পেপ গার্দিওলার সাহসী—বরং বলা যায় ঝুঁকিপূর্ণ—দল নির্বাচন শেষ পর্যন্ত উল্টো ফল দিয়েছে। শক্তিশালী একাদশকে বিশ্রাম দিয়ে দুর্বল দল নামানোর সিদ্ধান্তে চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার লেভারকুসেনের কাছে ২-০ গোলের হতবাক করা হার সইতে হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটিকে। মঙ্গলবার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে এই পরাজয় গার্দিওলার পরিকল্পনাকে পুরোপুরি ব্যর্থ করে দেয়।
গার্দিওলা একাদশ থেকে একসঙ্গে বিশ্রাম দেন আর্লিং হালান্ড, রুবেন ডিয়াস, বের্নার্দো সিলভা এবং জিয়ানলুইজি দোনারুমাকে। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেনি লেভারকুসেন। প্রথমার্ধে আলেক্স গ্রিমালদো এবং দ্বিতীয়ার্ধে প্যাট্রিক শিকের গোল সিটিকে ম্যাচজুড়ে চাপে রাখে। শেষ বাঁশি বাজতেই সিটি সমর্থকদের বিরক্তি গ্যালারি থেকে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল।
২০১৮ সালের পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে নিজেদের মাঠে হারের স্বাদ পেল সিটি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটাই তাদের টানা দ্বিতীয় হার—শনিবার প্রিমিয়ার লিগে নিউক্যাসলের কাছে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল তারা। চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যে চারবার হেরেছে সিটি এবং তালিকার শীর্ষে থাকা আর্সেনালের চেয়ে এখন সাত পয়েন্ট পিছিয়ে আছে।
চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম পাঁচ ম্যাচে এটি সিটির প্রথম হার হলেও গার্দিওলা বুঝে গেলেন—তার রিজার্ভ বেঞ্চ এখনো বড় ম্যাচের চাপ সামলানোর মতো প্রস্তুত নয়। সিটির কোচ হিসেবে এটি ছিল তার ১০০তম চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচ। আগের ৯৯ ম্যাচের উজ্জ্বলতার পাশে এই পারফরম্যান্স ছিল বেশ বিবর্ণ।
শেষ তিন ম্যাচে একই একাদশ মাঠে নামালেও এবার ১০টি পরিবর্তন করে বড় ঝুঁকি নেন গার্দিওলা। ডিসেম্বরের ব্যস্ত সূচি এবং সামনে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে চ্যাম্পিয়নস লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ—এসব কারণেই হয়তো তিনি রোটেশন করেছিলেন।
ম্যাচের শুরুতে নাথান আকে গোলের সুযোগ পেলেও তার শট মার্ক ফ্লেকেন কর্নারে ফিরিয়ে দেন। সিটি বল দখলে রাখলেও আক্রমণে ছিল না ধার। ২৩ মিনিটে টিলম্যান ও কুফানের সমন্বয়ে তৈরি সুযোগ থেকে নিচু শটে গ্রিমালদো জেমস ট্র্যাফোর্ডকে পরাস্ত করেন। সিটির খুসানভ সাড়া দিতে দেরি করায় রক্ষা হয়নি গোল।
সিটির সামনে সুযোগ এসেছিল আরও, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি তারা। বিরতির আগে টিয়ানি রেইন্ডারস একটি দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ডকু, ফোডেন ও নিকো ও’রিয়েলিকে নামান গার্দিওলা; কিন্তু ও’রিয়েলির দূরপাল্লার শটও ফ্লেকেন ঠেকিয়ে দেন।
৫৪ মিনিটে লেভারকুসেনের দ্বিতীয় গোল আসে। ইব্রাহিম মাজার ইনসুইং ক্রস সামলাতে না পেরে আকের সামনে দিয়ে শক্তিশালী হেডে বল জালে পাঠান প্যাট্রিক শিক। পরে বদলি হিসেবে নেমে হালান্ড সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন—নিউক্যাসল ম্যাচের মতোই এবারো তার পারফরম্যান্স হতাশাজনক।
শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের পরাজয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সিটিকে। গার্দিওলার রোটেশনের সিদ্ধান্ত তাই হয়ে দাঁড়াল দলের সবচেয়ে বড় ভুল।