থাইল্যান্ডে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলে দেশে ফিরে সপ্তাহ খানেক ছুটি কাটিয়েছেন আফিদারা। মঙ্গলবার আবার নিবিড় অনুশীলনের জন্য চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন নারী ফুটবলাররা। সিনিয়র, অ-২০ সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের ক্যাম্পে রয়েছেন ৪১ জন ফুটবলার। ভুটানের নারী ফুটবল লিগ শেষের পথে। ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড লিগ শেষ হওয়ার আগেই তাদের বিদেশি ফুটবলারদের ছেড়ে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপ্না চাকমা, ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রাণী চাকমা ও ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন দেশে ফিরে এসেছেন। থিম্পুর হয়ে খেলা সানজিদা আক্তারও দেশে রয়েছেন। ফেডারেশন সকল ফুটবলারের চুক্তি ডিসেম্বর পর্যন্ত নবায়ন করেছে। কৃষ্ণা, মাসুরা, সানজিদা চুক্তিবদ্ধ ফুটবলার হয়েও বাটলারের চট্টগ্রাম ক্যাম্পে যাননি। জাতীয় দলের এক সময়ের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন বলেন, ‘আমাদের ক্লাব আগেই বিদেশি ফুটবলারদের ছেড়ে দিয়েছে। এখন বাড়িতে রয়েছি। আমাদের চুক্তি রয়েছে, কিন্তু ফেডারেশন ক্যাম্পে যোগ দেয়ার বিষয়ে কিছু বলেনি।’ জাতীয় দলের আরেক তারকা ফুটবলার কৃষ্ণা রাণী সরকার টাঙ্গাইলে নিজের বাড়িতে রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি বলেন, ‘ফেডারেশন যদি ডাকে, অবশ্যই ক্যাম্পে যোগ দেব। আমি দেশে এসেছি ফেডারেশন জানে, কিন্তু ক্যাম্পে যোগ দেয়ার বিষয়ে কিছু বলেনি।’
২০২৪ সালে নেপালের কাঠমান্ডুতে সিনিয়র নারী ফুটবলার ও ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এক যোগে ১৯ জন ফুটবলার বাটলারকে বয়কটের ঘোষণা দেন। দফায় দফায় ফেডারেশন ফুটবলার-কোচের সঙ্গে আলোচনার পর সংকট দূর হয়। ফুটবলাররা বাটলারের অধীনে অনুশীলন ও খেলতে সম্মত হন। বাটলার পরবর্তীতে বিদ্রোহীদের মধ্যে মনিকা, রুপ্না, ঋতুপুর্ণা, মারিয়াসহ আরো কয়েকজনকে ডাকলেও সাবিনা, কৃষ্ণা, সানজিদা, মাসুরা, সুমাইয়াকে আর কখনো ডাকেননি। ফেডারেশন ডাকলে পরীক্ষা দিতে কার্পণ্য নেই কৃষ্ণার, ‘ভুটান লিগ শুরুর আগে আমি বাটলারের অধীনে চার দিন অনুশীলন করেছি। যদি ডাকে তাহলে অনুশীলনে নিজের সেরাটা দেখানোর জন্য প্রস্তুত।’
জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের অধীনে বাংলাদেশের নারী ফুটবল সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি সাফল্য রয়েছে। বাটলার সফল হলেও তার অধীনে বড় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের রক্ষণভাগের ভুল কৌশল ও দুর্বলতাও ধরা পড়েছে প্রকটভাবে। ভুটান লিগ খেলা কয়েকজন সিনিয়র ফুটবলারের সঙ্গে বিরোধের জেরে বাটলার তাদের আর প্রাথমিক ক্যাম্পেও ডাকেননি। তাদের অন্তত প্রাথমিক ক্যাম্পে ডেকে কয়েক দিন পরখ করা দলের স্বার্থেই প্রয়োজন বলে মত ফুটবলসংশ্লিষ্টদের। সাবিনা-কৃষ্ণাদের নিয়ে বাটলারের কোনো ভাবনা নেই। এরপরও ফেডারেশন এদের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছে। চুক্তিবদ্ধ ফুটবলার ক্যাম্পে ডাক পায়নি কেন এবং যদি ক্যাম্পে ডাকাই না হয় তাহলে সেই ফুটবলারদের সঙ্গে ফেডারেশনের যৌক্তিকতা কী?
বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকে এমন প্রশ্ন করে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ফুটবলার দেশে রয়েছেন, এরপরও ক্যাম্পে নেই কেন এর সদুত্তর জানা নেই দল ও ফেডারেশনসংশ্লিষ্ট অনেকেরই।