দেশের ফুটবলে আবার জোয়ার এসেছে। প্রবাসী ফুটবলার হামজা-শমিতদের আগমনে আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে লাল-সবুজের ফুটবল। হামজাদের খেলা দেখতে ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা এখন চোখে পড়ার মতো।

আজ (মঙ্গলবার) এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সন্ধ্যা ৭টায় মাঠে নামে বাংলাদেশ। অথচ সকাল থেকেই স্টেডিয়াম এলাকায় ভিড় করেন ফুটবলপ্রেমীরা।

খেলা সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হলেও দর্শকরা দুপুর থেকেই মাঠে আসতে শুরু করেন এবং বিকেল ৫টার মধ্যেই গ্যালারি কানায় কানায় ভরে যায়। উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে রাখতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এই স্টেডিয়ামে ফুটবল ফিরেছে দীর্ঘ ৫৫ মাস পর। এখানে ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল, ২০১১ সালে কোটি টাকার সুপার কাপের ফাইনালে দর্শকের ঢল নেমেছিল। এরপর বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশ ও কাতারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে দর্শক ছিল উল্লেখ করার মতো।

বিকেলে সঙ্গীতশিল্পী জেফার রহমানের গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর তার সঙ্গে যোগ দেন হিপহপ গায়ক মুজা এবং সবশেষে স্টেজে আসেন সঞ্জয়। এই গরমে গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের স্বস্তি দিতেই বাফুফে এই কনসার্টের আয়োজন করেছে।

এর আগে ম্যাচ শুরুর ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা আগেই ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়াম অভিমুখে জনস্রোত নামে। স্টেডিয়ামের প্রবেশপথগুলোতে তখন থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে।

বাফুফের ঘোষণা ছিল দুপুর ২টায় দর্শকদের জন্য স্টেডিয়ামের গেট খুলে দেওয়া হবে। এর আগেই হাজার হাজার দর্শক মিছিল সহকারে স্টেডিয়াম এলাকায় এসে হাজির হয়। দুপুর ২টার মধ্যেই ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামের চারপাশে ভিড় বাড়তে থাকে। স্টেডিয়ামে প্রবেশের জন্য দর্শকরা নির্ধারিত গেটের সামনে জড়ো হন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর দুপুর আড়াইটায় দর্শকদের জন্য গেট খুলে দেওয়া হয়।

বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে মূল সড়কে ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে রাখে। বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে এই সমর্থক সংগঠনটি বেশ আলোচিত। তারা বেশ কয়েকদিন বাফুফে ভবনের প্রধান ফটকের সামনে টিকিটের দাবিতে অবস্থান করেছিল। সারা বছর ফুটবলকে সমর্থন জুগিয়ে যাওয়া এই সংগঠনটি বাফুফের কাছ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী টিকিট পায়নি।

এদিকে যারা স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারেননি বা ম্যাচের টিকিট পাননি, তাদের জন্য রয়েছে বড় পর্দায় খেলা দেখার সুযোগ। জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় খেলা দেখানো হবে। সেগুলোর মধ্যে ঢাকার রবীন্দ্র সরোবর, চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম, ময়মনসিংহ ও রংপুর জেলা পরিষদ চত্বর, রাজশাহীর নানকিং বাজার, সিলেটের জিরো পয়েন্ট, খুলনার শিববাড়ি মোড় ও বরিশালের বেল’স পার্ক রয়েছে।

এছাড়া, রূপনগর-পল্লবী এলাকায় ১২টি স্থানে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর আয়োজন করেছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। এসব স্থানের মধ্যে রয়েছে ঘরোয়া মোড়, দোরেন মোড়, শহীদ আসিফ চত্বর, মুসলিম বাজার ঈদগাহ মাঠ, শহীদ জিয়া মহিলা কলেজ মোড়সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান।