আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেরে। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ হেরেছে ৫ উইকেটে। বুধবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটির পরও ৪৮ ওভার ৫ বলে ২২১ রানে অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা। জবাবে রহমানুউল্লাহ গুরবাজ, রহমত শাহ্র ফিফটির পর ওমরজাই ও হাশমতউল্লাহ শহীদির দায়িত্বশীল ইনিংসে ৪৭.১ ওভারে ৫ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। অল্প পুঁজি নিয়ে শুরুতেই উইকেট তুলে নেয়ার লক্ষ্য থাকলেও নতুন বলে মোটেও সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের পেসাররা। পাওয়ার প্লেতে বেশ খরুচে বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ-হাসান মাহমুদরা। তাতে ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু পায় আফগানিস্তান। জমে যাওয়া উদ্বোধনী জুটি দশম ওভারের তৃতীয় বলে ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনার তানভির ইসলাম। দলীয় ৫২ রানের মাথায় এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন ইব্রাহিম জাদরান। ব্যাটে-বলে সংযোগ না হওয়ায় স্টাম্পিংয়ের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেননি নুরুল হাসান সোহান। ২৩ রান করে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি সেদিকুল্লাহ অটল। তানজিম সাকিবের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন ১৫ বল খেলে ৫ রান করা এই টপ অর্ডার ব্যাটার। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রহমত শাহ মিলে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে অনেকটাই দূরে ঠেলে দেন। অবশেষে ৩১তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন তানজিম সাকিব। ৫০ রান করা রহমত শর্ট মিডউইকেটে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন। পরের ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ৫০ রান করা গুরবাজকে ফেরান মিরাজ। এরপর পঞ্চম উইকেটে আবারো বড় জুটি গড়ে আফগানরা। ৪৪ বলে ৪০ রান করে আজমতউল্লাহ ফিরলে ভাঙে সেই ৫৯ রানের জুটি। তবে ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। এরপর আর ফিরতে পারেনি তারা। মোহাম্মদ নবী ও হাসমতউল্লাহ শহীদি দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। তানজিম সাকিব ৩টি এবং মিরাজ ও তানভীর ১টি করে উইকেট পান। এর আগে, টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে কোনো সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আফগান পেস অলরাউন্ডার আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ১০ বল খেলে ২ বাউন্ডারিতে ১০ রান করেন তিনি। তিনে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্তও। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে আজমতউল্লাহর বলে রীতিমতো বোকা বনে যান শান্ত। ড্রাইভ করতে গিয়ে মিড অফে আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহিদির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। সাজঘরে ফেরার আগে ৫ বলে ২ রান করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। অভিষিক্ত সাইফ হাসান দারুণ শুরু করলেও ৩৭ বলে ২৬ রানের বেশি করতে পারেননি। এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০১ রান যোগ করেন মিরাজ ও হৃদয়। ৭৫ বলে ক্যারিয়ারের দশম ও টানা তিন ওয়ানডে ফিফটি তুলে নেন হৃদয়। আজকের ফিফটির আগে গত জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডেতেও ফিফটি করেছিলেন হৃদয়। এই মাইলফলক ছুঁয়ে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫৬ রান করে রান আউট হয়েছেন তিনি। দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করছেন অধিনায়ক। ৭৪ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি পেয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে ৬০ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এই দুই সেট ব্যাটার ফেরার পর আবারো পথ হারায় বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে টানা ব্যর্থ জাকের ওয়ানডেতে এসেও এই বৃত্ত ভাঙতে পারেননি। ১৬ বলে ১০ রান করে ফিরেছেন তিনি। জাকেরের পথে হেঁটেছেন আরেক উইকেটকিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। ১৪ বল খেলে তিনি করেছেন ৭ রান। এই দুজনের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে বিপদে পড়ে দল। শেষদিকে তানজিম সাকিবের ১৭, আর তানভির ইসলামের ১১ রানের সুবাদে ২২১ রান তুলে অলআউট হয় বাংলাদেশ।