ক্রিকেট
শনিবার ৬ জিম্মি ও ৪ জনের লাশ হস্তান্তর করবে হামাস
ইসরাইলের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে নিজেদের প্রস্তুতি ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সংগঠনটির প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়্যা মঙ্গলবার এক বক্তব্যে এ তথ্য জানিয়েছেন।
Printed Edition
১৯ ফেব্রুয়ারি, আল জাজিরা , মেহের নিউজ : ইসরাইলের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে নিজেদের প্রস্তুতি ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সংগঠনটির প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়্যা মঙ্গলবার এক বক্তব্যে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী আগামী শনিবার ৬ ইসরাইলী জিম্মি এবং চার বন্দির লাশ হস্তান্তর করা হবে। হাইয়্যা বলেন, প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি যাতে পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়, সেজন্য মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বিশেষ করে কাতার ও মিশরের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে হামাস।
এ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি মেনে চলার ব্যাপারে হামাস নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে জানিয়ে খলিল আল-হাইয়্যা বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল চুক্তির শর্তগুলো ঠিকমতো পালন করছে না। বিশেষ করে তারা এখনো গাজাবাসীর ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে এবং উপত্যকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে না। গাজায় হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হয়। তিন পর্যায়ে বাস্তবায়নযোগ্য এই চুক্তির ৪২ দিনব্যাপী প্রথম পর্যায়ে ৩৩ ইসরাইলী জিম্মির বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনী বন্দি ইসরাইলী কারাগারগুলো থেকে মুক্তি পাবেন। সে অনুযায়ী এ পর্যন্ত ১৯ ইসরাইলী জিম্মিকে ছেড়ে দিয়ে অন্তত ১,১০০ ফিলিস্তিনী বন্দির মুক্তি নিশ্চিত করেছে হামাস। বাকি যে ১৪ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে, তাদের মধ্যে আটজন নিহত হয়েছে বলে ইসরাইলী কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। চলমান প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি আগামী ১ মার্চ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও এর ২৬ দিন আগে দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ইহুদিবাদী ইসরাইলের গড়িমসির কারণে তা এখনো সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এছাড়া প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরাইলী বাহিনী। এতে গত ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত উপত্যকাটিতে সব সূত্রের হিসাবে মতে ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় দেড় লাখ। তবে চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় কার্যকর হলে গাজা যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার কথা রয়েছে। গাজা উপত্যকায় আটক সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিনী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর বিনিময়ে তারা চায় যুদ্ধের অবসান ও গাজা থেকে ইসরাইলী সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার। গতকাল বুধবার হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম এক বিবৃতিতে এই প্রস্তাবের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। হামাসের মুখপাত্র কাসেম বলেন, আমরা দ্বিতীয় ধাপে (যুদ্ধবিরতির) যেতে প্রস্তুত। যেখানে একটি চুক্তির ভিত্তিতে সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দেওয়া হবে। এই চুক্তির শর্ত হবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার।
তিনি আরও বলেছেন, গাজা থেকে হামাসকে সরিয়ে দেওয়ার ইসরাইলের শর্ত একটি হাস্যকর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। গাজা থেকে প্রতিরোধ বাহিনীকে প্রত্যাহার বা নিরস্ত্র করা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। হামাস আগামী শনিবার মুক্তি দেওয়া জিম্মির সংখ্যা তিনজনের পরিবর্তে ছয়জনে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল হামাস নেতা খলিল আল-হায়া এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। কাসেম বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে এবং চুক্তির সব শর্ত বাস্তবায়নে আমাদের আন্তরিকতা প্রমাণ করতে জিম্মির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।