এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের বাছাইয়ে বসুন্ধরা কিংসের ডাগ আউটে দাঁড়ানোর কথা ছিল ব্রাজিলিয়ান কোচ সার্জিও ফারিয়াসের। কিন্তু কিংসে না এসে তিনি ইরাকের ডুহক ক্লাবে যোগ দিয়েছেন! এরপর স্থানীয় কোচের অধীনেই কিংস ম্যাচ জিতেছে। তবে আসন্ন ঘরোয়া মৌসুমের জন্য বড় ঘোষণা দিল বসুন্ধরা কিংস। ক্লাবটির নতুন প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন আর্জেন্টাইন রবার্তো কার্লোস মারিও গোমেজ। ৬৮ বছর বয়সী মারিও গোমেজ খেলোয়াড় হিসেবে ছিলেন নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার। ১৯৭৯ সালে আর্জেন্টিনার ক্লাব টেম্পারলির হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। তবে পরের বছরেই ফেরো কারিল ওয়েস্তে ক্লাবে যোগ দিয়ে খেলেন ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত। সেখানেই ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে ঘরোয়া লিগের শিরোপা জেতেন। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে অনেক বেশি খ্যাতি অর্জন করেছেন কোচিং ক্যারিয়ারে।
১৯৯৫ সালে আর্জেন্টিনার লানুস ক্লাবে হেক্টর কুপারের সহকারী হিসেবে তার কোচিং জীবন শুরু। এখান থেকেই ইউরোপীয় ফুটবলের দরজা খুলে যায়। কুপারের সঙ্গে স্পেনে গিয়ে মায়োর্কার ডাগআউটে ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত কাজ করেন তিনি। সে সময়ে দলকে কোপা দেল রে ও কাপ উইনার্স কাপের ফাইনালে তুলতে বড় ভূমিকা রাখেন। এরপর ভ্যালেন্সিয়ার সহকারী হিসেবে দুই মৌসুম কাটান। তার সময়েই দল টানা দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে খেলে। তখন দলে ছিলেন গায়িজকা মেন্দিয়েতা, পাবলো আইমার, ক্লদিও লোপেজ, স্যামুয়েল ইতো, সান্তিয়াগো কানিজারেসদের মতো তারকা ফুটবলাররা। পরে ২০০১ সালে কুপারের সঙ্গেই যোগ দেন ইতালির জায়ান্ট ইন্টার মিলানে। সেখানে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয় রোনালদো নাজারিও, ক্রিশ্চিয়ান ভিয়েরি, হার্নান ক্রেসপো, জাভিয়ের জানেত্তিদের মতো বিশ্বসেরা ফুটবলারের সঙ্গে। এই সময়টিই গোমেজকে নতুনভাবে গড়ে তোলে। ইউরোপের শীর্ষ স্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাকে পরবর্তীতে হেড কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশে সহায়তা করে। পরে তিনি আর্জেন্টিনার একাধিক ক্লাবের দায়িত্ব নেন; লানুস, কুইলমেস, বেলগ্রানো, আতলেতিকো তুকুমান, ফেরো কারিল ওয়েস্তে, জিমনাসিয়া দে লা প্লাতা ও জিমনাসিয়া দে জুজুয়াইসহ আরও অনেক ক্লাব।
দেশের বাইরেও কাজ করেছেন গ্রিসের আস্তেরাস ত্রিপোলিস, ইকুয়েডরের দেপোর্তিভো কুয়েনকা, হংকংয়ের সাউথ চায়না, মালয়েশিয়ার জোহর দারুল তাজিম এবং ইন্দোনেশিয়ার পারসিব বান্দুং, বোর্নিও এফসি ও আরেমা এফসির মতো ক্লাবে। আন্তর্জাতিক সাফল্যের দিক থেকেও উজ্জ্বল গোমেজের ক্যারিয়ার। মালয়েশিয়ার জোহর দারুল তাজিমের হয়ে ২০১৫ সালে এএফসি কাপ জেতেন তিনি। একই মৌসুমে মালয়েশিয়ান সুপার লিগ, এফএ কাপ ও চ্যারিটি শিল্ড জিতে দেশটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলেও তিনি আলো ছড়িয়েছেন। তবে গত বছর বাহইয়াংকারা এফসি অবনমন হলে বরখাস্ত হতে হয় তাকে। এবার সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাতে চাইছে বসুন্ধরা কিংস। ঘরোয়া ফুটবলে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর তাদের লক্ষ্য শুধু স্থানীয় ট্রফি জয় নয়। কিংস চাইছে ঘরোয়া পাঁচটি শিরোপার সঙ্গে এএফসি চ্যালেঞ্জ লীগের গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে আরও দূর এগোতে। এই বড় স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হলো আর্জেন্টাইন কোচ রবার্তো কার্লোস মারিও গোমেজকে।