দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ৩ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। ভারতের বিশাখাপত্তমে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৩২ রান করে টাইগ্রেসরা। এরপর ম্যাচের শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করেও হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। থ্রিলারে পরিণত হওয়া ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে ৩ উইকেটে। শেষ দিকে জমে ওঠা ম্যাচে বাংলাদেশ বাজে ফিল্ডিংয়ের মাশুল দিয়েছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে ভিন্ন কিছু হলেও হতে পারতো। ৪৮.৫ ওভারেই যেমন নাদিন ডি ক্লার্কের ক্যাচ মিস করেন স্বর্ণা। তখনও জয়ের জন্য প্রয়োজন ৯ রান। সেই ক্যাচ মিস করার পর নাদিন দি ক্লার্কই স্নায়ু ধরে রেখে এক চার ও এক ছক্কায় ৩ বল হাতে রেখে নিশ্চিত করেন জয়। ম্যাচ হারলেও ব্যাটিং-সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ব্যাটাররা সবাই রান পেয়েছেন। ফারজানা হক (৩০), রুবাইয়া হায়দার (২৫) ও শারমিন (৫০) শুরুর ভিত গড়ে দেন। এরপর অধিনায়ক নিগার (৩২) ক্রিজে এসে স্বর্ণার সঙ্গে জুটি গড়ে ইনিংসের গতি বাড়ান। স্বর্না তার ইনিংসে তিনটি ছয় ও তিনটি চার মারেন। শেষ দিকে রিতু মনি মাত্র ৮ বলে ১৯* রানের ক্যামিও ইনিংসে দলকে সমৃদ্ধ জায়গায় পৌঁছে দেন। রিতু-স্বর্ণার অবিচ্ছিন্ন জুটি শেষ দিকে ১৮ বলে তুলেছে ৩৭ রান। আর শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৮২ রান। তবে দলের দুর্দান্ত লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। জ্যোতি বলেন, ‘শেষ বল পর্যন্ত মেয়েরা যেভাবে লড়াই করেছে তাতে আমি সত্যিই গর্বিত। খারাপও লাগছে কারণ ড্রেসিংরুমে তারা কেঁদেছে। তাদের বয়স অল্প। সবারই বিশ্বাস ছিল ম্যাচটা আমরা জিততে পারবে। আমার মনে হয় এটা আমাদের জন্য শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। যেভাবে সবাই নিজেদের ১১০ শতাংশ দেবার চেষ্টা করেছে তাতে ভাল লাগছে।’ টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯৭ বলে ৫৩ রানের সূচনা করে বাংলাদেশ। এরপর শারমিন আকতারের ৫০ ও স্বর্ণা আকতারের ৩৫ বলে অপরাজিত ৫১ রানে লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ব্যাটিং পরিকল্পনা নিয়ে জ্যোতি বলেন, ‘আগের ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে শুরুর দিকে উইকেট হারিয়েছি আমরা। এবার আমরা শুরুতে একটি ভাল জুটি চেয়েছিলাম। ব্যাটাররা ভাল করেছে। তারপরও শেষ পর্যন্ত আমাদের ১৫-২০ রান কম হয়েছে।’ ৪ ম্যাচে ৩ হার ও ১ জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে আছে বাংলাদেশ। লিগ পর্বে আরও তিনটি ম্যাচ বাকী বাংলাদেশের। এরপর অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলংকা ও ভারতের বিপক্ষে খেলবে টাইগ্রেসরা। সেমিফাইনালে খেলতে হলে পরের তিন ম্যাচে বাংলাদেশের জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জ্যোতি বলেন, ‘এটাই আমাদের শেষ ম্যাচ না। আরও তিনটি ম্যাচ আছে। আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। দল যেভাবে খেলেছে তাতে সবার মাথা উঁচু রাখা উচিত। মাঝের ওভারে আমরা প্রতিপক্ষকে চাপে রেখেছিলাম। পরের ম্যাচগুলোতেও এটি অব্যাহত রাখতে হবে।’ শিশিরের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বল করতে বোলারদের সমস্যা হয়েছে বলে জানান জ্যোতি। তিনি বলেন, ‘শিশিরের কারণে বল গ্রিপ করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। বল ভেজা ছিল। দলের সেরা বোলারদের ব্যবহারের চেষ্টা করেছি। কখন-কখনও মোমেন্টাম ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়। এই অবস্থায় অনেক কিছু শেখার আছে। আমরা যদি পরেরবার কোন ম্যাচে এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে পড়ি তাহলে কি করা উচিত হবে সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে।’ ক্যাচ মিস নিয়ে জ্যোতি বলেন, 'যদি ক্যাচগুলো ধরতে পারতাম, ফল ভিন্ন হতে পারত। আসলে ওটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। ফল পক্ষে এলে এটা বড় মুহূর্ত হতে পারত।' আগামী ১৬ অক্টোবর নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
ক্রিকেট
ম্যাচে হারের পর ড্রেসিংরুমে মেয়েরা কেঁদেছে : অধিনায়ক জ্যোতি
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ৩ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। ভারতের বিশাখাপত্তমে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৩২ রান করে টাইগ্রেসরা।
Printed Edition