ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) সর্বোচ্চ রানের ইতিহাস গড়েছিল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। ওপেনার নাঈম শেখের সেঞ্চুরি এবং সাব্বির হোসেন ও সাজ্জাদুল রিপনের হাফ সেঞ্চুরিতে করেছিল ডিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪২২ রান। অথচ সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে উল্টো পথে প্রাইম ব্যাংকের ব্যাটাররা। লো স্কোরিং ম্যাচে তাদের একশর আগেই গুটিয়ে দিয়ে ৯৪ রানের দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে এনামুল হক বিজয়ের দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। গতকাল বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) ৪ নম্বর মাঠে ডিপিএলের পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমেছিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। তবে প্রাইম ব্যাংকের স্পিনারদের ভেলকিতে ৪৩.৪ ওভারে ১৮৩ রান গুটিয়ে যায় তারা। লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম বলেই উইকেট হারানোর পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ২৩.২ ওভারে মাত্র ৮৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় তারা। জয়ের জন্য ১৮৪ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলেই সাব্বির হোসেনের উইকেট হারায় প্রাইম ব্যাংক। শামসুর রহমান শুভর প্রথম বলেই ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে মিড অফে আবু হাশিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তিনে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাকির হাসানও। শেখ পারভেজ জীবনের বলে লেগ সাইডে ঠেলে দিয়ে এক রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে ১১ রান করা এই ব্যাটারকে। এরপর নাঈম শেখও সুবিধা করতে পারেননি। পারভেজ জীবনের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে খানিকটা জায়গা বানিয়ে এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন নাইম। তবে টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় মিড অফে থাকা তোফায়েল আহমেদকে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। ছন্দে থাকা বাঁহাতি ওপেনার আউট হয়েছেন ২৭ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৫ রানে। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর শাহাদাত হোসেন দিপুকেও ফিরিয়েছেন পারভেজ জীবন। ডানহাতি স্পিনারের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে ১২ রানে আউট হয়েছেন তিনি। অধিনায়ক ইরফান শুক্কুর ফিরেছেন দ্রুতই। শামীম হোসেন পাটোয়ারিকে নিজের শিকার বানিয়েছেন লিওন ইসলাম। ৫৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে প্রাইম ব্যাংক। সেখান থেকে অবশ্য আর বের হতে পারেনি তারা। একটু পর আউট হয়েছেন নাহিদুল ইসলামও। শেষ দিকে রিশাদ হোসেনের ২১ রান ছাড়া বাকিদের কেউই কিছু করতে পারেননি। মাত্র ৮৯ রানে অল আউট হয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। গাজী ক্রিকেটার্সের হয়ে হাশিম তিনটি, লিওন ও পারভেজ জীবন দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সও। ইনিংসে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৪৪ বলে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়। শেষের দিকে গাজী ক্রিকেটার্সের রান বাড়িয়ে নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও আব্দুল গাফফার সাকলাইন। ৭১ বল খেলা আমিনুল ৩৫ ও সাকলাইন ২৪ রান করেছেন। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদুল ইসলাম ও আরাফাত সানি। দুটি উইকেট পেয়েছেন লেগ স্পিনার রিশাদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স : ৪৩.৪ ওভারে ১৮৩/১০ (বিজয় ৪৮, আমিনুল ৩৫, সাকলাইন ২৪; সানি ৩/৩৩, নাহিদুল ৩/৪৬, রিশাদ ২/২৩)
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব : ২৩.২ ওভারে ৮৯/১০ (রিশাদ ২১, নাঈম ১৫, জাকির ১১, দিপু ১২; আবু হাশিম ৩/১২, পারভেজ জীবন ২/১৭)
ফল : গাজী গ্রুপ ৯৪ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা : আবু হাসিম