কিন্তু সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। রোববার ভোর থেকে বিরতিহীন বৃষ্টিতে মাঠ খেলার অনুপযুক্ত হওয়ায় সিলেট ও রংপুরের মধ্যকার এনসিএল এর উদ্বোধনী খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। শুধু একটা ম্যাচ নয়। ১৫ এবং ১৬ সেপ্টেম্বরের ম্যাচ দুটি বগুড়া থেকে রাজশাহীতে স্থানান্তর করা হয়েছে। মাঠ প্রস্তুত করা না গেলে অবশিষ্ট ম্যাচগুলোও রাজশাহীতে স্থানান্তর করা হতে পারে বলে বিসিবি সূত্রে জানা গেছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মাঝেই সকাল থেকে মিডিয়া কর্মিরা স্টেডিয়ামে ভীড় জমায়। চোখের সামনে বহুদিনের লালিত স্বপ্ন বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাওয়া দেখে হতাশার কালো মেঘ জমে তাদের মাঝে। প্রায় এক মাসের টানা অমানুষিক পরিশ্রমে মাঠ প্রস্তুতকারী গ্রাউন্ডসম্যানদের চোখে মুখে হতাশার চিহ্ন। বহুদিন পর শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ক্রিকেট উন্মাদনার সম্ভাবনা এভাবে নস্যাৎ হবে এমনটি ভাবেননি কেউ। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও অনেক দর্শক ছাতা মাথায় গ্যালারিতে উপস্থিত হয়েছিলেন। তারা আশায় ছিলেন খেলা না হলে টিকিটের টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। কিন্তু বিসিবি পরিস্কার জানিয়েছে বিক্রিত টিকিট ফেরত কিম্বা টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। বিসিবির টিকিট কমিটির সদস্য সাব্বির আহম্মেদ রুবেল জানান, আপাতত প্রথম তিনটি ম্যাচ বগুড়ায় হচ্ছে না। প্রথমটি পরিত্যক্ত হয়েছে এবং পরের ২টি ম্যাচ রাজশাহী স্টেডিয়ামে স্থানান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট ম্যাচের বিষয়ে পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিক্রিত টিকিট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টিকিটের ওপর লেখা রয়েছে বিক্রিত টিকিট ফেরত যোগ্য নয়। সুতরাং টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়া হবে না।’ কী পরিমাণ টিকিট বিক্রি হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।