প্রথমবারের মতো হকি বিশ্বকাপ খেলবে বাংলাদেশ। সিনিয়র বিশ্বকাপে নয়, যুব (অনূর্ধ্ব-২১) বিশ্বকাপে। হকির যে কোনো পর্যায়ে এটাই হবে প্রথম বিশ্বকাপ খেলা। আগামী ২৮ নবেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ে হবে ২৪ দলের এই বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য প্রাথমিক ক্যাম্পে ৪৫ জন খেলোয়াড় ডেকেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। শনিবার প্রাথমিক ক্যাম্পে ডাকপ্রাপ্ত খেলোয়াড়রা কোচ ও ম্যানেজারের নিকট রিপোর্ট করেছে। গতকাল রোববার থেকেই ক্যাম্পে ডাকপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের নিয়ে শুরু হয়েছে মাঠের অনুশীলন।

এই বিশ্বকাপ সামনে রেখে ফেডারেশন নিয়োগ দিয়েছে হল্যান্ডের কোচ সিগ ফাইড আইকম্যানকে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি যুব দলের দায়িত্ব নেবেন। তার আগে অনুশীলন করাবেন স্থানীয় দুই কোচ আশিকুজ্জামান ও মশিউর রহমান বিপ্লব। যে ৪৫ জন খেলোয়াড় প্রাথমিক ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন তাদের মধ্যে ৪৪ জনই বিকেএসপির শিক্ষার্থী। বাইরের খেলোয়াড় মাত্র একজন। পুরোনো ঢাকার আরমানিটোলার নাজমুস সাবিত মাহমুদ নামের এই খেলোয়াড় প্রথমবারের মতো কোনো পর্যায়ের জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন।

এই ক্যাম্পে ৪৪ জন খেলোয়াড় আছেন বিকেএসপির। আপনিই একমাত্র বাইরের খেলোয়াড়। বিষয়টি কেমন লাগছে আপনার? ‘আমার অনেক ভালো লাগছে। কারণ, সবাই বিকেএসপির ছাত্র। আমি একমাত্র বাইরের। আমাকে দলে টিকে থাকতে হলে অনেক কম্পিটিশন দরকার হবে। সেই চ্যালেঞ্জ নিতে আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি। তারপর কি হবে সেটা আল্লাহ ভরসা’Ñ বলেছেন নাজমুস সাবিত। এত খেলাধুলা থাকতে তার হকিতে আসা পারিবারিক কারণেই। বর্তমানের দেশসেরা ফরোয়ার্ড রাসেল মাহমুদ জিমির আত্মীয় হন এই সাবিত। ‘আবার আমার বড় ভাই প্রথম বিভাগ হকি লিগে খেলেছেন। আমাদের এলাকাও হকির জন্য আলাদাভাবে পরিচিত। সবকিছু মিলিয়েই আমি অন্য খেলা বাদ দিয়ে হকি খেলা শুরু করি’Ñ বলেছেন নাজমুস সাবিত।

হকির শুরুটা কিভাবে আপনার? সাবিত বলেন, ‘প্রথমে ওস্তাদ ফজলুর (মরহুম) হাত ধরে আমার হকি শুরু। ২০১৮ সালে তার একাডেমিতে খেলেছি। তারপর আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় টিমে খেলেছি। ২০২৪ সালে ওই স্কুলের অধিনায়ক ছিলাম। তার আগের বছর আমি দ্বিতীয় বিভাগ খেলি। আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। একটি হ্যাটট্রিকসহ ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলাম, সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলাম।’ কখনো বিকেএসপিতে ভর্তির চেষ্টা করেছিলেন? ‘না। আমার মা কখনোই বিকেএসপিতে দিতে চাননি। তবে আমার বাবার খুব ইচ্ছা ছিল বিকেএসপিতে ভর্তি হই। মা রাজি না থাকায় বিকেএসপিতে ভর্তির চেষ্টা কখনো করা হয়নি’- বলেছেন আরমানীটোলার এই কিশোর।