শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলা হলো না বাংলাদেশের। সুযোগ পেয়েও ফাইনালে খেলার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি টাইগাররা। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১১ রানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল পাকিস্তান। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে ফাইনালে উঠে পাকিস্তান। ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থেকে এশিয়া কাপ শেষ করল বাংলাদেশ। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে আগেই ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত। আর এর মধ্য দিয়ে ৪১ বছরের এশিয়া কাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল নিশ্চিত হলো। যদিও ভারত-পাকিস্তান লড়াই এখন আর তেমন জমে না।
তবু দুই দলের সমর্থকদের কাছে এখনও এটি বহুল আরাধ্য ম্যাচ। দুবাইয়ে রোববার শিরোপা লড়াইয়ে নামবে দুই শত্রু দেশ। পাকিস্তান এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপে দুটি ম্যাচ হেরেছে, দুটিই ভারতের বিপক্ষে। আর কোনো দলের বিপক্ষে তারা হারেনি। সেই ভারতের বিপক্ষেই ফাইনালে লড়তে হবে সালমান আলি আগার বাহিনীকে। যে ভারত এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপে অপরাজিত। এশিয়া কাপের ইতিহাসে যদিও এবার প্রথমবার ভারত ও পাকিস্তান ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। তবে সামগ্রিকভাবে, ভারত-পাকিস্তান একে অপরের বিপক্ষে পাঁচটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে এগিয়ে আছে পাকিস্তান, জিতেছে তিনটিতেই। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত সুপার ফোরে ‘অঘোষিত’ সেমিফাইনালে পাকিস্তানের দেয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। লক্ষ্য খুব একটা কঠিন না হলেও, ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতায় টাইগারদের ফাইনাল স্বপ্নভঙ্গ হলো। মাত্র ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের পঞ্চম বলে বিদায় নেন ওপেনার পারভেজ ইমন, দলীয় স্কোর তখন মাত্র ১ রান। সেই চাপ আর সামলাতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তাওহীদ হৃদয় ১০ বলে ৫ রান করে এবং ভারতের বিপক্ষে ফিফটি করা সাইফ হাসান ১৫ বলে ১৮ রান করে দ্রুত আউট হন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় লাল-সবুজের দল। দলীয় ২৯ রানে সাইফ ফেরার পর ৪৪ রানে আউট হন মেহেদী হাসান। এরপর দলকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিয়ে আউট হন নুরুল হাসান ও জাকের আলি। দলীয় ৭৩ রানে জাকের ৯ বলে ৫ রান করে আউট হলে হারের শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ দল। ২৫ বলে ৩০ রান করে শামীম হোসেন বিদায় নিলেও শেষদিকে রিশাদ হোসেনের চেষ্টা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল। টাইগার বোলারদের তোপে দলটির টপ-অর্ডার ব্যর্থ হয়। তবে শেষদিকে শাহিন আফ্রিদি ও মোহাম্মদ হারিসদের কার্যকর ব্যাটিংয়ের কল্যাণে তারা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের সংগ্রহ গড়তে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন। এই পরাজয়ের মধ্য দিয়ে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ। ক্রিকেটে একটি কথা বেশ প্রচলিত। ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে শুরুতে যেভাবে চেপে ধরেছিলো, শেষে সেভাবে চাপটা ধরে রাখতে পারেনি। অনেকগুলো ক্যাচ মিস হয়েছে। মিস করেছে রানআউট। এমনকি মিস ফিল্ডিংয়ের কারণে বাউন্ডারিও ঠেকাতে পারেনি কয়েকটা। যার ফলশ্রুতিতে, যেখানে পাকিস্তানের রান ১০০’ও হচ্ছিল না, সেখানে তারা পৌঁছে গেলো ১৩৫ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান : ১৩৫/৮, ২০ ওভার (হারিস ৩১, নাওয়াজ ২৫, তাসকিন ৩/২৮)।
বাংলাদেশ : ১২৪/৯, ২০ ওভার (শামীম ৩০, সাইফ ১৮, আফ্রিদি ৩/১৭)।
ফল : পাকিস্তান ১১ রানে জয়ী।