নারী বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানকে হারানোর ম্যাচে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন মারুফা আক্তার। এই ক্রিকেটারের পেস-সুইংয়ে দিশেহারা ছিলেন পাক টপ অর্ডার ব্যাটাররা। যে কারণে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ পেসার মারুফা আক্তারের বোলিং মুগ্ধ করেছে কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার লাসিথ মালিঙ্গাকে। নারী বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ একাদশে একমাত্র বিশেষজ্ঞ পেসার ছিলেন মারুফা। ম্যাচের প্রথম ওভারেই পরপর দুই বলের জাদুতে সাজঘরে ফেরান পাকিস্তানের দুই ব্যাটার সিদরা আমিন ও ওমাইমা সোহেলকে। সুইং আর নিখুঁত নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানি টপ অর্ডারকে আতঙ্কিত করেছে এই তরুণী। তার এই বোলিং মুহূর্তেই বিশ্বজুড়ে দর্শকদের নজরও কাড়েন।
শ্রীলংকান তারকা ক্রিকেটার লাথিস মালিঙ্গা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসা করতে ভোলেননি। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে শ্রীলংকান তারকা লিখেছেন, ‘একেবারে নিখাদ স্কিল। অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা ডেলিভারি।’ তিনি ইঙ্গিত করছিলেন সেই নিখুঁত ইন সুইংকে, যেটিতে সিদরা আমিনকে বোল্ড করেছেন মারুফা। অনেকে ইতোমধ্যেই বলছেন, এটি হতে পারে বিশ্বকাপের সেরা বল। শুধু মালিঙ্গাই নন, মুগ্ধ হয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক মিতালি রাজও। তিনি বলেন,‘ও অনেক সুইং পেয়েছে, কিন্তু শুধু সুইং পেলেই হবে নাÑঠিক লাইন ও লেন্থে বল করতে হবে। মারুফা সেটা করেছে, আর তার পুরস্কারও পেয়েছে। টানা দুই উইকেট, প্রায় হ্যাটট্রিকের সামনে ছিল। এর আগেও আমি তাকে দেখেছি, দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে তার গতি ও বোলিং অ্যাকশন আমাকে মুগ্ধ করেছিল। প্রথম ওভারে যা দেখলাম, একজন ফাস্ট বোলারের স্বপ্নের শুরু। একাদশে একমাত্র পেসার হয়েও দুই বড় উইকেট তুলে নেওয়া দারুণ মুহূর্ত বাংলাদেশ দলের জন্য।’ ম্যাচ শেষে মারুফা বলেন, ‘আমি ভীষণ উচ্ছ্বসিত। এই বিশ্বকাপই আমার জীবন, এটাই আমার প্রথম আসর। দুই মাস ধরে প্রতিদিন, এমনকি ঘুমের মধ্যেও আমি এই মুহূর্ত কল্পনা করেছি। প্রথম ম্যাচে ভালো কিছু করতে চাইতাম। আজ মনে হচ্ছে, আমি-ই ম্যাচ জেতালাম। সতীর্থরা আমাকে দারুণ সমর্থন দিয়েছে। আর বিশেষ ধন্যবাদ আমাদের টিম অ্যানালিস্টকে, খেলার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছিলেন। মাঠে আমরা প্রচুর এনার্জি দেখিয়েছি, এই জয় থেকে অনেক ইতিবাচকতা নিয়ে সামনে এগোবো। আমি চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’ এদিকে ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের অধিনায়ক ফাতিমা সানা বলেছেন, ‘শুরুতে বোলিং করাটা অনেক মজার ছিল। বেশ সিম হচ্ছিল। শুরুতে উইকেট দিতে চাই না আমরা। তবে প্রথম ওভারেই দুই উইকেট চলে গেছে। ভালো সিম হচ্ছিল।
মারুফা শুরুতে অনেক ভালো বোলিং করেছে। পেসারদের সাপোর্টে শুরুতে ভালো করতে হবে আমাদের। সামনের ম্যাচগুলোয় আরও ভালো করতে চাইব আমরা।’ এছাড়া নিজেদের ব্যাটিং নিয়ে হতাশা ঝরেছে ফাতিমার কণ্ঠে, ‘স্যারদের সাথে ব্যাটিং নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আরও ভালো প্ল্যান করার চেষ্টা করছি। আগে যেভাবে খেলে এসেছি সেভাবেই সামনে খেলে যেতে চাইব। চাপ থাকবেই, অনেক মেয়ে চাপের ম্যাচ প্রথম খেললো। ফলে সামনে এগুলো মানিয়ে নিয়ে খেলতে হবে আমাদেরকে। (বাংলাদেশকে) ২৫০ (রানের টার্গেট) দিতে পারলে ভালো হত। এমন উইকেটে যেখানে স্পিন হচ্ছিল সেখানে ২৫০+ টার্গেট দিতে চাচ্ছিলাম আমরা।’