দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেট সীমাবদ্ধ ছিল মূলত চার মহাদেশে—এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও ওশেনিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুবাদে আমেরিকাতেও ক্রিকেটের উপস্থিতি ছিল বটে, তবে মহাদেশটির মূল ভূখণ্ডে খেলা ছড়িয়ে পড়া শুরু হয়েছে সম্প্রতি।
এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আমেরিকায় ক্রিকেটের বিকাশ ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। প্রথমবারের মতো ক্রিকেট যুক্ত হচ্ছে প্যান অ্যামেরিকান গেমসে, যা অনুষ্ঠিত হবে ২০২৭ সালে। এর ফলে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলির মতো দেশগুলোতেও ক্রিকেট জনপ্রিয়তা পেতে পারে বলে আশা করছে আইসিসি।
এর আগে ক্রিকেট জায়গা করে নিয়েছিল এশিয়ান গেমস ও আফ্রিকান গেমসের মতো মহাদেশীয় আসরগুলোতে। তাছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক ২০২৮ দিয়ে প্রায় ১২৮ বছর পর আবারও অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট।
আইসিসির সর্বশেষ বোর্ড সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৭ সালের পান-আম গেমসেই প্রথমবারের মতো যুক্ত হবে ক্রিকেট ইভেন্ট। পাশাপাশি, ভবিষ্যতের একাধিক আন্তর্জাতিক মাল্টি-স্পোর্টস ইভেন্টে ক্রিকেটকে নিয়মিত অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনাও রয়েছে।
২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে পুরুষ ও নারী—দুই বিভাগেই অনুষ্ঠিত হবে ক্রিকেট। আইসিসির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি বিভাগে ছয়টি করে দল অংশ নেবে, মোট ম্যাচ হবে ২৮টি।
দল নির্বাচনে থাকবে আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বের ভারসাম্য—আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ, ওশেনিয়া ও আমেরিকা অঞ্চল থেকে একটি করে দল অংশ নেবে, আর স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র জায়গা পাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। ষষ্ঠ দল নির্ধারিত হবে বাছাইপর্বের মাধ্যমে, যদিও সেই প্রক্রিয়া এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
এই ঐতিহাসিক টুর্নামেন্ট শুরু হবে ২০২৮ সালের ১২ জুলাই, এবং ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে নির্মিত “ফেয়ারগ্রাউন্ডস স্টেডিয়ামে”।
এর আগে ২০২৬ সালে জাপানের আইচি-নাগোয়া এশিয়ান গেমসে, ২০২৭ সালে মিশরের কায়রোয় আফ্রিকান গেমসে, এবং একই বছরে পেরুর লিমায় পান-আম গেমসে ক্রিকেট দেখা যাবে।
আইসিসি এখানেই থেমে থাকতে চায় না। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী সঞ্জোগ গুপ্তা জানিয়েছেন, ২০৩২ সালের ব্রিসবেন অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তি নিয়েও আলোচনা চলছে। তিনি বলেন,
“আমরা ব্রিসবেন ২০৩২ আয়োজকদের সঙ্গে ক্রিকেট যুক্ত করার বিষয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক আলোচনা করেছি।”
আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এবং সঞ্জোগ গুপ্তা সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের লুজান শহরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি), এলএ-২০২৮ এবং ব্রিসবেন-২০৩২ আয়োজকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ক্রিকেট ইভেন্টের কাঠামো, ফরম্যাট এবং যোগ্যতা নির্ধারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।