জাতীয় ক্রিকেট লিগে বরিশালের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট নিয়ে চমক দেখিয়েছেন বরিশালের আফিফ হোসেন। খুলনায় এক দিনে দেখা মিলেছে তিন ইনিংসের। সেখানে আফিফের হ্যাটট্রিকে ফলো-অনে পড়েছে বরিশাল। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে রোববার ৯ উইকেটে ৩১২ রান নিয়ে দিন শুরু করে খুলনা। ১ রান যোগ করেই তারা হারায় শেষ উইকেট। ৭৩ রান করে ফেরেন শেখ পারভেজ জীবন। ব্যাট করতে নেমে আফিফের অফ স্পিনে প্রথম ইনিংসে কেবল ১২৬ রানেই গুটিয়ে যায় খুলনা। এক প্রান্ত আগলে রেখে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন ওপেনার জাহিদউজ্জামান। মাঝে তাকে কিছুটা সঙ্গী দেন মইন খান। পরপর তিন বলে শেষ তিন উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করেন আফিফ। সঙ্গে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো নেন পাঁচ উইকেট।
ফলো অনে পড়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রানে ফিরেছেন জাহিদউজ্জামান। ভালো শুরুটা বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন ইফতেখার হোসেন ইফতি (৪০) ও ফজলে মাহমুদ (৩২)। তাই এখনও চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের শঙ্কা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১১৯ রানে দিন শেষ করেছে বরিশাল। অভিজ্ঞ শামসুর রহমান খেলছেন ২৪ রানে। তাসামুল হক ব্যাট করছেন ৩ রানে। এখনও ৬৮ রানে পিছিয়ে বরিশাল। প্রথম ইনিংসে ৩১ রানে ৬ উইকেট নেওয়া আফিফ এবার এখনও পর্যন্ত উইকেটশূন্য। নাহিদ ইসলাম নিয়েছেন ২ উইকেট।
দিনের অন্য ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে ব্যাটে-বলে দারুণ সময় কাটছে চট্টগ্রামের ক্রিকেটারদের। ৬ উইকেট নিয়ে দলকে বড় লিড এনে দিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ। সেঞ্চুরির পর ফিফটির দেখা পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে গতকাল ২ উইকেটে ১ রান নিয়ে দিন শুরু করে রাজশাহী। মুরাদের স্পিনে ৫৪.৪ ওভারে ১৯৬ রানে গুটিয়ে যায় দলটির প্রথম ইনিংস। শুরুতেই আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান রাহিম আহমেদকে ফিরিয়ে দেন মেহেদি হাসান। প্রিতম কুমারকে বোল্ড করে দ্রুত ফেরান নাঈম হাসান। এক প্রান্ত আগলে রেখে দুই ছক্কা ও সাত চারে ৮১ বলে ৫৭ রান করা সাব্বির হোসেনকে এলবিডব্লির ফাঁদে ফেলেন মুরাদ। এসএম মেহরব ও শাকির হোসেনকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের চতুর্দশ পাঁচ উইকেট। পাল্টা আক্রমণে ৭৫ বলে দুই ছক্কা ও ছয় চারে ৬৫ রান করা সাব্বিরকে বিদায় করেন জয়। পরে তিনি নেন ৪১ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলা তাইজুল ইসলামের উইকেট। ৩৯ রানে ৬ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রামের সফলতম বোলার মুরাদ। জয় ২ উইকেট নেন ৮ রানে। সুযোগ থাকলেও রাজশাহীকে ফলো অন করায়নি চট্টগ্রাম। জয়ের পঞ্চাশে ৪ উইকেটে ১৩৩ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে তারা। প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানের লিড মিলিয়ে চট্টগ্রাম এগিয়ে ৩৩৮ রানে, হাতে ৬ উইকেট। আবারও দুই অঙ্কে ছুঁয়ে ফেরেন সাদিকুর রহমান। এবার রানের খাতাই খুলতে পারেননি অভিজ্ঞ মুমিনুল হক। শফিকুল ইসলামের বলে তাইজুলের হাতে ক্যাচ দেন তিনি শূন্য রানে। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ ছুঁয়েই ফেরেন জয়। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান এবার ৫১ বলে দুই ছক্কা ও পাঁচ চারে করেন ৫১ রান। প্রথম ইনিংসের আরেক সেঞ্চুরিয়ান ইয়াসির আলি ব্যাট করছেন ২৬ রানে। তার সঙ্গী ইরফান শুক্কুর খেলছেন ১৮ রানে।
সিলেট একাডেমি মাঠে জাতীয় ক্রিকেট লিগের নতুন আসরের শুরুতে চমৎকার এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। প্রথমবারের মতো তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পেলেন আবু হায়দার রনি। গতকাল ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ১৬ চারে ১১১ রান করে অপরাজিত আছেন রংপুর বিভাগের হয়ে খেলা নাঈম। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডটি আগে থেকেই তার। ২৯১ ইনিংসে ৩৪তম শতকে সেটিকে আরও সমৃদ্ধ করলেন তিনি। নাঈমের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ৩০৮ রান করেছে রংপুর। ৮৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে তারা। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আসরের অন্য ম্যাচে অপরাজিত ১০৭ রান করেন ময়মনসিংহের আবু হায়দার। সিলেটের বিপক্ষে তার ১০৫ বলের ইনিংসটি গড়া ৬টি ছক্কা ও ১০ চারে। নতুন দিনের শুরুতেই আবদুল্লাহ আল মামুনকে (৪টি চারে ৩৭) হারায় ২ উইকেটে ৬৫ রান নিয়ে খেলতে নামা রংপুর। নাঈমকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়ে ফিরে যান আবু হাসিমও। অধিনায়ক আকবর আলিও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। এক প্রান্তে নিজের মতো খেলে যান নাঈম। দ্বিতীয় সেশনে ১২৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। আরেক প্রান্তে ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে নাঈমকে সঙ্গে দিয়ে যান তানবীর হায়দার। ফিফটির পর দ্রুত রান বাড়াতে শুরু করেন নাঈম। কাক্সিক্ষত তিন অঙ্কের স্বাদ পান ১৯৯ বলে। পঞ্চাশ থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে তার লাগে ৭৩ বল। ১ ছক্কা ও ৫ চারে ৪৫ রান করা তানবীরকে দিনের শেষ সেশনের শুরুতে বোল্ড করে ৮৮ রানের জুটি ভাঙেন রিপন মন্ডল। পরের বলেই নাসির হোসেনের স্টাম্প ভেঙে দেন এই পেসার। এরপর আলাউদ্দিন বাবুকে নিয়ে দলের রান তিনশর কাছে নিয়ে যান নাঈম। ৩ চারে ২১ রান করা আলাউদ্দিনের বিদায়ে ভাঙে ৫৬ রানের জুটি।