শ্রীলংকার বিপক্ষে গল টেস্টে গতকাল দ্বিতীয় দিনেই ৫০০ রানের ইনিংস তুলে ফেলতে পারত বাংলাদেশ। মুশফিক-শান্তর সেঞ্চুরি আর লিটন দাসের ৯০ রানের ইনিংসের উপর ভর করে সে পথেই হাঁটছিল টাইগাররা। কিন্তু গতকাল শেষ বিকেলটা ভালো কাটেনি টাইগারদের। শেষ বিকেলে ব্যাটিং ধসে ২৬ রানে ৫ উইকেট পতনের পর টাইগারদের ৫০০ রান অনিশ্চিতের মুখে পড়েছে। দ্বিতীয় দিন শেষে ১৫১ ওভারে ৯ উইকেটে ৪৮৪ রান করেছে বাংলাদেশ। শান্ত ১৪৮, মুশফিক ১৬৩ ও লিটন ৯০ রান করেন। দলের পক্ষে অপরাজিত আছেন হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা। দুজনের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি এখনো। শ্রীলংকার বিপক্ষে গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম দিন শেষে ৯০ ওভারে ৩ উইকেটে ২৯২ রান করেছিল বাংলাদেশ। শান্ত ১৩৬ ও মুশফিক ১০৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১২ রান যোগ করে দ্বিতীয় দিনের সপ্তম ওভারে থামেন শান্ত। শ্রীলংকার পেসার আসিথা ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে মিড অফে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের হাতে ধরা পাড়েন তিনি। ২৭৯ বল খেলে ১৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৪৮ রান করেন শান্ত। চতুর্থ উইকেটে মুশফিকের সাথে ৪৮০ বলে ২৬৪ রানের জুটি গড়েন শান্ত। বাংলাদেশের হয়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। শান্তর বিদায়ে ক্রিজে মুশফিকের সঙ্গী হন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। জুটি গড়ার চেষ্টায় শুরুতেই জীবন পান তারা। মুশফিক ১২৬ রানে রান আউট এবং লিটন ১৪ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান। জীবন পেয়ে জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তারা।
এতে ৪ উইকেটে ৩৮৩ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। তখন মুশফিক ১৪১ ও লিটন ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে ৯৭ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে সপ্তম ও শ্রীলংকার বিপক্ষে তৃতীয়বার মত দেড়শ রানের কোটা স্পর্শ করেন মুশফিক। মুশফিকের দেড়শর পর বাংলাদেশের রান চারশ ও লিটনের হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ হয়। এরপর ১৩০তম ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারির পর বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয় খেলা। তখন ৪ উইকেটে ৪২৩ রান ছিল টাইগারদের। প্রায় আড়াই ঘন্টা পর শুরু হয় খেলা। বৃষ্টির বিরতির পর খেলতে নেমে ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেছেন মুশফিক ও লিটন। কিন্তু পরপর দু’ওভারে বিদায় নেন তারা। ১৪১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আসিথার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন মুশফিক। উইকেট বাঁচাতে রিভিউ নেন মুশফিক। টিভি রিপ্লেতে ‘আম্পায়ার্স কল’-এর বিদায় ঘন্টা বাজে মুশফিকের। ৯ চারে ৩৫০ বল খেলে ১৬৩ রান করেন তিনি। এতে পঞ্চম উইকেটে লিটনের সাথে মুশফিকের ১৪৯ রানের জুটির ইতি ঘটে। পরের ওভারে নার্ভাস নাইন্টিতে আউট হন লিটন। শ্রীলংকার স্পিনার থারিন্দু রতœায়েকের বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১২৩ বলে ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯০ রান করেন লিটন। দলীঢ ৪৫৯ রানে পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর পরের দিকের ব্যাটাররা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। ৪৮৪ রানে নবম উইকেট পতন হয় টাইগারদের। এসময় জাকের আলি ৮, নাইম হাসান ১১, তাইজুল ইসলাম ৬ রানে আউট হন। দিন শেষে হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা রানের খাতা না খুলে অপরাজিত আছেন। শ্রীলংকার অভিষিক্ত স্পিনার থারিন্দু, দুই পেসার আসিথা এবং মিলান রতœায়েকে ফার্নান্দো ৩টি করে উইকেট নেন। এর আগের দিন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন শান্ত ও মুশফিক। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দুজনেই। ৩ উইকেটে ২৯২ রান সংগ্রহ করে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। ১৩৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নামেন শান্ত। আর ১৮৬ বলে পাঁচ চারে ১০৫ রানে দিন শুরু করেন মুশফিক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫১ ওভারে ৪৮৪/৯(আগের দিন ২৯২/৩) (শান্ত ১৪৮, মুশফিক ১৬৩, লিটন ৯০, জাকের ৮, নাঈম ১১, তাইজুল ৬, হাসান ০*, নাহিদ ০*; আসিথা ২৮-৫-৮০-৩, মিলান ২২.৪-৬-৩৮.৩, থারিন্ডু ৪৯.২-৩-১৯৬-৩, প্রাবাথ ৪৮-২-১৫৪-০, ধানাঞ্জায়া ৩-০-৭-০)।