ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের কাছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেভাবে লড়াই করতেই পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ হেরেছে ৩৯ রানে। আগের সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হতে হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। দলের হারের ম্যাচে রান পেয়েছেন তাওহিদ হৃদয়। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে সমালোচনার মুখে পড়ের এই ক্রিকেটার। তবে সমালোচনাগুলো শুনতে আপত্তি নেই বলেও জানিয়ে রাখলেন তিনি। তাওহিদ হৃদয় বলেন,‘আপনি আপনার জায়গা থেকে সমালোচনা করবেন এটা তো স্বাভাবিক। আমাদের হাতে নিয়ন্ত্রণ নেই। আপনারা যত ইচ্ছা সমালোচনা করবেন, এটা আপনাদের অধিকার। আপনারা করেন। এখান থেকেও ইতিবাচক দিক হতে পারে। আপনার দুই-একটা কথায় আমাদের তো অনেক কিছু বদলে যেতে পারে। অবশ্যই এটা ইতিবাচকভাবে দেখছি।’ তবে সমালোচনার অধিকার চর্চার আহ্বান জানিয়ে রাখলেও একটি শর্ত তিনি জুড়ে দিলেন। সেখানে যেন কোনো ভালো বার্তা থাকে, কোনো কিছু যেন টেনে লম্বা না করা হয়। তিনি বলেন,‘আমি অনুরোধ করছি যে, আপনারা অবশ্যই যুক্তি দিয়ে সমালোচনা করবেন। মানে, কিছু সময় আছে যে, আমরা বাঙালি অনেক সময় একটা শুরু করলে ওটা নিয়েই চলতে থাকে।
জিনিসটা এমন যেন না হয়। (সমালোচনা) অবশ্যই করবেন। আমি চাই আপনারা করেন। এখান থেকে তো অনেক কিছু আমাদের ম্যাসেজ আমরাও পেতে পারি, যদি ভালো কিছু হয়।’ হৃদয় এই ম্যাচে রান করলেও তাকে নিয়ে গত কিছুদিনে সমালোচনা কম হয়নি। সেটা নিয়ে তার ভেতরে খেদ আছে বলেই ফুটে উঠল আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে। গত কয়েক মাসে রান তিনি টুকটাক করে গেছেন বটে। তবে ব্যাটিং খুব সাবলীল ছিল না, ইনিংস বড় হচ্ছিল না। বিপিএলে তাকে খেলতে দেখা যায় টপ অর্ডারে, যেখান থেকে বড় ইনিংস খেলার সুযোগ থাকে। জাতীয় দলে তার ভূমিকা ভিন্ন। এজন্যই তার সহজাত ব্যাটিং ব্যাহত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তার উত্তরে মিশে থাকল একটু অন্যরকম সুর। তিনি বলেন,‘আমার কাছে তো এরকম মনে হয়নি (ওপরের দিকে ব্যাট করতে হবে)। কারণ ক্রিকেট খেলা তো শুধু আমার একার খেলা নয়। যেহেতু এটা দলীয় খেলা, এই মুহূর্তে ওপরের দিকে খেলার মতো আসলে কোনো জায়গা আমার নেই। আপনারা অনেকে হয়তো ভাবেন, আমি দলে থাকার মতোও নই। তো ভাই, আমি যেখানে আছি, ভালো আছি। ওরা অনেক ভালো টাচে আছে। সবাই খুব ভালো শেইপে আছে। পারফর্মও করছে, যদি আপনারা ভালোভাবে দেখেন। দিনশেষে, এত আফসোসের কিছু নাই। এটা পার্ট অফ লাইফ। চেষ্টা করি যখন যেখানে সুযোগ পাই, যতটুকু অবদান রাখতে পারি দলের জন্য।’ বাংলাদেশ দলের সমালোচনার একটি জায়গায় এখন মিডল অর্ডার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে যদিও চরমভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে টপ অর্ডার, তবে মিডল অর্ডার দলকে ভোগাচ্ছে অনেক দিন থেকেই। এখানে উন্নতির তাগিদ নিয়েও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল হৃদয়কে। তিনি বললেন সামগ্রিক উন্নতির কথা। ‘শুধু মিডল অর্ডার নয়, টপ টু বটম সব জায়গায় উন্নতির জায়গা আছে আমাদের। যখন উন্নতিটা হবে, তখন আমরা আশা করি ভালো কিছু করব।’ হৃদয়দের সেই উন্নতি দেখানোর পরের সুযোগ আজ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ মাঠে নামবে সিরিজে সমতা ফেরাতে। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছেন তিনি। দলের ১৪২ রানে তিনি একাই করেছেন অপরাজিত ৮৩। দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনেও স্বাভাবিকভাবে এলেন তিনিই। প্রথমেই তাকে শুনতে হলো, এমন পরাজয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে আসা কতটা কঠিন? হৃদয় অবশ্য বললেন, তার কঠিন মনে হচ্ছে না। কিন্তু ম্যাচটা তো ছিল বাংলাদেশের জন্য কঠিন, সময়টাও এখন কঠিন। ম্যাচে বড় জুটি গড়তে না পারার আফসোস হৃদয়ের, ‘যদি বড় জুটি হতো তাহলে খেলা অন্যরকম হতো। কারণ খেলাটা আসলে আমরা অত বেশি রানের ব্যবধানে হারিনি। একটা জুটি। যদি আমি আর জাকের আলী যখন ব্যাট করছিলাম, তখন ৭০-৮০ রানের জুটি হলে হয়তো ভিন্ন কিছু হতে পারতো।’