শ্রীলংকার বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এই সিরিজে অংশ নিতে গতকাল বাংলাদেশ দলের প্রথম বহরের ১০ ক্রিকেটার দুপুরে দেশ ছাড়েন। বিকেলেই শ্রীলংকায় পৌঁছে গেছেন তারা। এই বহরে দলের সঙ্গে ক্রিকেটারদের পাশাপাশি কোচিং স্টাফের সদস্যরাও গিয়েছেন। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, নাহিদ রানা, স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ ও পেস বোলিং কোচ শন টেইটরা আছেন সেই বহরে। আজ দুপুরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বহর দেশ ছাড়বে। আগামী ১৭ জুন গল টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশের শ্রীলংকা সফর শুরু হবে। এরপর কলম্বোয় সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে ২৫ জুন। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২ জুলাই শুরু হবে, ৫ জুলাই দ্বিতীয় ম্যাচ। দুটি ম্যাচই কলম্বোয় হবে। এরপর দুই দল যাবে পাল্লেকেলেতে। সেখানে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে হবে ৮ জুলাই। ওয়ানডে সিরিজের প্রতিটি ম্যাচই দিবারাত্রির। পরে পাল্লেকেলেতেই শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এর আগে দুইদিনের একটি অনুশীলন সেশন শেষে দুইদিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে সফরকারী বাংলাদেশ। শ্রীলংকা সফর থেকেই শুরু হয়ে যাবে বাংলাদেশের তিন সংস্করণে ভিন্ন ভিন্ন অধিনায়কের যাত্রা। যেখানে দুই টেস্টে শান্ত, তিন ওয়ানডেতে মিরাজ ও তিন টি-টোয়েন্টিতে দলকে নেতৃত্ব দেবেন লিটন। গতকাল মেহেদি হাসান মিরাজকে ওয়ানডে দলের নতুন অধিনায়কের দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। সবশেষ ২০২২ সালে তিন সংস্করণে আলাদা অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলেছে বাংলাদেশ। তখন টেস্টে মুমিনুল হক, ওয়ানডেতে তামিম ইকবাল ও টি-টোয়েন্টিতে দায়িত্বে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। আগামী ১৭ জুন থেকে গলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা। এটি টাইগারদের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের নতুন চক্র। সর্বশেষ ২০২৩-২০২৫ চক্রে বাংলাদেশ চারটি ম্যাচে জয়ী হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি জয় এসেছে ঘরের বাইরে। পাকিস্তানের ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করা সিরিজও এর মধ্যে রয়েছে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ইতিহাসে এটাই বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। গত চক্রে সপ্তম স্থানে ছিল টিম বাংলাদেশ। শ্রীলংকা সফরকে সামনে রেখে গতকাল মিরপুর শেরে বাংলাদেশ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেছেন, ‘আমরা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পর্যায়ক্রমে উন্নতির প্রমাণ দেখিয়েছি। ২০২১-২২০২৩ চক্রে বাংলাদেশ মাত্র এক ম্যাচে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু সর্বশেষ চক্রে চারটি জয় ছিনিয়ে নেয়। আগের চক্রে ঘরের মাঠে আমরা মোটেই ভাল করতে পারিনি। মাত্র এক টেস্টে জয়ী হয়েছিলাম। এটা ঠিক যে ঘরের মাঠেও আমাদের জয় প্রয়োজন। কিন্তু সত্যি বলতে কি এ্যাওয়ে ফর্ম আমাদের শ্রীলংকা সিরিজকে সামনে রেখে অসাধারণ আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে।’ শান্ত বলেছেন ঘরের টেস্ট সিরিজগুলোতে পারফরমেন্সের উন্নতির জন্য তারা পরিকল্পনা সেট করেছে। ঘরে ও বাইরে উভয় সিরিজে ভাল করতে পারলেই কেবল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের স্ট্যান্ডিংয়ে পজিশনের উন্নতি সম্ভব বলে শান্ত মনে করেন। শ্রীলংকার বিপক্ষে ভাল স্মৃতিগুলো মানসিক ভাবেও বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করে তুলছে বলে শান্ত মন্তব্য করেছেন, ‘ঘরের মাঠে আরো বেশী সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। বিদেশে ভাল খেলতে পারলে সেটা দলকে বেশী আত্মবিশ্বাসী করে তুলে। কিন্তু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের পজিশনের উন্নতি করতে হলে উভয় সিরিজেই ভাল করতে হবে। শ্রীলংকায় আমাদের বেশ কিছু সুখস্মৃতি রয়েছে। বাংলাদেশ সেখানে শততম টেস্ট ম্যাচ জয় করেছিল। এই স্মৃতি অবশ্যই আমাদেরকে চাঙ্গা করবে।’ বাংলাদেশের অধিনায়ক মনে করেন শ্রীলংকার মাটিতে ইতিবাচক ফলাফল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের শুরুতেই দলকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাবে। এ সম্পর্কে শান্ত বলেন, ‘গতবার আমরা সপ্তম স্থানে ছিলাম। সে কারণে এবার লক্ষ্য অন্তত ৪, ৫ কিংবা ৬ নম্বর পজিশন। আমি মনে করি গত চক্রে আমাদের জয়ের শতাংশ ছিল ৪৫। আমরা যদি এটাকে ৫০, ৫৫ অথবা ৬০ পর্যন্ত তুলতে পারি তবে অধিনায়ক হিসেবে আমি এটিকে শক্তিশালী ফলাফলই বলবো।’ শ্রীলংকার বিপক্ষে দল নিয়ে শান্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এই দলটি সবদিক থেকেই ভারসাম্যপূর্ণ। দলে চারজন পেসার, চারজন স্পিনার রয়েছে। কন্ডিশন অনুযায়ী মূল একাদশ সাজানো হবে।’