দেশের সবচেয়ে আলোচিত ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) আগামী ডিসেম্বরেই শুরু হচ্ছে। সরকারের কাছ থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে ইতোমধ্যে টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে বিপিএলের সর্বশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল এবার থাকছে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল নানা গুঞ্জন। অবশেষে সে প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন দলটির মালিক মিজানুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, বরিশাল বিপিএলে খেললে দলে থাকবেন তামিম ইকবালও। সর্বশেষ ডিপিএলে খেলার সময় মাঠেই হার্টস্ট্রোক করেছিলেন তামিম। এরপর থেকেই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে দূরে আছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। সম্প্রতি বিসিবি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন, যদিও পরবর্তীতে তিনি নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। নির্বাচনের পর দেশের অনেক ক্লাবকে সঙ্গে নিয়ে তামিম ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা দেন, যা ঘিরে শুরু হয় নানা আলোচনা। অনেকে মনে করেছিলেন, তার এই সিদ্ধান্ত বিপিএলেও প্রভাব ফেলবে। তবে বরিশালের মালিক মিজানুর রহমান ভিন্ন মত পোষণ করছেন।

সম্প্রতি ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিজানুরের কথায় স্পষ্ট-ব্যক্তিগত বা প্রশাসনিক কারণে তামিমের খেলা থেকে সরে দাঁড়ানো স্থায়ী কিছু নয়। এমনকি তামিমের বয়কটের ঘোষণা শুধুমাত্র সাধারণ খেলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি মনে করি না এমন কোনো বিষয় আছে যে তামিম বিপিএলে খেলবে না। আমার মনে হয়, সে যেটা (ক্রিকেট বর্জন) বলেছিল, সেটা সামগ্রিকভাবে খেলার ব্যাপারে ছিল। যদি বিপিএল হয়, আমি তাকে খেলার জন্য অনুরোধ করব। আর আমার বিশ্বাস, বরিশাল খেললে তামিমও খেলবে।’ তামিমের নেতৃত্বে গত দুই আসরেই শিরোপা জিতেছিল ফরচুন বরিশাল। ফলে দলটির সমর্থকদের প্রত্যাশা, তামিমকে আবারও বরিশালের জার্সিতে দেখা যাবে আসন্ন মৌসুমে। তবে এক দিক থেকে কিছুটা উদ্বেগ আছে বরিশাল শিবিরে। যে কারণে এই তাদের খেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে শঙ্কা।

পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সময় না পাওয়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কাছে সময়সূচি কিছুটা পেছানোর অনুরোধ জানিয়েছে। তাদের দাবি, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বিপিএল শুরু হলে এত অল্প সময়ে দল গঠন, খেলোয়াড়দের চুক্তিবদ্ধ করা এবং অন্যান্য লজিস্টিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা কঠিন। এ প্রসঙ্গে বরিশালের মালিক বলেন, ‘আমাদের খেলোয়াড় থাকলেও তাদের আনতে হবে, বাজেট তৈরি করতে হবে, যন্ত্রপাতি আনতে হবে- এসব করতে গেলে ১ থেকে দেড় মাস সময় যথেষ্ট না। আমরা চেয়েছি একটু সময় দেয়া হোক। সময় পেলে আমরা অবশ্যই খেলবো। খেলাটার সঙ্গেই তো আমরা সবসময় আছি।’ বিপিএলের শুরু থেকেই দল পরিচালনা করছে রংপুর রাইডার্স ফ্র্যাঞ্চাইজি। তাদের উদাহরণ টেনে মিজানুর আরও উল্লেখ করেন, ‘রংপুরকেও জিজ্ঞেস করুন, তারাও সম্ভবত এ সময়ের মধ্যে খেলতে আগ্রহী না। যাদের অভিজ্ঞতা কম তারাই এমন অল্প সময়ের মধ্যে খেলতে চাইবে।’

বিপিএলের সর্বশেষ আসরে ৭টি ফ্র্যাঞ্চাইজি অংশ নিলেও এবারের আসরে পাঁচটি দল অংশ নেবে। কারণ, আগের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে ৩ বছরের চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুনভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। গত শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ৫ বছরের জন্য বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানা অর্জনে আগ্রহী স্বনামধন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট সংস্থা ও উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট (ইডিআই) আহ্বান করেছে বিসিবি। বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি মোট দশটি সম্ভাব্য অঞ্চলের নামও প্রকাশ করেছে, যেগুলোর মধ্যে অন্তত পাঁচটি অঞ্চলের মালিকানা অনুমোদিত হবে। অঞ্চলগুলো হলো—বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট।ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আর্থিক সক্ষমতা, সুনাম এবং লিগের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সঙ্গে কৌশলগত সামঞ্জস্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে।