জাতীয় হকি দল থেকে বাদ পড়েছেন পুস্কর খীসা মিমো-নাইম উদ্দিনসহ অভিজ্ঞ কয়েকজন। এ নিয়ে সমালোচনা কম হচ্ছে না। ফেডারেশনের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী আবু জাফর তপন নাকি এ প্রসঙ্গে গালিগালাজও করেছেন। শুক্রবার বাদ পড়া খেলোয়াড়রা মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে সেই কর্মকর্তার পদত্যাগ চেয়েছেন। নাইম উদ্দিন যেমন বলেছেন, ‘তিনি কিন্তু আমাদের সঙ্গে গালাগালি করেছেন এবং একটা সময় আমাদের বাস্টার্ড বলে গালি দিয়েছেন। আমরা কি জাতীয় দলে খেলি বাস্টার্ড শোনার জন্য। তিনি আমাদের তপন ভাই। তিনি তো আমাদের সঙ্গে এমন করতে পারে না। তিনি হলেন আমাদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।’ এরপরই তার কথা, ‘যখন আমাদের দল ঘোষণা করা হয়েছে আমরা তখন তাদের কাছে জানতে চেয়েছি। আমাদের যে সাধারণ সম্পাদক আছে, রিয়াজ ভাই আমরা তার কাছে গিয়েছি এবং আমরা খুব বিনয়ের সঙ্গে জানতে চেয়েছি, আমাদের যে বাদ দেওয়া হয়েছে এটা কি ন্যায্য হয়েছে কি না? যদি ন্যায্য হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি ন্যায্য না হয় তাহলে আপনাদের বিচারের আওতায় আসতে হবে, হয় আমাদের কাছে নয়তো আল্লাহর কাছে। কিন্তু বিচারের আওতায় আসতে হবে।’ তিনি বলে গেলেন, ‘ঠিক সেই মুহূর্তে তপন ভাই আসছে। তখন রিয়াজ ভাই বলছে, তপন সাহেব এই যে প্লেয়াররা যে কথা বলছে, আসল সত্যটা কী। তিনি বললেন, না ইন্দোনেশিয়ায় যে ঘটনা হয়েছে ওইটা ওখানেই শেষ। যেহেতু ওইখানে দুজনের কথাবার্তাই হয়েছে, রিয়াজ ভাই বললো তোমরা বাদ দাও। একথা এখানেই শেষ করো।’ রুম থেকে বের হওয়ার সময় লাগে বিপত্তি। নাইম জানালেন, ‘আমরা ওখান থেকে বের হয়ে যাচ্ছি তখন সেখানে আমাদের কাওসার স্যার ছিলেন, সান্টা ভাই ছিলেন, বায়জিদ ভাই ছিলেন। তো যেহেতু তারা আমাদের বড় ভাই, বিকেএসপির কোচ ছিলেন তাদের সঙ্গে আমরা হ্যান্ডশেক করতে গেছি। তারা সবাই হ্যান্ডশেক করেন। তপন ভাই নারাজ হন। তিনি বলেন আমি হ্যান্ডশেক করবো না। তখন আমি বলি আপনি ইন্দোনেশিয়াতেও আমাদের বেয়াদব বলেছেন। তখন আমাদের দোষ ছিল আমরা খেলোয়াড়দের জন্য কথা বলেছি। খাবারে সমস্যা, খেলোয়াড়দের টিএ বিল এসব নিয়ে কথা বলার কারণে তিনি অনেক উত্তেজিত হয়ে যায়। এর ফলে তিনি গালাগালি শুরু করেন এবং একটা সময় তিনি বাস্টার্ড বলেন।’ এরপরই সেই কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করে নাইম উদ্দিন বলেছেন, ‘আমাদের চাওয়া একটা জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের যদি এভাবে অপমান হতে হয় তবে পরবর্তীতে যে কাউকেই এভাবে অপমান হতে হবে। আমরা চাই তার একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। এবং এটা তদন্ত সাপেক্ষে হোক। যদি আমরা অন্যায় করে থাকি অবশ্যই আমাদের আইনের আওতায় আসতে হবে শাস্তি পেতে হবে। আর যদি তারা অন্যায় করে থাকে তবে তাকে শাস্তি পেতে হবে।’ জাতীয় দলের কোচ মশিউর রহমান বিপ্লবের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে নাইম প্রশ্ন রাখলেন, ‘জিমি ভাইকে যখন বাদ দেওয়া হয়েছে তখন আপনারা সবাই জানেন তার সাথে অন্যায় হয়েছে। এখন আমার প্রশ্ন হলো বিপ্লব ভাইয়ের কাছে উনি তার শেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমরা ১২০ দিন অনুশীলনে নাই। একথা তিনি কীভাবে বলতে পারেন। আমরা আসলেই অনুশীলনে ছিলাম কি না এই ক্যাম্পের শুরুর ১৫-২০ দিন আগেও একটা কন্ডিশনিং ক্যাম্প হয়েছে।

আমরা সেখানেও যোগ দিয়েছি। তাহলে তিনি এটা কীভাবে বলতে পারেন? আসলে তারা কি আমাদের পিছনে স্পাই রেখেছে?’ মিমো পাশ থেকে বললেন, ‘আসলে আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বলতে ওনাদের পদত্যাগ চাচ্ছি। ওনারা যে ভাষা ব্যবহার করেছে, উনি আমাদেরকে যে মিন করে বলছে তা বাংলাদেশের সকল হকি প্লেয়ারদের উদ্দেশ্যেই বলেছেন। আমরা চাচ্ছি উনি যেন ফেডারেশনে না থাকেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওনাকে একটা শাস্তি প্রদান করতে হবে। উনি এটা বলতে পারেন না। ওনার পদত্যাগটাই আমাদের চাওয়া।’