দেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রধান ভেন্যু ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স। প্রায় সকল ফেডারেশন ও ক্রীড়া স্থাপনা এই আঙ্গিনায়। অথচ এখানে নেই ক্রীড়ার সুন্দর পরিবেশ। যত্রতত্র অস্থায়ী দোকান, গাড়ি পার্কিং, দোকানের মালামালে ফুটপাতে স্বাভাবিক হাঁটা-চলাই যেন দায়। এছাড়া ভবঘুরে মাদকসেবীদের আনাগোনা তো আছেই। তাই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ স্টেডিয়ামের ক্রীড়া পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গতকাল প্রথমবারের মতো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। তবে জরিমানা কিংবা শাস্তি না দিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে সবাইকে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোসামৎ ইসরাত মোবাইল কোর্টের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ সময় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলামসহ দুই পরিচালক ও অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। হকি, ভলিবল ও কাবাডিসহ পুরো স্টেডিয়াম এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এসময় অনেক দোকানের সামনে হাঁটার পথে অনেক মালামাল ছিল। সেগুলো তাৎক্ষণিক সরানোর নির্দেশের পাশাপাশি আগামী দিনে এর পুনরাবৃত্তি হলে মাল ক্রোক ও জরিমানার হুঁশিয়ারি দেন বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত। স্টেডিয়াম পরির্দশন করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এই উপ-সচিব উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আজকের মোবাইল কোর্ট মূলত সচেতনতামূলক। তাই কাউকে জরিমানা করা হয়নি। আমরা এটি অব্যাহত রাখব এবং সামনে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। স্টেডিয়াম এলাকা দর্শক এবং ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা যেন সুন্দর পরিবেশে যাতায়াত করতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ।’

অনিয়মের পেছনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর জড়িত থাকার কথা বেশ উচ্চারিত। সোমবার মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় সেই প্রশ্ন আবারও সামনে এসেছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কারও এই সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা থাকলে বা প্রমাণিত হলে ক্রীড়া পরিষদের চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে।’ সম্প্রতি স্টেডিয়ামে ক্রীড়া পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে মোবাইল কোর্টের ক্ষমতা চেয়ে চিঠি দিয়েছিল মাস সাত-আটেক আগে। নানা প্রক্রিয়া ও চিঠি চালাচালির পর অবশেষে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও মন্ত্রণালয়ে থাকা চার অ্যাডমিন ক্যাডার কর্মকর্তার অনুকূলে স্টেডিয়াম এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা দেয়া হয়। এই প্রক্রিয়াকরণ ও অনুমতি আসার মধ্যে চার জনের মধ্যে তিন জন অন্য দপ্তরে বদলি হয়েছেন। এখন শুধু ইসরাতই রয়েছেন। তার নেতৃত্বেই স্টেডিয়াম এলাকায় প্রথবারের মতো মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এর আগে স্টেডিয়াম প্রশাসক ও এনএসসি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। আশি-নব্বইয়ের দশকে এনএসসি’র তৎকালীন পরিচালক মেজর এনামের স্টেডিয়ামের দোকানপাট নিয়ন্ত্রণে মাঝে মধ্যে একক ভূমিকা পালন করতেন।