বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াল সফরকারী পাকিস্তান। গতকাল তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭৪ রানে হারিয়েছে সফরকারীরা। আগে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ১৭৮ রানের বিশাল স্কোর গড়ে পাকিস্তান। ফলে জয়ের জন্য বাংলাদেশ পায় ১৭৯ রানের বিশাল টার্গেট। জয়ের জন্য ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ১৬.৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান করলে পাকিস্তান জয় পায় ৭৮ রানে। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে টানা জয় নিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। গতকাল শেষ ম্যাচ জিতে পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু শেষ ম্যাচে দাপুটে জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ায় পাকিস্তান। শেষ ম্যাচে সাইফউদ্দিন ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে কোন ব্যাটারই ভালো করতে পারেনি। দলের পক্ষে সাইফউদ্দিন করেন সর্বোচ্চ ৩৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন। জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে ১৭৯ রানের টার্গেটটা কঠিনই ছিল। তবে এই কঠিন টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করা বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলে প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন ওপেনার তানজিদ হাসান। সালমান মির্জার বলে হারিসের ক্যাচ হন তিনি। দলীয় ১০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নেমে ৮ বলে ৮ রান করে আউট হন অধিনায়ক লিটন দাস। তিনি ফাহিম আশরাফের বলে বোল্ড হন। ১০ রানের মধ্যে তানজিদ হাসান ও লিটন দাসের বিদায়ের পর হাল ধরতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ ও জাকের আলী। চতুর্থ ওভারে মিরাজকে ফেরান ফাহিম আশরাফ। ৮ বলে ১০ রান করে আব্বাস আফ্রিদির ক্যাচ হন তিনি। পাঁচ বলের মধ্যে জাকের আলীর বিদায়। মাত্র ২ বল খেলে ১ রান করে সালমান মির্জার কাছে বোল্ড হন তিনি। দলীয় ২৫ রানে বাংলাদেশ হারায় পঞ্চম উইকেট। ব্যাট করতে নেমে রানের খাতা খুলতে পারেননি শেখ মেহেদী হাসান। সালমান মির্জা বোল্ড করে বিদায় করেন তাকে। দলীয় ৩৪ রানে আর ৪১ রানে আরো দুটি উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় স্বাগতিকরা। শামীম হাসান ৫ রানে আউট হওয়ার পর ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম আউট হন ১০ রানে। ফলে দলের ফিফটি রানের আগেই বাংলাদেশ হারায় ৭ উইকেট। দলীয় ৬৫ রানে অস্টম আর ৮১ রানে নবম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নাসুম ৯ রানে আউট হওয়ার পর তাসকিন আউট হন ৭ রান করে। তবে সাইফউদ্দিনের ব্যাট শতরান পার করে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইনিংস থাকে ১০৪ রানে। আর পাকিস্তান জয় পায় ৭৪ রানে। সাইফউদ্দিন আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে দুই চার আর দুই ছক্কায় করেন ৩৫ রান। এরআগে, তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান টাইগার অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তারা সংগ্রহ করে ১৭৮ রান। আগে ব্যাট করতে নেমে ফারহান ও আইয়ুবের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় পাকিস্তান। ৪৭ বলে উদ্বোধনী জুটিতে তারা যোগ করেন ৮৭ রান। অষ্টম ওভারে আইয়ুবকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। ১৫ বলে ২১ রান করে ফেরেন পাক ওপেনার। তবে ব্যাট চালাতে থাকেন ফারহান। ২৯ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করে ৬৩ রানে গিয়ে নাসুমের শিকার হন তিনি। তার ৪১ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৬ চার ও ৫ ছক্কায়। তিনে নামা হারিস অবশ্য ব্যর্থ হন। ১৪ বলে ৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। চারে নেমে হাসান নওয়াজ দ্রুত ব্যাট চালান। ১৭ বলে ৩৩ রান করে তিনি শিকার হন শরিফুলের। এরপর হুসাইন তালাত দ্রুত ফিরলেও জুটি গড়েন সালমান আলি আগা ও মোহাম্মদন নওয়াজ। ষষ্ঠ উইকেটে ২৩ বলে ৪১ রান যোগ করেন তারা। শেষ ওভারে নওয়াজকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন। ১৬ বলে ২৭ রান করে পাকিস্তানি ব্যাটার। এই ওভারে ফাহিম আশরাফকেও ফেরান তাসকিন। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা সালমান আগা অপরাজিত থাকেন ৯ বলে ১২ রান করে। আগের দুই ম্যাচে একাদশে না থাকা সাহিবজাদা ফারহান তৃতীয় ম্যাচে নেমে করলেন বাজিমাত। সাইম আইয়ুবকে সঙ্গে নিয়ে উড়ন্ত ফিফটিতে পাকিস্তানকে দারুণ শুরু এনে দেন তিনি। সঙ্গে হাসান নওয়াজ ও মোহাম্মদ নওয়াজের দারুণ ইনিংসে বড় সংগ্রহ পায় সফরকারীরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

তৃতীয় টি-টোয়েন্টি: বাংলাদেশ ১৬.৪ ওভারে ১০৪/৯ (সাইফউদ্দিন ৩৫*, তানজিদ ০, লিটন ৮, মিরাজ ১০, জাকের ১, মেহেদী ০, শামীম ৫, নাঈম ১০, নাসুম ৯, তাসকিন ৭, শরিফুল ৭)

পাকিস্তান ২০ ওভারে ১৭৮/৭ (আব্বাস ১*, সালমান ১২*, সাইম ২১, শাহিবজাদা ৬৩, হারিস ৫, হাসান নওয়াজ ৩৩, তালাত ১, নওয়াজ ২৭, ফাহিম ৪)

ফল: পাকিস্তান ৭৪ রানে জয়ী

সিরিজ: বাংলাদেশ ২-১ এ জয়ী।