ওয়ানডেতে র্যাংকিংয়ে এখন সবচেয়ে বাজে অবস্থা বাংলাদেশের। আইসিসির বার্ষিক হালনাগাদ করা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ নেমে গেছে তালিকার ১০ নম্বর স্থানে। সাম্প্রতিক সময়ে এতটা বাজে অবস্থা বাংলাদেশের আর হয়নি। গত বছরে ৮টি ম্যাচ খেলে ৭টিতেই হেরেছে। ১টি জয় কেবল আফগানিস্তানের বিপক্ষে। যার ফলে বাংলাদেশ নেমে গেছে দশ নম্বরে। এর ফলে ২০২৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের সরাসরি অংশগ্রহণ নিয়েই এখন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে জিম্বাবুয়ে আর আয়ারল্যান্ড আছে শুধু বাংলাদেশের পেছনে। প্রায় ১৯ বছর আগে, ২০০৬ সালে সর্বশেষ আইসিসি র্যাংকিংয়ে ১০ নম্বরে ছিল বাংলাদেশ। সেবার অক্টোবরের ১৬ তারিখ বাংলাদেশ প্রথম আইসিসি র্যাংকিংয়ে ৯ম স্থানে উঠেছিল। তার আগে ২০০৫ সালে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর আগে বাংলাদেশ ছিল ১১তম স্থানে। অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর কেনিয়াকে টপকে সেরা ১০-এ আসে বাংলাদেশ। এরপর ২০০৬ সালে প্রথম জিম্বাবুয়েকে পেছনে ৯-এ উঠে আসে টাইগাররা। ১৯ বছর পর আবারও পুরনো অবস্থায় ফিরে গেলো বাংলাদেশ। ক্রিকেটে এর প্রভাব পড়তে পারে। কারন, ২০২৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য সরাসরি অংশগ্রহণ নিয়েই এখন দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। ক্রিকেটের বাইবেল খ্যাত সাময়িকী উইজডেনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওডিআই র্যাঙ্কিংয়ের সেরা আটে থাকা দলই যাবে আফ্রিকা মহাদেশে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে (দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে ছাড়া)। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সেরা আটে থাকলে ৯ম স্থানে থাকা দলও বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে যাবে। বাংলাদেশ সবশেষ র্যাঙ্কিং অনুযায়ী অবস্থান করছে ১০ম স্থানে। আবার ধীরে ধীরে কমে আসছে ওয়ানডে সংখ্যাও। ২০২৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় অনেকটা সময়ই ওয়ানডে থেকে দূরে থাকতে পারে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে এরইমাঝে ওয়ানডে বাদ দিয়ে তার বদলে কেবলমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন কিছু হতে পারে পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে। যদিও আইসিসির এফটিপি বলছে, ২০২৭ সালের মার্চের আগে পর্যন্ত ২৯ ওয়ানডে খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। এর মাঝে ৮ ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ে। বাকি ২১ ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে আছে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিপক্ষ বিবেচনায় সিরিজগুলো বাংলাদেশের জন্য খুব একটা সহজ হচ্ছে না– তা সহজেই অনুমেয়। তবে বাংলাদেশ এসব সিরিজে নিজেদের মেলে ধরতে না পারলে বেশ বড় রকমের বিপদই অপেক্ষা করছে। আশানুরূপ ফল না এলে খেলতে হতে পারে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব। ২০২৭ সালে আফ্রিকা মহাদেশে বসবে বিশ্বকাপের আসর।
দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া এবং জিম্বাবুয়ের মাটিতে হবে সেই বিশ্বকাপ। সবমিলিয়ে ১৪ দল অংশ নেবে বৈশ্বিক এই আসরে। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিলো টাইগাররা। এরপর ঘরের মাঠে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে উঠে এসেছিল ৭ নম্বরে। এর দুই বছর পর, ২০১৭ সালের মে’তে বাংলাদেশ ওঠে ৬ নম্বরে। এরাপর সর্বশেষ ২০২২ সালের দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে আবারও ৬ নম্বরে উঠেছিল টাইগাররা। এরপর থেকেই পতন শুরু। নামতে নামতে দশ নম্বরে নেমে গেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।