সাফ অনূর্ধ্ব ২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। শ্রীলংকার পর এবার নেপালকে হারিয়ে অপরাজিত রইলো আফঈদারা। রোববার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ঘটনাবহুল ম্যাচে বাংলাদেশ ৩-২ গোলে হারিয়েছে নেপালকে। সাফের এবারের আসরে ভারত ও পাকিস্তান অংশ না নেয়ায় টুর্নামেন্টে ফেভারেট বাংলাদেশ। ফেভারেটের মতোই খেললেও জয় পেতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে পিটার বাটলারের শিষ্যদের। প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই গোলে এগিয়েছিল। প্রতিপক্ষ প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি ত...ষ্না রানীর দক্ষতায়। উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দুটি লাল কার্ডের ঘটনাও রয়েছে। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের সুযোগ তৈরি হয়ে যায়। স্বপ্না রানীর উড়ে আসা কর্নারে মুনকি আক্তারের হেড আফঈদা খন্দকারের পা ছুয়ে যাওয়া বলে সাগরিকা ঠিকঠাক শট নিতে না পারায় জটলার মধ্য থেকে নেপালের এক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করেন।১১ মিনিটে অল্পের জন্য বেঁচে যায় বাংলাদেশ। শান্তি মার্ডির ব্যাক পাস ক্লিয়ার করতে গোলকিপার স্বর্নার নেওয়া শট নেপালের সুপ্রিয়ার গায়ে লেগে পোস্ট ঘেষে বাইরে চলে যায়। ১৪ মিনিটে সিনহা জাহান শিখার গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মাঝ মাঠ থেকে সাগরিকা বল পেয়ে অনেকটা দৌড়ে বক্সের সামনে বাড়ান মুনকির পায়ে। এউ ফরোয়ার্ড বল নিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলের জন্য শট নিলে তার গোলরক্ষকের পায়ের ফাক গোলে এগোলে তা গোললাইন থেকে ফেরান নেপালের গঙ্গা রোকায়া। ফিরতি বল অনায়াসে জালে পাঠান শিখা। একটু পর জয়নবের লম্বা শট আটকাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নেপাল গোলকিপার। একই সময়ে শট নিতে ছুটে যান সাগরিকাও। তাতে দুজনের সংঘর্ষে চোট পান শ্রীলঙ্কা ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা এই ফরোয়ার্ড। চিকিৎসা নিয়ে দ্রুতই খেলায় ফিরেন তিনি। ৩৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন সাগরিকা। শান্তি মার্ডির ক্রস পেয়ে দুই দফায় গোলকিপারের গায়ে মারেন শিখা, তৃতীয় দফায় সেই বল জালে পাঠান সাগরিকা।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে স্বপ্নাকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন নেপালের ফরোয়ার্ড মিনা দেউবা। তার শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় লাফিয়ে আঙ্গুলের টোকায় কর্নার করে দলের ত্রাতা স্বর্ণা। বিরতির পর খেলা আরও জমে উঠে। আক্রমণ প্রতি আক্রমণ নির্ভর খেলা চলেছে। এই অর্ধে গোলের পাশাপাশি লাল কার্ডও দেখেছে সমর্থকরা।দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন সাগরিকা। গতিতে ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে গোলকিপারকে একা পেয়েও গিয়েছিলেন তিনি, কিš‘ বলে শেষ স্পর্শ জোরে হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শটই নিতে পারেননি। ৫২ মিনিটে শিখাও গোলকিপারকে একা পেয়ে উড়িয়ে মেরে নষ্ট করেন আরেকটি সুযোগ। ৫৫ মিনিটে আক্রমণে ওঠা সাগরিকাকে ফাউল করেন নেপালের সিমরান, এক পর্যায়ে সাগরিকার মাথা ও চুল টেনে ধরেন তিনি। তাতে শুরুতে উত্তেজনা ছড়ায় দুজনের মধ্যে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষের মধ্যেই। সাগরিকা ও সিমরান দুজনকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। একটু পরই আফঈদা, বন্যাকে তুলে ত...ষ্ণা রানী ও রুমা আক্তারকে নামান বাংলাদেশ কোচ। ৭৪ মিনিটে সুযোগ আসে শিখার সামনে, কিš‘ গোলকিপারকে একা পেয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে তার লক্ষ্যভেদের চেষ্টা সফল হয়নি। ছুটে এসে ক্লিয়ার করেন আনিশা। পরের মিনিটে মিনার শট ছুটে গিয়ে আটকাতে চেষ্টা করেন স্বর্ণা, কিš‘ পারেননি। মিনার ফিরতি শট রুমা ফেরানোর আগেই তাকে পেছন থেকে ট্যাকল করে বসেন জয়নব। তাতে রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। আনিশার লক্ষ্যভেদে ম্যাচে ফিরে নেপাল। শান্তি ও শিখাকে তুলে উমহেলা মারমা ও অয়ন্ত বালাকে নামান বাটলার। ৮৬ মিনিটে সমতায় ফিরে নেপাল। পুর্ণিমার আড়াআড়ি ক্রস বুটের তলার টোকায় স্বর্ণাকে পরাস্ত করেন মিনা।যাগ করা সময়ের শেষ মূহুর্তে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন ত...ষ্ণা রানী। দারুণ এক গোলে দলের তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে নেপালকে স্তব্ধ করে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটান। টানা দ্বিতীয় জয়ে ট্রফির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।