২০২২ সালের পর জাতীয় দলে খেলা হয়নি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তেমন আলো ছড়ানো পারফরম্যান্স নেই। হুটহাট জ্বলে উঠেন। আবার হারিয়ে যান অতলে। তাই বেশি আলোচনাতেও থাকেন না। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে এবারের আসরেও গড়পড়তা পারফরম্যান্স ছিল মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। তবে গতকাল আবাহনী লিমিটেডের জয়ের নায়ক হয়েছেন তিনি। ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি। বোলিংয়ে ৪ উইকেট নিয়ে আবাহনীকে দারুণ এক জয় এনে দিয়েছেন এই অফস্পিনার। ঈদের ছুটির পর গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ফেরার ম্যাচে আবাহনী ১০ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে। নয় ম্যাচে আট জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে আবাহনী চলে গেছে সুপার লিগে। শাইনপুকুরের নবম ম্যাচে অষ্টম হার। বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শাইনপুকুর মাত্র ৮৮ রানে গুটিয়ে যায়। জবাবে আবাহনী মাত্র ৬.৪ ওভারে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে কোনো উইকেট না হারিয়ে। ২৬০ বল হাতে রেখে জয় পায় তারা। যা এবারের লিগে সবচেয়ে বড় জয় (বল হাতে রেখে জয়ের হিসেবে)। এর আগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ দুইটি ম্যাচ জিতেছে যথাক্রমে ২৪৩ ও ২১৭ বল হাতে রেখে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এরচেয়েও বেশি বল হাতে রেখে জয়ের রেকর্ড আছে। গত বছর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমিকে ৯ উইকেটে হারিয়েছিল ২৬২ বল হাতে রেখে। এছাড়া দেশের মাটিতে ২৬১ বলে জয়ের রেকর্ড আছে সিলেট বিভাগের। ২০০৩ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৮ উইকেটে তারা ম্যাচ জিতেছিল ২৬১ বল হাতে রেখে। মোসাদ্দেক ৬ ওভারে ১ মেডেনে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেন। এছাড়া ২টি করে উইকেট পেয়েছেন রিপন মন্ডল ও রাকিবুল হাসান। ১ উইকেট নেন মাহফুজুর রাব্বী। শাইনপুকুরের ব্যাটিং একদমই ভালো হয়নি। মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন।
এছাড়া দুই অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছেন রহমতউল্লাহ আলী। ১০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। বাকিরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পারভেজ হোসেন ইমনের ঝড়ে উড়ে যায় শাইনপুকুর। মাত্র ২৩ বলে ৪ চার ও ৬ ছক্কায় ৬১ রান করেন পারভেজ। ১৫ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। যা দেশের ক্রিকেটে যে কোনো সংস্করণে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। এর আগে ২০১৯ সালে শুভাগত হোম ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে শাইনপুকুরের হয়ে মিরপুরে ১৬ বলে ফিফটি করেছিলেন। পারভেজের সঙ্গে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন জিসান আলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ২৫.৪ ওভারে ৮৮ ( রহমতউল্লাহ ১০, মইনুল ২, অনিক ০, রাফসান ৪, ফারজান ০, মিনহাজুল ৩৮, শরিফুল ৭, কিবরিয়া ১, রাফিউজ্জামান ১, ফাহাদ ৬*, আলি ১৪; রিপন ৫-১-১২-২, রকিবুল ৪.৪-০-৯-২, মোসাদ্দেক ৬-১-৩৬-৪, মৃত্যুঞ্জয় ৪-০-১০-০, মাহফুজুর ৬-০-১৮-১)
আবাহনী লিমিটেড: ৬.৪ ওভারে ৮৯/০ (পারভেজ ৬১*, জিসান ১৭*; ফাহাদ ৩.৪-০-২৮-০, রহমতউল্লাহ ১-০-২৮-০, আলি ২-০-৩৩-০)
ফল: আবাহনী লিমিটেড ১০ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোসাদ্দেক হোসেন।