নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে পিএসজির মুখোমুখি হবে আজ চেলসি। ইউরোপা কনফারেন্স লিগের পর আরেকটি শিরোপা জয়ে চোখ চেলসির। অপরদিকে, মৌসুমে শতভাগ সাফল্যের ক্লাবে পরিণত হতে চায় পিএসজি। ২০২৪-২৫ মৌসুমে ইউরোপের সবচেয়ে দাপুটে দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে পিএসজি। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। চমক জাগানো পারফরম্যান্সে দারুণ ছন্দে রয়েছে পিএসজি। গ্রুপ পর্বে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ, এরপর শেষ ষোলোতে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে বিধ্বস্ত করেছে ৪-০ গোলে। কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষেও ছিল দাপুটে জয়। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে মাত্র এক গোল হজম করেছে ফরাসি ক্লাবটি, সেখানে করেছে ১৬টি গোল। অন্যদিকে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়ে ফাইনালে উঠেছে চেলসি। কিছুটা রক্ষণভাগ দুর্বল হলেও আক্রমণে সেটি পুষিয়ে দিয়েছেন এঞ্জো মারেসকার শিষ্যরা।বিজয়ী দল পাবে ৪০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪৮৭ কোটি টাকা), রানার্সআপ দল পাবে ৩০ মিলিয়ন ডলার। ম্যাচ ফি ও অংশগ্রহণ ফি তো আছেই। তবে টিকিট নিয়ে এখনই উত্তেজনার চূড়ায় ফুটবলপ্রেমীরা। সেমিফাইনালে যেখানে ৫৮ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি করতে হয়েছে মাত্র ১৫০০ টাকায়, সেখানে ফাইনালের টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার ডলার পর্যন্ত যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১০ লাখ! এ যেন মাঠের বাইরেও যুদ্ধের রোমাঞ্চ ছড়িয়ে দিয়েছে ক্লাব বিশ্বকাপের মহারণ।
প্রতিপক্ষ ইউরোপসেরা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা পিএসজি হলেও চেলসি ডিফেন্ডার রিস জেমস যেন তাদের নিয়ে একদমই চিন্তিত নন। জেমস স্পষ্ট বার্তা দিলেন, ‘আমি পাত্তা দিচ্ছি না। আমরা জিততে যাচ্ছি। অন্যদিকে আরেক ডিফেন্ডার লেভি কোলউইল জানিয়ে দিলেন, তারা রিয়াল মাদ্রিদের মতো সহজে হার মানবে না।
শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জেমস বললেন, ‘সবাই পিএসজির প্রশংসা করছে বলে আমি কেয়ার করি না। আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং শিরোপা জিততেই মাঠে নামব।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমরাও দুর্দান্ত দল। অনেকে অবাক হবে আমাদের পারফরম্যান্স দেখে। আমাদের অ্যানালিস্টরা নিশ্চিতভাবেই পিএসজির দুর্বল দিক খুঁজে বের করছেন, আমরা সেগুলোর দিকেই নজর দেব।’
অন্যদিকে জেমসের চেয়েও আত্মবিশ্বাসী কোলউইল বললেন, ‘পিএসজি ভেবে রেখেছে, আমরা রিয়াল মাদ্রিদের মতো খেলব? ভুল ভাবছে! ওরা আমাদের থেকে ভিন্ন এক ম্যাচ পাবে। আমরা আক্রমণাত্মক প্রেসিং করি, আর আমাদের মানসিকতাও অন্যরকম।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রথম দিন থেকেই বলেছি আমরা জয়ী মানসিকতা নিয়েএসেছি। আর আজ ফাইনালে পৌঁছে প্রমাণ করছি যে আমরা মিথ্যে বলিনি। অন্যদিকে পিএসজি কোচ লুইস এনরিক চেলসিকে হালকা করে দেখছেন না। তাঁর ভাষায়, ‘চেলসি অনেকটা আমাদের মতো। শারীরিকভাবে তারা খুবই শক্তিশালী। কঠিন লড়াই হবে নিশ্চিত।’
মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি আরেকটি বিষয় বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম ও ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতি। সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটির ট্রাম্প টাওয়ারেই ফিফার নতুন অফিস খোলা হয়েছে। এই উদ্যোগে ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। জানা গেছে, ফাইনালে ট্রাম্প শুধু দর্শক হিসেবেই নয়, ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। মেটলাইফ স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৮২ হাজার ৫০০ হলেও এমন এক ভিআইপি উপস্থিতির কারণে পুরো ভেন্যু ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলছে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস, স্থানীয় পুলিশ, স্টেডিয়াম নিরাপত্তা টিম ও অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলো।