মিরপুরে সোমবার বাংলাদেশ দলের অনুশীলন প্রায় শেষের পথে। অন্যরা যখন বিশ্রামে, তখনো টিম বয়কে নিয়ে ব্যাটিং অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম।

দুই দশকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে কঠোর শৃঙ্খলা, নিবেদন ও নিরলস পরিশ্রমই মুশফিককে আলাদা করেছে সবার চোখে। সেই অধ্যবসায়ের ফলেই তিনি দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অনন্য মাইলফলকের সামনে—দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে খেলতে যাচ্ছেন শততম টেস্ট।

আগামীকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামলেই এই বিরল অর্জন আনুষ্ঠানিকভাবে ছুঁয়ে ফেলবেন অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

মুশফিকের নিষ্ঠা দেখে মুগ্ধ আয়ারল্যান্ডের কোচ হেনরিখ মালান। সোমবার মিরপুর স্টেডিয়ামে তিনি বলেন,

‘তার পেশাদারিত্বই সবচেয়ে বড় কথা। আমি খুব ভোরে উঠি। প্রতিদিন প্রায় পৌনে ৬টায় তাকে হোটেলে নাশতা করতে দেখি। সবার আগে বাসে ওঠে, মাঠে যায়। অন্যদের আগে এসে নিজের ওয়ার্ম-আপ, স্ট্রেচিং, ব্যাটিং—সবই সেরে ফেলে। যখন আলো জ্বলে ওঠে, তখন পারফর্ম করার মতো যথেষ্ট পুঁজি সে আগেই তৈরি করে নেয়। সময়ের সঙ্গে সে তা প্রমাণ করেছে।’

২০১৮ সালে টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করা আয়ারল্যান্ড এখন পর্যন্ত মাত্র ১১টি টেস্ট খেলেছে। তুলনায় বাংলাদেশের অনেক খেলোয়াড়ই অনেক বেশি ম্যাচ অভিজ্ঞ।

মুশফিক সম্পর্কে মালান আরও বলেন, ‘১০০ টেস্ট খেলা যে কোনো দেশের খেলোয়াড়ের জন্য বড় অর্জন। আমরা তো মাত্র ১০–১১টি টেস্ট খেলেছি। ১০০ টেস্ট মানে বিশাল ধৈর্য, দীর্ঘ পরিশ্রম। হিসাব করলে চার-পাঁচশোর বেশি ওয়ার্ম-আপ, অনুশীলন—সবকিছুর সঞ্চয় রয়েছে এখানে। টেস্ট ক্রিকেট হলো পরিশ্রমের খেলা। আশা করি সে ভালো করবে। ১০০তম টেস্টের জন্য তাকে অভিনন্দন।’

বর্তমান দলে মুমিনুল হক খেলেছেন ৭৪টি টেস্ট। ইনজুরি বা বাদ না পড়লে তার শততম টেস্টে পৌঁছাতেও আরও অন্তত চার বছর সময় লাগবে। নিয়মিত টেস্টারদের মধ্যে আরও আছেন তাইজুল ইসলাম (৫৬), মেহেদী হাসান মিরাজ (৫৫) ও লিটন দাস (৫১) — যারা ধীরে ধীরে এগোচ্ছেন বড় মাইলফলকের দিকে।