ঘরোয়া আসলে ফুটবলাররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। শক্তিশালী দল গঠনে ফুটবলারদের পারফরম্যান্স যাচাই-বাছাই করা জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্ট এর প্রধান কাজ হলেও তা সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে মত দিচ্ছে সাবেক ফুটবলাররা। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জাতীয় দলের প্রধান স্পেনিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ছুটিতে স্পেন রয়েছেন। ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। পরের দিন বিকেলে ঢাকায় পৌঁছায় বাংলাদেশ কন্টিনজেন্ট। এর পরের দিন জাতীয় দলের স্পেনিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ছুটিতে স্পেন যান। ৮ এপ্রিল থেকে ঘরোয়া লিগ শুরু হলেও এখনো তিনি ফিরেননি। ছুটি কাটিয়ে ২০ বা ২১ এপ্রিল ঢাকায় পৌঁছে ২২ এপ্রিল ময়মনসিংহ ফেডারেশন কাপের ফাইনাল দেখার পরিকল্পনা রয়েছে কোচের এমনটি জানা গেছে বিভিন্ন মাধ্যমে।
৮ এপ্রিল ফেডারেশন কাপের দুই ম্যাচ ছিল। কোয়ালিফায়ারে ঢাকা আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস মুখোমুখি হয়েছিল। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে টাইব্রেকারে। গত শনিবার ১২ এপ্রিল কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা কিংস-মোহামেডানের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে লিগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ছুটিতে থাকায় এই ম্যাচগুলো সরাসরি স্টেডিয়ামে বসে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে না তার। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক জাহিদ হাসান এমিলি মনে করেন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ কোচের মিস করা উচিত হয়নি বলে। তার দৃষ্টিতে, '১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আমাদের জিততে হলে গোল প্রয়োজন। পুনরায় খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে তার মনোযোগ রাখা উচিত ছিল। যেন গোলস্কোরিং নিয়ে তিনি আরো বিকল্প ভাবতে পারেন বা আরো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে পারেন। অথচ ইতোমধ্যে দু’তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ তিনি মিস করেছেন। যেটা কাম্য নয়।'
২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচের প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণা শুরু থেকে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত অসংখ্য বিতর্ক ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। ঐ ম্যাচের পর প্রায় বিশ দিন কেটে গেলেও ফেডারেশন কোচের কাছ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জবাবাদিহিতা চায়নি। জাতীয় দল কমিটির একাধিক সদস্য ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, 'বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ খেলা চলছে আর কোচ ছুটিতে। কত দিন ছুটি আমরা জানি না। প্রথম সভাতেই আমরা সিলেকশন কমিটির কথা বলেছিলাম। সেটা ভারত ম্যাচের নানা ঘটনায় আরো প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। বেশ কিছু বিষয়ে পর্যবেক্ষণ রয়েছে জাতীয় দল কমিটির সভার অপেক্ষায় রয়েছি।'জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান স্বয়ং ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল। জাতীয় দলের খুটিনাটি বিষয় তিনি নিজেই মনিটরিং করেন। কোচের ছুটির বিষয়টি তার অনুমোদন ক্রমেই। জাতীয় দল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কমিটি হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র একটি আনুষ্ঠানিক সভা হয়েছে। ভারত ম্যাচের পর্যালোচনা ও সিঙ্গাপুর ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়ে এখনো কোনো মিটিংয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।
২০২২ সালের শুরু থেকে বাংলাদেশ ফুটবল দলের দায়িত্বে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। লিগে নিয়মিত খেলা ফুটবলারদের তিনি ডাকেন না। আবার ডাকলেও তাদের জাতীয় দলে খেলান না। অথচ যারা ক্লাবে বেঞ্চে থাকে তাদেরকে তিনি একাদশে খেলান। এ নিয়ে অনেক সমালোচনার পরও হ্যাভিয়ের তার পথেই রয়েছেন। তাই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ চলাকালেও কোচ বিদেশে থাকলে এ নিয়ে অনেক সাবেক ফুটবলার ও কোচ মন্তব্য করতে চান না। তাদের প্রায় সবারই ভাষ্য অনেকটা এরকম, 'তার তো দল সেট করাই। খেলা দেখলেই কি আর না দেখলেই বা কি!' হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার কোচিং স্টাফের দাবি, ছুটিতে থাকলেও অনলাইনে হেড কোচ লিগের খেলা পর্যবেক্ষণ করছেন।
সিঙ্গাপুর ম্যাচ ও জুনে সাফ নিয়ে কোচিং স্টাফের মধ্যে কাজের বন্টনও নাকি করে দিয়েছেন। কোচিং স্টাফের সবাই সেই মোতাবেক কাজে ব্যস্ত। ফেডারেশনে এক পক্ষের খবর, পারিবারিক অসুস্থতার জন্য তিনি খানিকটা বিলম্বে আসছেন।