এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরে বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ। ম্যাচটি ঘিরে ফুটবল প্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। মাঠের লড়াইয়ে সিঙ্গাপুরের সাথে সমানতালে পাল্লা দিয়ে লড়েছে হামজা-সামিতরা। কিন্তু প্রত্যাশিত জয় পায়নি কৌশলগত ভুলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। প্রথমার্ধে রক্ষণাত্মক কৌশলে যাওয়ার খেসারত দিল বাংলাদেশ। প্রথমার্ধেই পিছিয়ে পড়লো গোল হজম করে। বিরতির ঠিক আগে সিঙ্গাপুর গোল করে লিড নেয় গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে। ৪৫ মিনিটে গোল করেন সংইয়ং। তবে, বাংলাদেশও বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল। শামিত সোম তিন-চারটি গোল হওয়ার মতো বল বানিয়ে দিয়েছিলেন; কিন্তু একজন ফিনিশারের অভাবে গোল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলো বাংলাদেশ।

এ ম্যাচে প্রথম সুযোগও এসেছিল অতিথি দলটির সামনে। ৯ মিনিটে বাম দিক থেকে হারিস স্টুয়ার্টের লম্বা থ্রো থেকে সুযোগ তৈরি হয়েছিল সিঙ্গাপুরের। অরক্ষিত অবস্থায় থাকা উইয়ং সং ঠিকঠাক বলে পা লাগাতে পারেননি। বল চলে যায় বাইরে।১৬ মিনিটে গোলের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। ডান দিক থেকে শাকিল আহাদ তপুর ক্রসে বল পড়েছিল ছোট বক্সে রাকিবের সামনে। সবাইকে হতাশ করেছেন রাকিব, তিনি বল-পায়ে সংযোগ ঘটাতে না পারলে প্রথম পাওয়া সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। ৩০ মিনিটে বাংলাদেশকে নিশ্চিত গোল খাওয়া থেকে বাঁচান গোলরক্ষক মিতুল মারমা। ইকশান ফান্দি একা পেয়েছিলেন গোলরক্ষককে। মিতুল বাম হাতে কোনো মতে বল ক্লিয়ার করেন।

৪৫ মিনিটে গ্যালারি স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় সিঙ্গাপুর। ডান দিক থেকে আসা থ্রোয়ের বল মিতুল মারমা একটু এগিয়ে গিয়ে পাঞ্চ করেছিলেন। তবে তিনি ত্বরিত পোস্টে ফিরতে পারেননি। বল আবার গোলমুখে এলে সংইয়ং প্লেসিং করেন পোস্টে। হামজা বল পায়ে লাগালেও ঠেকাতে পারেননি।বিরতির পর বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন আসে। সৈয়দ কাজেম শাহের জায়গায় নামেন শাহরিয়ার ইমন। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে রাকিবের ক্রসে শাহরিয়ার ইমন বলের নাগাল পাননি।৫৮ মিনিটে সিঙ্গাপুর আবারও এগিয়ে যায়। বক্সের বাইরে থেকে হামিন শায়িনের জোরালো শট মিতুল মারমা ঠিকঠাক প্রতিহত করতে পারেননি। বল পড়ে সামনে থাকা ইকসান ফান্ডির কাছে। তার বুদ্ধিদ্বীপ্ত শট হৃদয়ের ফাঁক গলে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায় ২-০। এসময় মিতুল পা বাড়ালেও কিছু করতে পারেননি। ওই সময়ে ফাহামিদুলের জায়গায় নামেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।

দুই গোলে পিছিয়ে পড়া স্বাগতিকরা গোলের চেষ্টায় কিছুটা তৎপরতা বাড়ায়।যার সফলতা আসে ৬৭ মিনিটে। মাঝমাঠ দিয়ে হামজার থ্রুপাস ধরে বক্সের প্রান্ত থেকে রাকিব হোসেন প্লেসিং করে দেন। বল সময় নিয়ে জালে আশ্রয় নিলে ১-২ উল্লাসে মেতে উঠে দর্শকরা। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে বাংলাদেশের আরও দুই পরিবর্তন। আক্রমণে আরও জোর দেন কাবরেরা। শেখ মোরসালিন ও আল আমিন নামেন। হৃদয় ও তপু উঠে যান। একটু পর হামজার ফ্রি কিক সিঙ্গাপুর ক্লিয়ার করে। শেখ মোরসালিনের প্রচেষ্টাও সফল হয়নি। ৭৯ মিনিটে শাহরিয়ার ইমনের শট সোজা চলে যায় গোলকিপারের হাতে। এরপর সিরিজ কর্নার। চতুর্থবারের চেষ্টায় হামজার কর্নারে তপুর হেড এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করেন। যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ মুহুর্মুহু আক্রমণ করেও সফলতা পায়নি। শেষ মুহূর্তে হামজার শট পোস্টের বাইরে দিয়ে গেলে পরাজয়ের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।

বাংলাদেশ একাদশ : মিতুল মারমা, তপু বর্মন, তারিক কাজী, সাদ উদ্দিন, শাকিল আহাদ তপু, হামজা চৌধুরী, শামিত সোম, কাজেম শাহ, মো. রিদয়, ফাহামিদুল ইসলাম ও রাকিব হোসেন।