বাফুফে বিগত সময়ে এএফসি গ্রাসরুট ডে ঢাকাতেই করেছে। এবারই প্রথম যশোরে শামসুল হুদা ফুটবল একাডেমিতে বাফুফে এএফসি গ্রাসরুট ডে পালন করেছে। এএফসির অনুদানের বাইরেও এই অনুষ্ঠানে অনেক অর্থ ব্যয় হয়েছে। সেটার সিংহভাগ শামসুল হুদা ফুটবল একাডেমিই বহন করেছে। দেশের অনেক একাডেমি থেকে ৮-১৪ বছর বয়সী ছয় শতাধিক ফুটবলার এতে অংশ নিয়েছেন। বাফুফের এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে এসে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্শেলো কার্লোস সিসা। বাফুফের তালিকাভুক্ত একাডেমির সংখ্যা ২২২ টি। এর মধ্যে টু স্টার প্রাপ্ত ১৭ টি বাকি সব ওয়ান স্টার। বাফুফে বিগত সময়ে এএফসি গ্রাসরুট ডে ঢাকাতেই করেছে। বাংলাদেশী ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত আর্জেন্টিনা কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই এই দেশে ভালো কিছু করার পরিকল্পনা জানায়। এই ব্যাপারে কথা বলেছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালও। তিনি জানান দেশের ফুটবলের উন্নয়নে চুক্তি রয়েছে আর্জেন্টিনার সঙ্গে। আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত নিজেই বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে খেলা ফুটবলারদের দেখতে ছুটে এসেছেন। গতকাল বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় যশোর শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমিতে গ্রাসরুটস ফুটবল ডে ও বিশ্ব ফুটবল সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় একথা বলেন। একই অনুষ্ঠানে বেলুন উড়িয়ে শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির ‘ভাষা সৈনিক মুসা ভবনের’ উদ্বোধন করেন আর্জেন্টিনার এম্বাসেডর মারসেলো কারলোস সিসা। আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত সিসা বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে আমি অভিভূত। এত সুন্দর আয়োজনে এত সংখ্যক ফুটবলারের অংশগ্রহণ আসলেই প্রশংসনীয়।’ বাফুফের এই আয়োজনে ৮-১৪ বছর বয়সী ছেলেরা এসেছিলেন। ফুটবলে আগ্রহী ছেলেদের ফুটবলের সঙ্গে রাখার জন্য বাফুফেকে পরামর্শ আর্জেন্টাইন রাষ্ট্রদূতদের, ‘এখানে যারা এসেছে তারা সবাই ফুটবলার হতে চায়। এদের মতো আরো অনেককে ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা এবং এদেরকে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ফেডারেশনের দায়িত্ব।’ বাফুফেকে আরো কম বয়সে ফুটবল নিয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়ে নিজের দেশের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘আমাদের আর্জেন্টিনায় ২-৩ বছর বয়সেই ছেলে-মেয়েরা ফুটবল নেয়।’ বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে একটি চুক্তি রয়েছে। এছাড়াও আমাদের (বাফুফের) সাথেও সম্পর্ক রয়েছে। এরই আলোকে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত গ্রাম্য এলাকায় এসে বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের ফুটবলারদের দেখায় ধন্যবাদ জানাই।

পারস্পরিক এই সম্পর্কের আলোকে একদিন দুই দেশের প্রীতি ম্যাচও হতে পারে।’ বাংলাদেশের প্রায় সকল একাডেমির ভিত্তিই দুর্বল। সেই সকল একাডেমিকে সহায়তা করার অঙ্গীকার বাফুফে সভাপতির, ‘একাডেমিগুলোর এই অবদানের ফলেই বাংলাদেশের আজকের ফুটবল। আমরা অবশ্যই একাডেমিগুলোকে সহায়তা করব সেটা হোক আর্থিক কিংবা কাঠামোগত অথবা ট্যাকনিক্যাল।’ যশোরের শামসুল হুদা ফুটবল একাডেমি দেশের সকল একাডেমির জন্য আদর্শ। এই একাডেমির রুপকার বাফুফের সহ-সভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। তার অর্থায়ন ও পরিকল্পনায় যশোরে গ্রামীণ পরিবেশের মধ্যে আধুনিক একাডেমি গড়ে তুলেছে। গতকাল এএফসির গ্রাসরুটে আরও অনেক একাডেমি শামসুল হুদা একাডেমিতে আসায় তিনি ধন্যবাদ প্রকাশ করে বলেন, ‘ফিফা ও এএফসির এই অনুষ্ঠানে অনেক একাডেমি থেকে সব মিলিয়ে ছয়শতাধিক বাচ্চা আমাদের একাডেমিতে আসায় আমরা অনুপ্রাণিত। বেসরকারি উদ্যোগে এ রকম একাডেমির মাধ্যমে আমাদের ফুটবল এগিয়ে যাবে। বাফুফে সভাপতি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে একাডেমিগুলোকে সহায়তা করার ঘোষণাও দিয়েছেন।’