সান্তোসের হয়ে মাঠে নামা নেইমারের জন্য এই রাতটা যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে এল। ব্রাজিলিয়ান সেরি’আ লিগে ভাস্কো দা গামার বিপক্ষে ৬-০ গোলের ভরাডুবি কেবল সমর্থকদের নয় নেইমারের নিজের হৃদয়েও রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। ২০১৪ বিশ্বকাপের ৭-১ গোলের লজ্জাজনক পরাজয় তিনি ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে থেকে দেখেছিলেন। তবে এবার সবার চোখের সামনে মাঠে থেকেও ক্লাবের ভয়াবহ ধস প্রত্যক্ষ করতে হলো ব্রাজিলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে। খেলার শেষ বাঁশি বাজার আগেই কান্নায় ভেঙে পড়েন নেইমার। সতীর্থ কিংবা স্টাফ কেউই সেই অশ্রু থামাতে পারেননি। ভাস্কোর গোল উৎসব শুরু হয় ১৮ মিনিটে লুকাস পিটনের গোলে। বিরতিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে যেন ঝড় বইয়ে দেয় ভাস্কো। একে একে ডেভিড, কোতিনহো, রায়ান রোচা ও দানিলো নেভেস মিলে গোলের বন্যা বইয়ে দেন। নেইমারের সাবেক সতীর্থ ফিলিপে কোতিনহো দুইবার বল জালে পাঠিয়ে পুরনো বন্ধুর বেদনা আরও গভীর করেন। শেষ পর্যন্ত স্কোরলাইন থামে ৬-০ তে। যা সাম্প্রতিক সময়ে সান্তোসের সবচেয়ে লজ্জাজনক হারের একটি। ম্যাচশেষে চোখ ভেজা নেইমার বলেন, ‘আমি লজ্জিত। মাঠে যা ঘটেছে তা কখনো ভুলতে পারব না। সমর্থকদের হতাশা স্বাভাবিক। তারা প্রতিবাদ করতেই পারেন। তবে সহিংসতা ছাড়া। আমার কান্না এসেছিল রাগ থেকে। যা ঘটেছে তার জন্য আমি নিজেকে দায়ী মনে করছি। দুর্ভাগ্যবশত, সাহায্য করতে পারিনি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘এটা চরম লজ্জার। আমার জীবনে এমন কিছু কখনও ঘটেনি। দুর্ভাগ্যবশত, এটা হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে আমার চোখের জল ছিল রাগ থেকে। দুর্ভাগ্যবশত, আমি সবদিক দিয়ে সাহায্য করতে পারি না। যাই হোক, এটা পুরোপুরি বাজে ছিল, এটাই সত্য।’ এই পরাজয়ের পর প্রধান কোচ ক্লেবের জাভিয়েরকে বরখাস্ত করেছে সান্তোস। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা তার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য শুভকামনা জানাই।’ এই লজ্জাজনক হারের পরই সান্তোস কর্তৃপক্ষ বড় পদক্ষেপ নেয়। প্রধান কোচ ক্লেবার হাভিয়েরকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয় এবং আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানানো হয়। এই হারে অবনমন অঞ্চল থেকে উপরে উঠেছে ভাস্কো দা গামা, আর নেইমারদের সান্তোস ডুবে গেছে গভীর সংকটে। সমর্থকদের মনে প্রশ্ন এখন, অসাধারণ প্রতিভাবান নেইমারের ক্যারিয়ারের এই অধ্যায় কোন পথে মোড় নেবে? ইন্টারনেট