তিনদিনব্যাপী ১৭তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতা জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার। এবারের আসরে প্রায় পাঁচ শতাধিক অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছে। তবে প্রতিযোগিতার ম্যারাথন ইভেন্ট হবে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সড়কে, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টায়। এছাড়া জ্যাভলিন থ্রো ব্যতীত টুর্নামেন্টের বাকি সব থ্রোয়িং ইভেন্ট হবে আর্মি স্টেডিয়ামে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় স্টেডিয়ামের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ১৯৮৪ সালে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত প্রথম সাফ গেমসে ত্রিপল জাম্পে স্বর্ণজয়ী মজিবুর রহমান মল্লিক, সাবেক তারকা অ্যাথলেট ইকবাল হোসেন ও নাজিউর রহমান মল্লিক এবং জাতীয় দলের কোচ কিতাব আলী। শুক্রবার বিকেল ৩টায় সামার অ্যাথলেটিকসের উদ্বোধন করবেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের (বিএএফ) সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) ড. মো. নাইম আশরাফ চৌধুরী। তিন দিনব্যাপী হবে এই প্রতিযোগিতা। যেখানে পুরুষ ও মহিলা দুই গ্রুপে থাকবে ৪০টি ইভেন্টের খেলাÑ পুরুষদের ২২টি ও মেয়েদের ১৮টি ইভেন্ট। এবার প্রতিযোগিতার রানিং ইভেন্টের ফলাফল ও টাইমিংয়ের জন্য ইলেকট্রনিকস ফটোফিনিশিং মেশিনের ব্যবস্থা থাকছে। এছাড়া অ্যাথলেটিকসের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত খেলোয়াড় ও সংগঠক ৪৬ জনকে প্রধান অতিথির মাধ্যমে সম্মাননা স্মারক দেয়া হবে। প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জজয়ীদের যথাক্রমে ৫, ৩ ও ২ হাজার টাকা করে প্রাইজমানি দেয়া হবে। রেকর্ডধারী প্রত্যেককে দেওয়া হবে ২০ হাজার টাকা করে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাবেক অ্যাথলেট শাহ জালাল মবিনের পক্ষ থেকে থাকবে ১০০ মিটার স্প্রিন্টের স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জজয়ীদের জন্য ৪০ হাজার টাকা পুরস্কার। জাতীয় পর্যায়ের অ্যাথলেটিক্স মানেই বিচার কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন। গতকাল সংবাদ সম্মেলনের বড় অংশ জুড়েই ছিল জাজ বিষয়ে। ফেডারেশন অবশ্য বিগত ভুল-ত্রুটি শুধরে এবার সম্পূর্ণ নির্ভুল ফলাফল প্রদানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে অনেক সময় পরিষ্কার ব্যবধানে একজন প্রথম হলেও আরেকজনকে প্রথম করার ঘটনাও ঘটেছে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জাজদের রিফ্রেশার্স কোর্স হচ্ছে। জাজদের সঙ্গে আমরাও বৈঠক করব। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে ফলাফল প্রদান করা হবে। এখন ফটোমেশিনও রয়েছে ফলে পক্ষপাত করার সুযোগ সেই অর্থে নেই।’ জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় অনেক সময় অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলো মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে খেলার সৌন্দর্য্য নষ্ট হয় এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়। এ নিয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা এবার আগেভাগেই কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে বসেছি যেন এই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।’ বাফুফে ও অ্যাথলেটিক্স দুই ফেডারেশন যৌথভাবে জাতীয় স্টেডিয়াম ব্যবহার করবে, এই নিদের্শনা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। বারো মাসের মধ্যে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন সর্বসাকুল্যে এক মাস ব্যবহার করে। এরপরও বাফুফের নানা নির্দেশনা-অনুরোধ থাকে। বাফুফের নির্দেশনার জন্য থ্রো ইভেন্টগুলো জাতীয় স্টেডিয়ামের পরিবর্তে আর্মি স্টেডিয়ামে করছে ফেডারেশন। ফেডারেশনের নতুন কমিটি জাতীয় প্রতিযোগিতার পর সামার আয়োজন করছে। এই দু’টি আয়োজনে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়। কোনো পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় ফেডারেশনের ফান্ড থেকেই ব্যয় হচ্ছে, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের অনুদান ও আমাদের ফান্ড থেকে আপাতত খেলা চালিয়ে নিচ্ছি। সামনে আমরা স্পন্সর নিয়েই করব’- বলেন সাধারণ সম্পাদক। মাদার অফ অল ডিসিপ্লিন হিসেবে খ্যাত অ্যাথলেটিক্স। সেই অ্যাথলেটিক্স এখন বাংলাদেশে অনেকটাই নিভৃতে। ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত অ্যাথলেট, সংগঠকদের আজ একটি বিশেষ সম্মাননা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, ‘শুক্রবার সামার অ্যাথলেটিক্স উদ্বোধনের পর আমরা প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ৪৬ জন অ্যাথলেটিক্স ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা প্রদান করব। এতে তারা যেমন সম্মানিত হবেন তেমনি তরুণরাও অনুপ্রাণিত হবেন।’