ক্রিকেট
রূপগঞ্জকে হারিয়ে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের চমক
প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে চমক দেখিয়েছে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব। গতকাল দলটি হারিয়ে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জকে। বিকেএসপি ৩ নম্বর মাঠে ধানমন্ডি ক্লাব জয়ে পেয়েছে ২৪ রানে। এবারের আসরে কাগজে-কলমের দ্বিতীয় সেরা দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
Printed Edition

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে চমক দেখিয়েছে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব। গতকাল দলটি হারিয়ে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জকে। বিকেএসপি ৩ নম্বর মাঠে ধানমন্ডি ক্লাব জয়ে পেয়েছে ২৪ রানে। এবারের আসরে কাগজে-কলমের দ্বিতীয় সেরা দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। সেই দলকে হারিয়ে জয় পেয়েছে ধানমন্ডি ক্লাব। বিকেএসপিতে হাইস্কোরিং ম্যাচে সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, সাইফ হাসান মাহমুদুল হাসান জয়, আফিফ হোসেন ধ্রুব, জাকের আলী অনিক ও আকবর আলীর মতো নামী ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া দল রূপগঞ্জের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করেই সাফল্যর ভীত গড়ে তোলে নুরুল হাসান সোহানের ধানমন্ডি। ইয়াসির আলী রাব্বির ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংসের ওপর ভর করে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব পায় ৭ উইকেটে ৩৩২ রানের রিশাল স্কোর। শেষ পর্যন্ত রূপগঞ্জের দুই তরুণ সাইফ হাসান, আফিফ হোসেন প্রাণপণ লড়াই করলেও লাভ হয়নি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩০৮ রান করে রূপগঞ্জ। এতে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব পায় ২৪ রানের জয়। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে প্রথমবার হেড কোচের দায়িত্ব পেয়ে সাফল্যের জোয়ারে ভাসছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচে আশরাফুলের দল ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের প্রতিপক্ষ খেলা দেখার পর মোহাম্মদ আশরাফুলকে কৃতিত্ব দেওয়াই যায়। ব্যাট করতে নেমে ধানমন্ডি ক্লাবের শুরুটা ভালো হয়নি। ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলী ও হাবিবুর রহমান ফিরে যান দলীয় ২৭ রানের মধ্যে। এরপর ফজলে রাব্বিও কিছু করতে পারেননি। এরপর দলের হাল ধরেন ইয়াসির আলী রাব্বি। প্রথমে তাকে সঙ্গ দেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান (৪৪ বলে ৩৩)। প্রথম ম্যাচে ম্যাচ জেতানো ফিফটি উপহার দেওয়া সোহান আউট হওয়ার পর ইয়াসির আলী সঙ্গে জুটি বাঁধেন মইন খান। ১২১ বলে সমান ৭টি ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে ১৪৩ রানের ‘বিগ হান্ড্রেড’ করেন ইয়াসির আলী। মইন খানের ব্যাট থেকে আসে ৬৩ বলে ৬২ রান। শেষ দিকে অভিজ্ঞ জিয়াউর রহমান মারমুখী ব্যাটিং শো উপহার দেন। ১৮ বলে ৩ ছক্কা ও ২ বাউন্ডারিতে ৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। এতেই ধানমন্ডির স্কোর দাঁড়ায় ৩৩২। ৩৩৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় যেমন ঝোড়ো শুরু দরকার, তেমনি লম্বা ইনিংসেও প্রয়োজন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কোনোটিই পায়নি রূপগঞ্জ। মারকুটে ওপেনার তানজিদ তামিম বড় স্কোরের চাপ সামলাতে পারেননি। ফিরে যান মাত্র ১৭ রানে। ওয়ানডাউনে নেমে সৌম্য ফেরেন ০ রানে। চার নম্বরে মাহমুদুল হাসান জয় মাত্র ২ রানে আউট। ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে যায় রূপগঞ্জ। চরম বিপর্যয়ের মধ্যে দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার সাইফ হাসান ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। এ দুজন খেলেন আত্মবিশ্বাস নিয়েই। দেখে মনে হচ্ছিল যেন রূপগঞ্জ জিতেও যেতে পারে। কিন্তু না। আকরব আলীর দলের স্বপ্ন ভঙ্গ করেন ধানমন্ডির দুই স্পিনার মইন খান ও হাসান মুরাদ। সাইফকে ৯৭ রানে থামান বাঁহাতি হাসান মুরাদ। আফিফের উইকেট দখল করেন অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মইন খান। সাইফ ১১২ বলে ৯৭ ও আফিফ ৯৬ বলে ৯৮ রানে করেন। ১৭২ রানের জুটি ভাঙার পর রূপগঞ্জ তাকিয়ে ছিল আকবর আলী (১৪) ও শেখ মেহেদী (০) দিকে। কিন্তু হতাশা ছাড়া আর কিছুই দলকে দিতে পারেননি তারা। এরপর রহমান রেজাউর রাজা শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করেন। ৩৯ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। দশম উইকেটে তানভীর ইসলামও রাজাকে সাধ্যমতো সঙ্গ দেন (১১ বলে ২০*)। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব: ৫০ ওভারে ৩৩২/৭ (শিবলী ১৮, হাবিবুর রহমান সোহান ৫, ফজলে রাব্বি ১৬, ইয়াসির আলী রাব্বি ১৪৩, নুরুল হাসান সোহান ৩৩, মইন খান ৬২, জিয়া ৪০; তানভির ৩/৫০, রাজা ১/৮৭, সৌম্য ২/৬২)।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ৩০৮/৯ (সাইফ ৯৫, তানজিদ ১৭, সৌম্য ০, জয় ২, আফিফ হোসেন ৯৮, জাকের আলী ৩, আকবর আলী ১৪, রেজাউর রহমান রাজা ৪৯*; মইন খান ৩/৪০, কামরুল ইসলাম রাব্বি ২/৫৪, মাসুম খান টুটুল ৩/৭২)।
ফল: ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব ২৪ রানে জয়ী।