মো. রফিকুল ইসলাম : পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। গতকাল প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান টাইগার বোলারদের বোলিং আক্রমণে মাত্র ১১০ রানেই অলআউট হয়। দলটি খেলতে পারেনি পুরো ২০ ওভার। ফলে জয়ের জন্য বাংলাদেশ পায় ১১১ রানের সহজ টার্গেট। এই জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ১৫.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১১২ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় ৭ উইকেটে। ব্যাটে-বলে সমান তালে পারফরমেন্স করে পাকিস্তানের বিপক্ষে আধিপত্য বজায় রেখেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা। প্রথম ম্যাচেই জয়ের জন্য ১১১ রানের টার্গেটটা বাংলাদেশের হাতের নাগালেই ছিল। তবে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২ রানে প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা। মাত্র এক রান করে আউট হন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তানজিদ ৪ বলে ১ রান করে সালমান মির্জার বলে মিড অনে ফখর জামানের ক্যাচ হন। দলীয় ৭ রানে বাংলাদেশ হারায় দ্বিতীয় উইকেট। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১ রানে আউট হন অধিনায়ক লিটন দাসও। লিটনকেও ফিরান সালমান মির্জা। মির্জার বলে স্লিপে খুশদিল শাহের দুর্দান্ত ক্যাচ হন অধিনায়ক লিটন। দলীয় ৭ রানে ২ উইকেট হারালেও ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আর তাওহিদ হৃদয় জুটি করে দলকে এগিয়ে নেন। ফলে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ করে ৩৮ রান। এই জুটি না ভাংগার আগেই বাংলাদেশ পৌছে যায় ৮০ রানে। তাওহিদ হৃদয়ের বিদায়ে ভাংগে এই জুটি। আব্বাস আফ্রিদির বলে বোল্ড হওয়ার আগে হৃদয় ৩৭ বলে দুই চার আর দুই ছক্কায় করেন ৩৬ রান। এই জুটি থেকে আসে ৭৩ রান। হৃদয়ের বিদায়ে ইমনের সাথে জুটি করেন জাকের আলী। এই জুটি ভাংগার আগেই বাংলাদেশ পৌঁছে যায় ১১২ রানে। পারভেজ ইমন ৫৬ রানে আর জাকের আলী ১৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ী করে মাঠ ছাড়েন। এর আগে, প্রথমে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। যেটি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সফরকারীদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই উইকেট হারাতে থাকে সফরকারীরা। কেবল তিনজন ছাড়া কেউই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘর। ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার সাইম আইয়ুবকে ৬ রানে ফিরিয়ে শুরুটা করেন তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারে তিনে নামা মোহাম্মদ হারিসকে ৪ রানে ফেরান মাহেদি হাসান। ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক সালমান আলি আগাও পারেননি টিকতে। তানজিম হাসান সাকিবের বল লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩ রানে। ষষ্ঠ ওভারে শূন্য রানে ফেরেন হাসান নওয়াজও। ছয়ে নামা মোহাম্মদ নওয়াজ ৩ রান করে রান আউট হন। লড়তে থাকা ফখর জামান যদিও ফিফটির দিকে এগোচ্ছিলেন। তবে পারেননি পূর্ণ করতে। রান আউট হয়ে ৩৪ বলে ৪৪ রান করে ফেরেন তিনি। সপ্তম উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন খুশদিল শাহ ও আব্বাস আফ্রিদি। কিন্তু সপ্তদশ ওভারে খুশদিলকে ফিরিয়ে ৩৩ রানের জুটি ভেঙে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১১০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে শেষ ওভার খেলার প্রস্তুতি নেয় পাকিস্তান। তবে প্রথম বলেই ফাহিম আশরাফকে ফেরান তাসকিন। দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে ফেরেন সালমান মির্জা। আর তৃতীয় বলে আব্বাসকে ২২ রানে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দেন তাসকিন। দণটি খেলতে পারেনি পুরো ওভার। ৩ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় পাকিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষে ২২ রান খরচায় তাসকিন নেন ৩ উইকেট। আর ৬ রান দিয়ে দুই উইকেট শিকার করে রেকর্ড গড়েন মোস্তাফিজ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৪ ওভারের বোলিং কোটা পূরণ করে সবচেয়ে কম রান দেযা বাংলাদেশি এখন তিনি। এর আগে রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান ও মোস্তাফিজ নিজে ৪ ওভারে ৭ রান দিয়েছিলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১৯.৩ ওভারে ১১০/১০ (আবরার ০*, সাইম ৬, হারিস ৪, সালমান ৩, হাসান নওয়াজ ০, মো. নওয়াজ ৩, ফখর ৪৪, খুশদিল ১৭, ফাহিম ৫, সালমান মির্জা ০, আব্বাস ২২)
প্রথম টি-টোয়েন্টি: বাংলাদেশ ৮ ওভারে ৫৪/২ (হৃদয় ৩৬, ইমন ৫৬ *, জাকের ১৫ *,তানজিদ ১, লিটন ১, সালমান-২৩/৩, আব্বাস আফ্রিদি-১৬/১)
বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।