নানা নাটকীয়তার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে অনুষ্ঠিত বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিসিবির পরিচালকের পদ থেকে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। একই দিনে এনএসসির পক্ষ থেকে বুলবুলকে বিসিবির কাউন্সিলর এবং পরিচালক হিসেবে মনোনীত করা হয়। বিসিবির গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৩.২ (খ) (৪) অনুযায়ী তাকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়, যা তাকে সভাপতির পদে নির্বাচিত হওয়ার পথ করে দেয়।

ফারুক আহমেদের অপসারণ নিয়ে শুরু থেকেই আলোচনা চলছিল। গত বৃহস্পতিবার বিসিবির ১০ পরিচালকের মধ্যে ৮ জনই ফারুকের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। সেখানে তাকে ‘স্বেচ্ছাচারী’ এবং ‘আধিপত্যবাদী’ বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি, ২০২৫ বিপিএলে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক সংক্রান্ত অনিয়মের দায়ও দেওয়া হয় তার কাঁধে। এ নিয়ে গঠিত সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে বিসিবিতে তার নেতৃত্বে সৃষ্ট অব্যবস্থাপনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

তবে বিসিবির সভাপতির পদ থেকে ফারুক আহমেদকে অপসারণের বিষয়ে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা জেগেছিল কিন্তু শনিবার যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া নিজেই স্পষ্ট করে বলেছেন,‘আইসিসির নিয়ম মেনেই ফারুক আহমেদকে সরানো হয়েছে। বিসিবির নিষেধাজ্ঞায় পড়ার কোনো শঙ্কা নেই।’

ফারুক আহমেদ অবশ্য নিজের অপসারণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন,‘আমি কেন পদত্যাগ করব? আমাকে কোনো কারণ জানানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, উপরমহল আমাকে আর চায় না।’ তবে এনএসসি তাদের সিদ্ধান্তের পেছনে ক্রিকেটীয় অবনমন এবং বিপিএলের অব্যবস্থাপনাকে কারণ হিসেবে তুলে ধরে। এদিকে, এনএসসির সরাসরি হস্তক্ষেপে বিসিবির সভাপতির পরিবর্তন হওয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা দেখা দেয়। কারণ, আইসিসি সাধারণত কোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ বরদাশত করে না। অতীতে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে আইসিসি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।