শিরোপা জিতেও ছিল না কোনো উচ্ছ্বাস, ছিল না বিজয়ের রঙ্গিন উদ্যাপন। বরং চোখে-মুখে ছিল শোকের ছায়া, কণ্ঠে কেবল শ্রদ্ধা ও সমবেদনা। এমনই এক ব্যতিক্রম দৃশ্য দেখা গেল সোমবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যায়, নারী সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পর বাংলাদেশ নারী দলের সংবাদ সম্মেলনে।এর কিছুক্ষণ আগেই দেশের মানুষ হৃদয়বিদারক এক খবর পায়Ñ উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান কয়েকজন। জাতির এই শোক ছুঁয়ে যায় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফসহ সবাইকে। সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই দলের প্রধান কোচ পিটার বাটলার বলেন, এই মুহূর্তটি উদ্যাপনের নয়। আমরা একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি, যেখানে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। সত্যিই এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের প্রতি আমাদের গভীর শোক ও শ্রদ্ধা।

দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার জানান, বিমান দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর পুরো দল সিদ্ধান্ত নেয় এই ম্যাচ তাদের জন্য খেলবে, যারা অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। খবরটা শুনে আমরা ভাবি, জয়টা তাদের স্মৃতিতে উৎসর্গ করব। তারা আর নেই, কিন্তু আমরা যেন বুঝাতে পারিÑ আমরা তাদের কথা ভুলিনি। আমরা পেরেছি, এটুকুই শান্তি।ম্যাচে একাই চার গোল করে দলকে শিরোপা এনে দেওয়া সাগরিকা বলেন, আমি প্রথম যে গোলটা করেছি, সেটা করেছি বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে। এতগুলো প্রাণ চলে গেছেÑ ভাবতেই কষ্ট লাগে। বাংলাদেশের মাটিতে এমন একটা ঘটনা খুবই বেদনার। জয়ের উচ্ছ্বাস যেখানে স্বাভাবিক, সেখানে পুরো দলের আবেগ ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। মাঠে, ডাগআউটে, এমনকি ট্রফি নেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন কক্ষেও ছিল নীরবতা আর শোকের আবহ। আনন্দ নয়, চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী দল সেদিন কেবল একটাই বার্তা দিতে চেয়েছে মানবতার পাশে দাঁড়ানোর বার্তা।