DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

ক্রিকেট

মাহমুদউল্লাহর জন্য শুভকামনা : বিসিবি সভাপতি

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে আগেই বিদায় নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এবার বিদায় নিয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে। বুধবার রাতে ফেসবুকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দেন অভিজ্ঞ এই তারকা।

স্পোর্টস রিপোর্টার
Printed Edition

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে আগেই বিদায় নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এবার বিদায় নিয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে। বুধবার রাতে ফেসবুকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দেন অভিজ্ঞ এই তারকা। মাহমুদউল্লাহ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সকল প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা আমাকে সবসময় সমর্থন করেছেন।’ ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবার জন্যই বিষাদের একটা মুহূর্ত। প্রায় দুই দশক মাহমুদউল্লাহ জাতীয় দলের অন্যতম প্রধান ভরসা ছিল। ধারাবাহিকতা ও চাপের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে পারার ক্ষমতা তাকে অমূল্য এক সম্পদে পরিণত করেছিল। খেলার প্রতি তার নিবেদন ও পারফরম্যান্স ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা মানদণ্ড তৈরি করেছে। তার লিগাসি অনুপ্রেরণা হিসেবে থেকে যাবে।’ মাহমুদউল্লাহকে বলা হয় ‘আড়ালের নায়ক’। দেশের বহু জয়ে তার অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। বিসিবি সভাপতি এ বিষয়ে বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পারফর্ম করার জন্য মাহমুদউল্লাহর আলাদা একটা সুনাম ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটে। ব্যাট অথবা বল হাতে, সবচেয়ে দরকারি মুহূর্তে সে পারফর্ম করেছে। চ্যালেঞ্জিং সময়ে তার মাথা ঠান্ডা রাখার গুণ ও মাঠে নেতৃত্বগুণ তাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সম্মানিত ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’ মাহমুদউল্লাহকে ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানিয়ে ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে আমরা মাহমুদ উল্লাহর দুর্দান্ত এক ক্যারিয়ারকে উদ্যাপন করি। একই সঙ্গে এতগুলো বছর দল ও খেলার জন্য নিবেদনের জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা তার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই।

এ বিষয়েও আমরা আত্মবিশ্বাসী যে তার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সমৃদ্ধ করে যাবে।’ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের অবসরের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। মুশফিক কিছুদিন আগেই ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ওয়ানডেকে বিদায় বলে দিয়েছেন। এরপর আজ এলো মাহমুদউল্লাহর ঘোষণা। যদিও বিসিবি সূত্রে জানা গিয়েছিল, মাঠ থেকেই বিদায় নিতে চান মাহমুদউল্লাহ। বিসিসিও সেভাবেই বিদায় দিতে চেয়েছিল তাকে। জাতীয় দলের মিডল অর্ডারে শক্তি খুঁটি হয়ে দীর্ঘদিন খেলে যাওয়া এই ব্যাটার টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ছেড়েছিলেন মাঠ থেকেই। কিন্তু ওয়ানডে থেকে তার বিদায় হলো মাঠের বাইরে থেকেই। ২০২৩ বিশ্বকাপেই মূলত নিজের সামর্থ্যের শেষ প্রদর্শনী করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ব্যাট হাতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করেছিলেন তিনি, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মুম্বাইয়ে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিও উপহার দেন। এরপর আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা ভালো খেলেও জায়গা ধরে রাখা কঠিন হয়ে ওঠে।

বিসিবির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় যে তিনি নেই, সেটাও স্পষ্ট হয়ে যায়। ফর্মের ঘাটতি সত্ত্বেও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সুযোগ পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু আলো ছড়াতে পারেননি। পরে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সুযোগ পেলেও নাম প্রত্যাহার করে নেন। ৩৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার হলেন একমাত্র বাংলাদেশী খেলোয়াড়, যিনি ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন, যার মধ্যে দুটি সেঞ্চুরি ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে এবং একটি সেঞ্চুরি ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে। এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দীর্ঘ ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে বাংলাদেশকে ২৩৯টি ওয়ানডে, ৫০টি টেস্ট এবং ১৪১টি টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ওয়ানডেতে রান করেছেন ৫৬৮৯। ৩২ ফিফটির বিপরীতে করা ৪ সেঞ্চুরিই করেছেন আইসিসির টুর্নামেন্টে। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ৮ ফিফটিতে করেছেন ২৪৪৪ রান। আর অভিজাত সংস্করণে ৫ সেঞ্চুরিতে করেছেন ২৯১৪ রান। ফিফটি করেছেন ১৬টি। বল হাতে সব মিলিয়ে নিয়েছেন ১৬৬ উইকেট।