বছরজুড়ে কঠিন সময় কাটিয়েছেন হামজা চৌধুরী। ক্লাব লেস্টার সিটি হোক বা জাতীয় দল—প্রায় সব জায়গাতেই পরিস্থিতি ছিল অনুকূলে নয়। তবে বছরের শেষ ম্যাচে লাল-সবুজ জার্সিতে এসে নিজেই গল্পটা বদলে দিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংল্যান্ডপ্রবাসী এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভারতের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ফরোয়ার্ড শেখ মোরছালিন। রাকিব হোসেনের বাড়ানো কাটব্যাক ধরে নিখুঁত শটে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।
এর আগে প্রীতি ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে হামজা দুটি গোল পেয়েছিলেন—একটি ওভারহেড, একটি পেনাল্টি থেকে। তবে আজ গোল না পেলেও বাংলাদেশের জন্য অসাধারণ এক সেভ করেন লেস্টার সিটির এই ফুটবলার।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে ডিফেন্সের ভুলে বল পেয়ে যান ভারতের লালিয়ানজুয়ালা চাংতে। তখন বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল মারমা পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে ছিলেন। খালি পোস্ট লক্ষ্য করে নেওয়া চাংতের শট প্রায় গোল হয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে হেড করে কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করেন হামজা—একটি নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে।
ম্যাচ শেষে টি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামজা বলেন, “আমরা ওদের সঙ্গে আগে জিতিনি। ট্রেনিং আর রুমে কোচের সঙ্গে কথা বলেছি—জানতাম এটা খুব বড় ম্যাচ। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা জিতেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে হামজাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল— “এ বছর আপনার সময় যেমন কাটল, আজ কি আপনি বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ? এই জয় কি লেস্টারের হয়ে এফএ কাপ জয়ের থেকেও বড়?”
জবাবে তিনি বলেন, “অবশ্যই। কারণ আজ আমরা ১৮ কোটি মানুষকে খুশি করেছি। পৃথিবীর আর কোথাও এটা সম্ভব নয়। তাই এ জয় অবশ্যই আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সাফল্য।”
তিনি আরও বলেন, “আমি আর সমিত দলভুক্ত হয়েছি একটু দেরিতে। শেষ চার ম্যাচে আমরা পজিশন ও ট্যাকটিক্যাল খেলায় দারুণ ছিলাম, কিন্তু শেষ জায়গায় এসে হোঁচট খাচ্ছিলাম। আজ উল্টো হলো—বল পায়ে হয়তো খুব ভালো না হলেও আমরা দেখিয়েছি, কতটা স্থির থাকতে পারি। এবার সময় এসেছে—দুই দিকই এক সাথে নিয়ে আরও এগিয়ে যাওয়ার, ইনশাআল্লাহ।”