বাংলাদেশ ক্রিকেটের টেস্ট স্ট্যাটাসের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি। এই আয়োজনের অংশ হিসেবে গতকাল রংপুরে গিয়েছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এ ছাড়া বোর্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও ছিলেন তার সঙ্গে। একই দিনে শ্রীলংকায় টেস্ট সিরিজ হারে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্ট ড্র করলেও শেষ টেস্টে বাংলাদেশ হারে ইনিংস ও ৮৬ রানে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে শান্ত নেতৃত্ব ছাড়ার কথা বলেন। শ্রীলংকা সিরিজের ঠিক আগে নাজমুল হোসেন শান্তকে না জানিয়ে তার ওয়ানডে নেতৃত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছিল। গত ১২ জুন এক জরুরি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে বিসিবি তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। অধিনায়ক করা হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। সাধারণত বোর্ডের এজেন্ডায় আলোচনার পর অধিনায়কত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু শান্তর ক্ষেত্রে সেই প্রথা মানা হয়নি। তাতে তাকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। ফলে শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ফরম্যাট থেকে নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন শান্ত। এরই প্রেক্ষিতে রংপুরে এক গণমাধ্যমকে বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, তার একক সিদ্ধান্তে শান্তর নেতৃত্ব বদল হয়নি। বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘বোর্ড সভাপতি ডিরেক্টরদের মধ্যেই একজন। বোর্ড প্রেসিডেন্টের কোনও সিদ্ধান্ত এককভাবে নেয়া হয় না। যা সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তা বোর্ডের একক সিদ্ধান্ত এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত। এখানে ক্রিকেট অপারেশন্স ডিপার্টমেন্ট আছে, কোচ, ম্যানেজার, নির্বাচকরা আছে। তাদের কাজ এটা। তারা যদি কখনও মনে করে যে আমাকে কাজে লাগাতে চায় বা জানাতে চায় অবশ্যই আমি সেই ব্যাপারে সাহায্য করবো।’ শ্রীলংকার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টে হার নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘এইমাত্র খবর পেলাম আমরা হেরে গেছি। ম্যাচটা যেহেতু আমি সেভাবে দেখিনি তাই মন্তব্য করতে পারবো না। আমি পরিষ্কার করতে চাই যে আমি বোর্ডের সভাপতি। বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা আমার কাজ না।’ বুলবুল রংপুর স্টেডিয়াম পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেটার নাসির হোসেন। সঙ্গে ছিলেন নারী জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটারও। পরিদর্শন শেষে বুলবুল জানিয়েছেন, রংপুরের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে সবধরনের চেষ্টা করা হবে। গার্ডেনের আউটফিল্ড দেখে হতাশা প্রকাশ করে বোর্ড সভাপতি বলেছেন, ‘ক্রিকেট মাঠের জন্য এমন আউটফিল্ড কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এখানে আরও ভালো করার সুযোগ রয়েছে। ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে তরুণদের যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, তা শুধু রাজধানী নয়, পৌঁছে দিতে হবে প্রতিটি অঞ্চলে। রংপুর সবসময়ই খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে এগিয়ে, কিন্তু এখানে সুযোগ-সুবিধা সীমিত। এবার সমতার ভিত্তিতে কাজ করা হবে।’ অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বুলবুল গণমাধ্যমের কাছে প্রশ্ন রাখেন, কেন আমরা এক নম্বর দল হয়ে উঠতে পারবো না? তিনি বলেন, ‘দেখেন আমরা পৃথিবীর সেরা ১২ দলের ভেতরে, আমরা সব সময় সাত-আট-নয়-দশের মধ্যে থাকি। কেন আমরা ১ নম্বর দল হতে পারবো না? কেন আমরা ১ নম্বর টেস্ট দল হতে পারবো না! কেন আমরা ১ নম্বর টি-টোয়েন্টি দল হতে পারবো না! কেন ১ নম্বর ওয়ানডে দল হতে পারবো না! এটা শুধু সময়ের ব্যাপার, আমাদের সকলের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এই বাচ্চারা যে এখন স্বপ্ন দেখছে, সেটা কীভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি সেটা লক্ষ্য থাকবে।