অবশেষে ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে সরাসরি সভাপতি পদে লড়ার সুযোগ নেই তার সামনে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আগে পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হতে হবে। তারপরই সভাপতি হওয়ার পথ খোলা। তামিমও সেই প্রক্রিয়াতেই অংশ নিচ্ছেন। এক শীর্ষ গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তামিম বলেন, ‘যদি প্রশ্ন করেন আমি নির্বাচনে আসছি কি নাÑখুব ভালো সম্ভাবনা আছে। আমি নির্বাচন করছি। আমি ক্রিকেটে বিনিয়োগ করেছি, দুটি ক্লাবের সঙ্গে জড়িত আছি। ফলে কাউন্সিলর তো আমি হবোই।’ তার এই ঘোষণার পর বোর্ডের ভেতরে নতুন করে রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হলেও ভবিষ্যতে সভাপতির আসনেই চোখ রাখছেন তিনি। গত এক বছরে বিসিবির নেতৃত্বে একাধিক পরিবর্তন এসেছে। রাজনৈতিক পালাবদলের পর দীর্ঘদিনের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দেশ ছাড়েন। এরপর নতুন সরকার এসে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) কোটায় আরেক সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদকে সভাপতি বানায়। কিন্তু অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মাত্র ৯ মাসের মাথায় পদ ছাড়তে হয় তাকে। বর্তমানে বোর্ডের হাল ধরেছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। অনেকের চোখে তিনি গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের প্রতীক হলেও, তামিমের মতো জনপ্রিয় এক সাবেক অধিনায়কের মাঠে নামা বিসিবির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে নতুন মাত্রা যোগ করল। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে দীর্ঘদিন সেবা দেয়া তামিম ইকবাল মাঠের ভেতরে যেমন ছিলেন নির্ভরতার নাম, মাঠের বাইরেও তার অভিজ্ঞতা, জনপ্রিয়তা ও ক্রিকেট-জ্ঞান এবার তাকে তুলে ধরছে বোর্ড পরিচালনার জন্য একটি যোগ্য প্রার্থী হিসেবে। একই বিষয়ে প্রতিবেদন করেছে ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েসবাইট ক্রিকবাজও। যেখানে তামিম বলেন, ‘কেউ আগেভাগে বলতে পারে না যে তিনি সভাপতি হবেন। আমি নিজেও অনেক কিছু দেখি ও শুনি। কিন্তু মূল প্রশ্ন হলো আমি বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেব কি না। যদি ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) কথা বলি, সেখানে সরাসরি সভাপতি পদে ভোট হয়। কিন্তু বিসিবি আলাদা। এখানে প্রথমে পরিচালক হতে হয়।’ নির্বাচনে জিততে পারলে দুই-তিনটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান তামিম। সবচেয়ে বড় ফোকাস থাকবে ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ওপর। জাতীয় দলের সাবেক এই ওপেনার বলেন, ‘আমার ফোকাস থাকা উচিত দুটি-তিনটি বিষয়ের ওপর। এখন সবচেয়ে জরুরি হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো। খেলোয়াড়, কোচ সবই আছে। কিন্তু নতুন খেলোয়াড় তৈরি করার মতো অবকাঠামো নেই। বর্তমান খেলোয়াড়দের উন্নতিরও যথাযথ জায়গা নেই।’ সুযোগ-সুবিধা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই বিষয়টা নিয়ে কোনো আলোচনা শুনছি না। আমি আসতে পারলে চার বছরের মধ্যে এমন অবকাঠামো গড়ে তুলতে চাই যাতে বাংলাদেশের ক্রিকেট আগামী ৮-১০ বছরের জন্য নিরাপদ থাকে।’ বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ীÑ তিন ক্যাটাগরিতে বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হবেন। ২৫ সদস্যের বোর্ডে ঢাকাভিত্তিক ক্লাব (ক্যাটাগরি-১) থেকে ৭৬ জন কাউন্সিলরের ভোটে নির্বাচিত হন ১২ জন পরিচালক। ক্যাটাগরি-২ থেকে (আঞ্চলিক ও জেলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি) ৮ বিভাগ ও ৬৪ জেলার কাউন্সিলররা ভোট দিয়ে ১০ জন পরিচালক নির্বাচন করেন। ক্যাটাগরি-৩ এ একজন পরিচালক নির্বাচিত হন ‘অন্যান্য প্রতিনিধি’ কোটায়। এছাড়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত করেন ২ পরিচালক। এরপর নির্বাচিত পরিচালকরা ভোট দিয়ে সভাপতি নির্বাচন করেন।