২০২৬ সালের বিশ্বকাপ হবে রেকর্ড ৪৮ দলের টুর্নামেন্ট। আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা স্বাগতিক হিসেবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মূলপর্বে রয়েছে। বাকি ৪৩ দল বাছাইপর্ব থেকে আসবে এবং ছয় দলের ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্লে-অফ থেকে উঠবে আরও দুটি দল। এখন পর্যন্ত আফ্রিকা মহাদেশ থেকে মোট চারটি দেশ (মরক্কো, তিউনিসিয়া, মিসর ও আলজেরিয়া) নিশ্চিত করেছে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট। ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই সারা বিশ্বের ভক্তদের চোখে-মুখে উত্তেজনা। কিন্তু ২০২৬ সালের আসর যেন হয়ে উঠছে শুধুই ধনীদের জন্য! কারণ, মাত্র চার বছরের ব্যবধানে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের তুলনায় টিকিটের দাম বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ।বিশেষ করে সাধারণ দর্শকদের জন্য নির্ধারিত ‘ক্যাটাগরি ৪’ টিকিটের দাম বেড়ে গেছে ভয়াবহভাবে। কাতার বিশ্বকাপে উদ্বোধনী ম্যাচের সবচেয়ে সস্তা টিকিট ছিল ৫৫ ডলার, যা ২০২৬ বিশ্বকাপে দাঁড়িয়েছে ৫৬০ ডলারে। অর্থাৎ, এবার সবচেয়ে সস্তা টিকিটের দামই আগের আসরের সবচেয়ে দামী আসনের কাছাকাছি! গ্রুপ পর্বের ম্যাচের টিকিটেও দেখা গেছে নয়গুণ বৃদ্ধি। ২০২২ সালে যেখানে টিকিট পাওয়া যেত মাত্র ১১ ডলারে, এখন তা ১০০ ডলার। আর ফাইনাল ম্যাচের টিকিটের দাম বেড়েছে আরও ভয়াবহভাবে আগে সবচেয়ে সস্তা টিকিট ছিল ২০৬ ডলার, এখন তা ২,০৩০ ডলার! সবচেয়ে দামী আসনের মূল্য পৌঁছেছে ৬,৩৭০ ডলার পর্যন্ত।

এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ভক্তরা অভিযোগ করছেন, সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের মাঠে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ এখন আর থাকছে না। অনেকে মন্তব্য করছেন, ‘বিশ্বকাপ এখন কেবল ধনীদের বিনোদন।’ এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ফিফার নতুন নীতি ‘ডাইনামিক প্রাইসিং’। এতে চাহিদা অনুযায়ী টিকিটের দাম পর্যায়ক্রমে আরও বাড়ানো হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ব্যবস্থা উত্তর আমেরিকার বাজারে প্রচলিত হলেও বিদেশি দর্শকদের জন্য তা হবে বড় অসুবিধার কারণ তারা আগেভাগে ভ্রমণ পরিকল্পনা না করে হঠাৎ টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন না। এছাড়া টিকিট পুনর্বিক্রিতে ফিফা ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকেই ১৫ শতাংশ ফি নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বৈধ পথে টিকিট কেনাবেচার খরচ আরও বেড়ে যাচ্ছে।সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল আসর হতে যাচ্ছে।