এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন তামিম ইকবাল। শারীরিক অবস্থার উন্নতি দেখে গতকাল তাকে ছেড়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পবিত্র জুমার নামাজের পরপরই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে রাজধানীর বনানীর ডিওএইচএসের বাসায় ফিরে গেছেন তামিম। সেখানেই পারিবারিকভাবে তার চিকিৎসা চলমান থাকবে। সাভারের কেপিজে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর তামিম ইকবালকে নেওয়া হয় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে। হার্ট অ্যাটাকের ধকল কাটিয়ে একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি। এর আগে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্ভিসেস ডিরেক্টর আরিফ মাহমুদ জানিয়েছিলেন, তামিম এখন অনেকটাই সুস্থ। তিনি বলেন, ‘তামিম ভালো আছেন, স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন। সেখানেই এক-দু’দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। আশা করা যাচ্ছে ঈদের আগেই তিনি বাসায় ফিরতে পারবেন।’ শেষ পর্যন্ত ঈদের আগেই বাসায় ফিরতে পারলেন বাঁহাতি ওপেনার। তামিম মাঠে গুরুতর অসুস্থ হন গত সোমবার। তখন বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে চলছিল ডিপিএলের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচ। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে খেলতে নেমে মাঠেই হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ককে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার আগে তামিমকে নিতে হেলিকপ্টারও আনা হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় পাশে থাকা কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজেই চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় তাকে। সেখানেই হার্টে রিং পরানো হয়েছে। শঙ্কা কাটলেও পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে ফিরতে এখনও সময় লাগবে তামিমের। একদিন আগে তার চাচা আকরাম খান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন তাকে দেশের বাইরে নেওয়ার চিন্তা আছে তাদের, ‘আগামী দু-তিন দিন যদি অবস্থা স্থিতিশীল থাকে, তাহলে তাকে বাসায় নেয়া হবে। পাশাপাশি পরবর্তী পর্যায়ে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নেয়ার পরিকল্পনাও আছে।’ বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই তারকা ব্যাটসম্যানের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন তার ভক্ত-সমর্থকরা। তবে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরলেও তাকে দীর্ঘমেয়াদে ফিটনেস ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে বলে মত চিকিৎসকদের। বিসিবির ওই চিকিৎসক বলছিলেন, 'বর্তমানে তিনি সব দিক থেকেই ভালো আছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শেই বাড়িতে চলে গেছেন। পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে পরিবার সিদ্ধান্ত নেবে।' এর আগে গত সোমবার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে বিকেএসপিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তামিম। বুকে ব্যথা নিয়ে পাশ্ববর্তী কেপিজি স্পেশালাইজড হাসপাতালে যান। পরে জানা যায়, দুবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তামিমের। হার্টে ব্লক ধরা পড়ার পর রিংও পরানো হয়। সাভারের কেপিজি হাসপাতালে একদিন রাখার পর মঙ্গলবার রাতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ধীরে ধীরে তার শারিরীক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় আভাস ছিল দুয়েকের মধ্যে বাসায় ফিরতে পারেন। গতকাল তিনি বাসায় চলে গেলেন। উন্নত চিকিৎসা নিতে বিদেশে যাওয়ারও গুঞ্জন আছে। এদিকে, আলোচনায় তামিম আবারও ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন কি না। এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডপ্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার এ প্রসঙ্গে বলছিলেন, 'ক্রিকেটে তিনি ফিরবেন কি না, সেটা তিন-চার মাস পর কার্ডিয়াক টিম ও ফিজিওরা তামিমের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার পর বলতে পারবে।' তামিমের জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তনের পরামর্শ নিয়ে তিনি বলছিলেন, ‘এমন হার্ট অ্যাটাকের পর এসব রোগীদের খুবই সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাদের এটা হওয়ার প্রবণতা আবার থাকতে পারে। ব্লক না হলেও হতে পারে। তাই ওনাকে অ্যাসেস করতে হবে, নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে। লাইফস্টাইল বদলাতে হবে, মোটিভেশন করতে হবে। ডায়েট, ডিসিপ্লিনÑতামিমের টিম ও তামিমের পরিবার এবং তামিমকে নিজেরও আমাদের সঙ্গে কো-অপারেট করতে হবে।’