দিন যত যাচ্ছে দলের সঙ্গে তত মানিয়ে দিচ্ছেন হামজা চৌধুরী। চার দিন আগে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে ইতোমধ্যে দলের সবার সঙ্গে মিশে গেছেন ২৭ বছরের এই মিডফিল্ডার। প্রিমিয়ার লিগ ও ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই ফুটবলারের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখছেন হৃদয়-সাদ উদ্দিনরা। ঢাকায় নামার পর থেকে সেই যে ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে রেখেছেন, তা সর্বদা বিদ্যমান। যে কারও সঙ্গে দেখা হতেই কিংবা কথা বলতে গিয়ে হাসির ঝিলিক লেগেই আছে। এমন হামজাকে পেয়ে রাকিব-হৃদয়রা যেমন অভিভূত, আবার অবাকও। রোববার সকালে নাস্তার পর শিলংয়ের পুলিশ বাজার এলাকায় ঘুরতে বের হয়েছিলেন রাকিব-ইব্রাহিম-মোরসালিন-ফাহিমরা। এ সময় ম্যাচ কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে ফুটবলাররা। রাকিব হোসেন হামজার প্রশংসা করে বলেছেন,তার ক্যাািরে এমন অমায়িক নিরহংকার ফুটবলার দেখেননি।‘ভাই কী বলবো.. হামজার মতো এমন উঁচুমানের ফুটবলার এমন বিনয়ী হবে তা চিন্তাও করিনি। সারাক্ষণ তার মুখে হাসি লেগে থাকে। কোনও অহংকারই নেই। সে যে ইংলিশ ফুটবল লিগে খেলছে তা কখনও আমাদের বুঝতে দিচ্ছে না। আমাদের থেকে সে যে আলাদা তাও কখনও আকারে ইঙ্গিতে বলেনি। আমি এমন খেলোয়াড় দেখে আসলেই অবাক।’ হামজা শুধু ব্যবহারেই নয়, অনুশীলনে সবার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা কীভাবে খেলে থাকেন, সেটাও রপ্ত করে তাদের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন। রাকিব বলছিলেন, ‘হামজা যে পর্যায়ের খেলোয়াড় তাতে করে তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সময়সাপেক্ষ। তবে আমরা এরই মধ্যে হামজার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছি। হামজা নিজেও আমাদের সঙ্গে যতটা সম্ভব তাল মিলাচ্ছেন। আমাদের খেলার স্টাইলের সঙ্গে বেশ মিলে যাচ্ছেন।’ আরেক ফুটবলার মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেছেন, ‘হামজা খুব ফ্রেন্ডলি। সে সবার সঙ্গে নিজেই পরিচিত হয়েছে। অনুশীলনের মাঠ নিয়ে ওর কোনও অভিযোগ নেই। একজন পেশাদার খেলোয়াড় হয়ে এটা মানিয়ে নিতে হবে বলে আমাদের কাছে বলেছে। এতেই একজন বড়মাপের ফুটবলারের পরিচয় ফুটে উঠেছে ওর মধ্যে।’ আগের দিন অনুশীলনের ফাঁকে তো নারায়ণগঞ্জ থেকে উঠে আসা ২৩ বছর বয়সী মিডফিল্ডার মোহাম্মদ হৃদয়ের কণ্ঠে প্রশংসা ঝরেছিল এভাবে, ‘হামজা অনেক উঁচুমাপের ফুটবলার। আমরা সবাই চেষ্টা করছি ওনার সঙ্গে মানিয়ে নিতে। হামজা ভাই আমাদের অনেক সহায়তা করছেন। তার অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করছেন।’ হামজার কাছ থেকে কোনও পরামর্শ চান কিনা? এমন প্রশ্নে হৃদয় বলেছেন, ‘অবশ্যই চাই। আমরা তার কাছে জানতে চাই কী করলে ভালো হয়। কোনটা আমার জন্য সবচেয়ে ভালো, যেহেতু আমরা মাঝমাঠে একই পজিশনে খেলছি, এসব জানতে চাই। তিনিও বলেন, পরামর্শ দেন। প্রতিটি মুহূর্তে ওনার কাছ থেকে শেখার আছে এবং আমরাও শিখছি। যদি ভোট দিতে যাই আমি ওনাকে ১০০-তে ১০০ দেবো।’ সবাই মিলে ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ভারতের বিপক্ষে লড়াইয়ের রসদ হামজা থেকেও নিচ্ছেন। কারণ, তাদের একই লক্ষ্য ভারতকে হারানো।