বাংলাদেশের ফুটবলকে আলোকিত করতে সপরিবারে সিলেটে পা রেখেছেন হামজা চৌধুরী। ২৫ মার্চ ভারত ম্যাচ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হবে তার। এরই মাঝে উৎসব শুরু হয়েছে তার নিজ গ্রামে। সেই সঙ্গে ফুটবল ভক্তদের মনে প্রশ্ন জেগেছে তার স্ত্রী অলিভিয়ার পরিচয় নিয়ে। ব্রিটেনের গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, হামজা পত্নীর আগের নাম ছিল অলিভিয়া ফাউন্টেইন। হামজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে নিজেকে অলিভিয়া চৌধুরী হিসেবেই পরিচয় দেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও এই নামেই পরিচিত। শোনা যায়, ধর্মত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামেন হামজা। তাকে বরণ করে নিতে সকাল থেকেই বিমানবন্দর এলাকায় ছিল উপচেপড়া ভিড়। স্মরণীয় এ সফরে তার সঙ্গী ছিলেন মা, স্ত্রী ও সন্তানরা। হামজা চৌধুরী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। ইংল্যান্ড যুব দলের হয়ে খেলেছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল লেস্টার সিটিতেও খেলেছেন এই মিডফিল্ডার। ভালোবেসে ব্রিটিশ নাগরিক অলিভিয়াকে বিয়ে করেন হামজা চৌধুরী। ২০১৬ সাল থেকেই হামজা চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন অলিভিয়া। সে সময় ফুটবলাঙ্গনে খুব বেশি পরিচিত মুখ ছিলেন না হামজা। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুজনের সম্পর্কের ব্যাপারে জানতেই তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেন হামজার বাবা মোরশেদ দেওয়ান চৌধুরী। বিয়ের ইতিহাস নিয়ে হামজার বাবা বলেছেন, সে (হামজা) মেয়েটাকে আমার কাছে নিয়ে আসে। সে সময় তাকে জানানো হয় আমরা বাঙালি এবং মুসলমান, হামজাকে যদি পছন্দ করো তাহলে বিয়ে করতে হবে। আর হামজাকে বিয়ে করতে হলে তোমাকে মুসলমান হতে হবে। শর্তটা শুনেই আকাশ ভেঙে পড়ে ব্রিটিশ কন্যার। অলিভিয়া প্রথমে তার পরিবারের আপত্তির কথা তুললেন। তবে মুসলমানদের প্রতি ভুল ধারণা ছিল, সত্য প্রকাশে সেগুলো ভেঙে দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, হামজার পরিবার থেকে মুসলিম ধর্মের নিয়ম-কানুনগুলো সহজেই বুঝাতে পেরেছিলেন অলিভিয়াকে। তবে মা-বাবাকে জানানো যাবে না বলে জানিয়েছিলেন অলিভিয়া। সবকিছু জেনেশুনে অলিভিয়া তার পরিবারকে না জানিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং মোরশেদ চৌধুরীর বাসায় ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

এ জন্য অনেকে কথা শুনিয়েছেন বলে জানান হামজার বাবা। মোরশেদের ভাষ্য, এত ছোট (হামজা) একটা ছেলেকে বিয়ে দিচ্ছে, মোরশেদ করতেছে কী, আমি কারো কথা শুনিনি। লেস্টার সেন্ট্রাল মসিজিদের ঈমামকে দিয়ে বিয়ে পড়ানো হয়।

জানা গেছে, অলিভিয়া পেশায় একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। লেস্টার শহরেই নিজের পেশাগত কাজে ব্যস্ত থাকেন বেশিরভাগ সময়। কিশোর বয়সেই ছবি আঁকার প্রতি ভালোবাসার সৃষ্টি। সেখান থেকেই পেশাগত জীবনে পথচলা। হামজা-অলিভিয়া দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। এক কন্যা দুই পুত্র। কন্যা দেওয়ান এনায়া হুসাইন চৌধুরী, দেওয়ান ঈসা হুসাইন চৌধুরী এবং দেওয়ান ইউনুস হুসাইন চৌধুরী। জানা গেছে, নবিদের নামে সন্তানদের নাম রেখেছেন হামজা চৌধুরী নিজেই।