প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে প্রাইম ব্যাংককে হারিয়ে জয় পেয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। গতকাল মোহামেডান ৫ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংককে। প্রাইম ব্যাংকের দেয়া ১৭৫ রানের সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে তাওহীদ হৃদয় ও মেহেদী হাসানের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ২০ ওভার আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মোহামেডান। বল হাতে এক উইকেট ও ব্যাট হাতে ৬৭ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মিরাজ। তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণি জাদুতে পুরো দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার মাঝেও দারুণ ইনিংস খেলেছেন প্রাইম ব্যাংকের শামীম হোসেন। সেঞ্চুরি না পেলেও ৬১ বলে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৯ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। তার এই ইনিংসের ওপর দাঁড়িয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানকে ১৭৫ রানের লক্ষ্য দেয় প্রাইম ব্যাংক। যা সহজে টপকে জয় পায় মোহামেডান। হার্ট অ্যাটাকের পর নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল মাঠের বাইরে। এবারের লিগে আর এক নম্বর ওপেনার ও অধিনায়কের সার্ভিস পাবে না মোহামেডান। কাজেই বাধ্য হয়ে অধিনায়ক বদল করতে হয়েছে মোহামেডানকে।
তামিমের পর অধিনায়ক হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজই দায়িত্ব পাবেন, মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু এ ফর্মে থাকা অলরাউন্ডারকে অধিনায়ক না করে ক্যাপ্টেন হয়েছেন তাওহিদ হৃদয়। মিরাজকে দল পরিচালনার দায়িত্ব না দেওয়ার কারণ একটাই, টেস্টে তিনি অপরিহার্য। তার ব্যাট ও বল দুই-ই খুব দরকারি টিম বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্ট সিরিজে ডাক পেয়ে চলে যাবেন মিরাজ। থাকবেন না সুপার লিগে। যেহেতু সুপার লিগের পুরোটা তার সার্ভিস পাওয়া যাবে না। সে কারণেই মিরাজকে দায়িত্ব না দিয়ে রবিন লিগের নবম রাউন্ডে এসে হৃদয়কে অধিনায়ক করলো মোহামেডান। দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার তামিম ইকবালের অসুস্থতাজনিত কারণে অধিনায়ক হয়ে হৃদয় উপহার দিলেন এক ম্যাচ জেতানো ফিফটি। গতকাল শেরে বাংলায় প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে মোহামেডানের ৫ উইকেটের জয়ের অন্যতম রূপকার এ ম্যাচের অধিনায়ক হৃদয়। তবে হৃদয় নয়, মোহামেডানের হয়ে ম্যাচসেরা পারফরমার মেহেদী হাসান মিরাজ। এ অলরাউন্ডার ৪৮ রানে ১ উইকেট দখলের পর ব্যাট হাতে ৫৫ বলে ৬৭ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে মোহামেডানকে ১২০ বল আগে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। তার আগে ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারানো মোহামেডান লক্ষ্যে পৌঁছানোর ভিত পায় পঞ্চম উইকেটে হৃদয় ও মিরাজের ৯১ রানের জুটির ওপর ভর করে। হৃদয় ৫৫ বলে ৫৭ রানে হাসান মাহমুদের উইকেট সোজা বলকে ক্রস ব্যাটে চালাতে গিয়ে বোল্ড হলেও মিরাজ দল জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। এর আগে প্রথম সেশনে পেসার এবাদত হোসেন (৩/২৭) আর বাঁহাতি স্পিনার তাইজুলের (৪/৫) সাঁড়াশি বোলিং আক্রমণে ১৭৪ রানে অলআউট হয় প্রাইম ব্যাংক। রান যা করার করেন শামীম পাটোয়ারী। একদিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও শামিম অবিচল আস্থা, আত্মবিশ্বাস নিয়ে হাত খুলে ৬১ বলে ৮৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস উপহার দেন। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতার মাশুল হিসেবে এবারের লিগে চতুর্থ পরাজয়ের স্বাদ নিলো ইরফান শুক্কুরের প্রাইম ব্যাংক। অন্যদিকে সমান ৯ খেলায় ৭ ম্যাচ জিতে ১৪ পয়েন্ট পেয়ে সুপার লিগের পথে অনেকদূর এগিয়ে গেলো মোহামেডান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
প্রাইম ব্যাংক: ৩২.২ ওভারে ১৭৪/১০ (নাইম শেখ ১৮, আব্দুল্লাহ আল মামুন ৭, শাহাদাত দিপু ১, জাকির হাসান ০, সাজ্জাদুল হক রিপন ০, ইরফান শুক্কুর ১৯, শামীম পাটোয়ারী ৮৯, রিশাদ হোসেন ৩, খালেদ আহমেদ ৩, আরাফাত সানি ২১, হাসান মাহমুদ ৯*; এবাদত হোসেন ৩/২৭, তাইজুল ইসলাম ৪/৫, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১/৪৮, মেহেদী হাসান মিরাজ ১/৩০)।
মোহামেডান: ৩০ ওভারে ১৭৭/৫ (রনি তালুকদার ০, আরাফাত জুনিয়র মৃধা ১৯, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ১০, তাওহিদ হৃদয় ৫৭, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭, মেহেদী মিরাজ ৬৭*, আরিফুল ১১*; হাসান মাহমুদ ৩/৩৩, খালেদ আহমেদ ১/৩৫, শামীম পাটোয়ারী ১/১৪)।
ফল: মোহামেডান ৫ উইকেটে জয়ী।